মহীনের ঘোড়াগুলি
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মহীনের ঘোড়াগুলি বাংলা ব্যান্ড সংগীতের ইতিহাসে কিংবদন্তীতুল্য এক নাম।
বাংলা নতুন ধারার রক সঙ্গীতের আদিস্রষ্টা। ১৯৭০ এর দশকে কলকাতায় যাত্রা শুরু। সেই সময় ব্যান্ডটি সেরকম সাড়া জাগাতে ব্যর্থ হলেও বর্তমানে এই ব্যান্ডের গান পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের শ্রোতাদের কাছে খুবই আদৃত হয়েছে ।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] ইতিহাস এবং প্রেক্ষাপট
কলকাতার কয়েকজন সঙ্গীতশিল্পী মিলে ১৯৭৪ সালের শেষ দিকে গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই ব্যান্ডটির গঠন করেন । প্রাথমিক ভাবে তাঁদের নাম ছিল সপ্তর্ষি। পরে তাঁদের নাম পরিবর্তন হয় যেমন তীরন্দাজ এবং গৌতম চট্টোপাধ্যায় বিএসসি এবং সম্প্রদায় একেবারে শেষে রঞ্জন ঘোষাল এই ব্যান্ডটির নাম দেন মহীনের ঘোড়াগুলি ।
প্রায় এই একই সময়ে বাংলাদেশে সোল্স এবং ফিডব্যাক নামের দুটি ব্যান্ড গঠিত হয় ।
গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের তীব্র রাজনৈতিক বিশ্বাস ছিল । তিনি ছিলেন মূলত বামপন্থী মনোভাবের লোক । এই বামপন্থী চিন্তাধারা তাঁর সঙ্গীতের ভিতরেও প্রকাশিত হত । মহীনের ঘোড়াগুলির একজন সদস্য আব্রাহাম মজুমদারের মতে গৌতম চট্টোপাধ্যায় হয়তো নকশাল আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন ।
১৯৭০ এর দশক বাংলা ব্যান্ড এবং রক সঙ্গীতের পক্ষে খুব একটা সুবিধার সময় ছিল না । সেই সময় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, শ্যামল মিত্র, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীরা । । সঙ্গীতের দিক থেকে তাঁরা ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের পুরনো ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক । তাঁদের গাওয়া বাংলা সিনেমার গান এবং বাংলা আধুনিক গানের জনপ্রিয়তা ছিল খুবই বেশি ।
[সম্পাদনা] সঙ্গীত
[সম্পাদনা] পরবর্তী বছরগুলি
[সম্পাদনা] মহীনের ঘোড়াগুলি নামের মানে
এই ব্যান্ডের নামটি তাদের ভক্তদের জন্য একটি বড় ধাধা। আক্ষরিক অর্থে মহীনের ঘোড়াগুলির সাথে সঙ্গীতের কোন মিল পাওয়া যায় না। প্রকৃতপক্ষে এই ব্যান্ডের নাম নেয়া হয়েছে বিশিষ্ট আধুনিক বাংলা কবি জীবনানন্দ দাশের একটি কবিতা ঘোড়া থেকে। কবিতার দ্বিতীয় পংতি হচ্ছেঃ
মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জোৎস্না প্রান্তরে
এই ব্যান্ডের একটি জনপ্রিয় গান ভালবাসি জোসনায় বাংলার প্রকৃতির রুপময় নৈসর্গিক দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। জীবনানন্দের প্রভাব এখানে স্পস্ট ভাবে ধরা পড়েছে।
এখানে আরেকটি মিল পাওয়া যায়। জীবনানন্দ তৎকালীন সমসাময়িক কবিতার বৃত্তের বাইরে এসে বাংলা সাহিত্যে আধুনিক কবিতার সূচনা করেন। মহীনের ঘোড়াগুলি ব্যান্ডটিও তৎকালীন সাধারন সঙ্গীতের গন্ডির বাইরে বাংলা সঙ্গীতকে নতুন কিছু দেয়ার চেষ্টা করেছে।
[সম্পাদনা] মহীনের ঘোড়াগুলির সদস্যরা
- গৌতম চট্টোপাধ্যায় (মনি) -- কণ্ঠ, কথা, লিড গিটার, স্যাক্সোফোন
- আব্রাহাম মজুমদার -- পিয়ানো, বেহালা
- প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় (বুলা) -- বেস গিটার, বাঁশি
- রঞ্জন ঘোষাল -- কথা, emcee, মিডিয়া সম্পর্ক
- বিশু চট্টোপাধ্যায় -- ড্রামস, বেস বেহালা
- তাপস দাস (বাপি) -- কণ্ঠ, গিটার
- তপেশ বন্দোপাধ্যায় (ভানু) -- কণ্ঠ, গিটার
[সম্পাদনা] প্রকাশিত অ্যালবাম
- সংবিগ্ন পাখিকূল ও কলকাতা বিষয়ক (১৯৭৭)
- অজানা উড়ন্ত বস্তু বা অ-উ-ব (১৯৭৮)
- দৃশ্যমান মহীনের ঘোড়াগুলি
- আবার বছর কুড়ি পরে (১৯৯৫)
- ঝরা সময়ের গান (১৯৯৬)
- মায়া (১৯৯৭)
- খ্যাপার গান (১৯৯৯)
[সম্পাদনা] সরাসরি অনুষ্ঠান
মূল মহীনের ঘোড়াগুলির সদস্যরা ১৯৭৬-১৯৮১ পর্যন্ত কলকাতায় বিভিন্ন সরাসরি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছেন। তাদের উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানগুলো নিম্মরুপঃ
- যোগেশ মীম আকাদেমি (১৯৭৭)
- স্টার থিয়েটার (১৯৮)
- ম্যাক্স মুয়েলার ভবন (১৯৭৯)
- রবীন্দ্র সদন (১৯৭৯)
- সেন্ট পল ক্যাথেড্রাল (১৯৮০)
- কলকাতা আন্তর্জাতিক জ্যাজ উৎসব (১৯৮০)
- কলকাতা সঙ্গীত বিদ্যালয় (১৯৮১)
[সম্পাদনা] প্রভাব
[সম্পাদনা] বহিঃসংযোগ
- মহীনের ঘোড়াগুলি হোমপেজ
- পুরনো ব্যান্ড মেম্বার আব্রাহাম মজুমদারের সাথে ইন্টারভিউ
- Reminiscences of Bulada
- রঞ্জন ঘোষাল এবং সঙ্গীতা ঘোষালের সাথে ইন্টারভিউl
- ক্যালকাটা বয়েজের ধাঁধার থেকেও জটিল তুমি ভিডিও, হাভার্ড ইউনিভারসিটি ২০০৬