দোলযাত্রা
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দোলযাত্রা একটি বাঙালি হিন্দু উৎসব, যা উত্তরভারতীয় হিন্দু উৎসব হোলির সংগে সম্পর্কিত। দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় ফাল্গুন মাসে দোল পূর্ণিমায়।
দোল উৎসবের উৎপত্তি একটি বৈষ্ণব অনষ্ঠানের থেকে। এই ধর্মীয় আচারে দোল পূর্ণিমার দিন কৃষ্ণের বিগ্রহ বা ছবিকে রং ও আবিরে স্নাত করে ফুল ইত্যাদি দিয়ে একটি দোলাতে (একধরনের পালকিতে) চড়িয়ে লীলা কীর্তনের তালে তালে দুলিয়ে বয়ে বেড়ান হয়। তেই থেকে এর নামে "দোল যাত্রা"।
কথিত আছে দোলের দিন কৃষ্ণ, রাধা ও তাঁর সঙ্গিনীরা পিচকারি দিয়ে একে অপরকে রং মাখিয়েছিলেন, এবং আবির ছুড়ে আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন। তাই প্রতিবছর এই দিনটিতে বাঙালিরা সবাই আনন্দ সহকারে একে অপরকে রঙে রঙে চিত্র বিচিত্রিত করে তোলেন। সকাল বেলা হয়ে দোলখেলা। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা গুঁড়ো রং, জনে গোলা রং, বেলুনে ভরা রং, পিচকারীতে ভরা রং ইত্যাদি নিয়ে একে অপরকে রং স্নান করায়। দোল খেলা শেষে সন্ধে বেলা বড়রা একে অপরকে কোলা কুলি করেন। ছোটরা বড়দের পায়ে আবির দিয়ে পদধুলি গ্রহণ করে। বড়রা ছোটদের মাথায় আশির্বাদ করে আবির দেন। সমবয়সীরা আকে অপরের গালে আবির মাখায়। সধবা মহিলারা একে অপরের সিঁথিতে লাল আবির দেন।
এই দিনটিতে বসন্ত উৎসবের নাচ গানের আসরও হয়। তাতে নবসন্তের গান গেয়ে গাছে গাছে শীতের পরমোচনের পর নতুন সবুজ পাতা ও রঙবেরঙের ফুলের সমারোহকে আহবান করা হয়।
মঠ নামে নানান আকৃতির চিনির তৈরি শক্ত মিঠাই এইদিন খাওয়া হয়। শঙ্কু, মাছ, পাখি ইত্যাদি নানা আকারের নানা রঙের মঠ এই দিন কিনতে পাওয়া যায়।
উত্তর ভারতে এই দিনটি হোলির একদিন আগের দিন। এই দিন রাতে হোলিকা দহন অনুষ্ঠান হয়। তাতে হোলিকা নামে পৌরাণিক রাক্ষসীর কুশপুত্তলিকা বানিয়ে তাতে আগুন লাগানো তীর ছুঁড়ে দাহ করা হয়।