আত্মসংবৃতি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আত্মসংবৃতি
Classifications and external resources
ICD-10 Template:ICD১০
ICD-9 Template:ICD৯
OMIM ২০৯৮৫০
DiseasesDB ১১৪২
MedlinePlus ০০১৫২৬
eMedicine med/৩২০২  Template:EMedicine2

আত্মসংবৃতি (Autism) একটি কঠিন মানসিক রোগ যা মূলত শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। যারা আত্মসংবৃতিতে আক্রান্ত তাদেরকে আত্মসংবৃত বা Autistic বলা হয়। এটি স্নায়বীয় উন্নয়নমূলক একটি ব্যাধি। এই ব্যাধিতে আক্রান্ত শিশুরা অস্বাভাবিকভাবে নিজেদের মধ্যে গুটিয়ে থাকে যা মস্তিষ্কের বিকাশগত সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। তারা সমাজের অন্যান্য মানুষের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভালোরকম সমস্যার সম্মুখীন হয়। ডায়াগনস্টিক এন্ড স্ট্যাটিস্টিক্যাল ম্যানুয়েল অফ মেন্টাল ডিসঅর্ডার্‌স অনুসারে তিন বছরের থেকে এই রোগের উপসর্গ দেখা দেয় এবং এর ফলে শিশুর সামাজিকীকরন বাধাগ্রস্ত হয়, সে মানুসের সঙ্গ অপছন্দ করে, একা থাকতে পছন্দ করে, কারো স্পর্শ সহ্য করতে পারে না এবং তাদের সামাজিক কল্পনাপ্রবনতা হয় বেশ দূর্বল। আইসিডি-১০ তথা এই রোগটির সংক্রমণ তিন বছর বয়সের আগেই হয়ে থাকে।

সূচিপত্র

[সম্পাদনা] ব্যাপকতা

সবচেয়ে প্রচলিত মতামত অনুসারে নতুন জন্মগ্রহনকারী প্রতি ১০,০০০ জীবিত শিশুর মধ্যে ৪.৫ জন আত্মসংবৃতিতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। অবশ্য এটি যুক্তরাষ্ট্রযুক্তরাজ্যে পরিচালিত জরিপের ফলে প্রাপ্ত একটি পরিসংখ্যান। বর্তমানকালের পরিসাংখ্যিক গবেষণার ভিত্তিতে মোট জনসংখ্যা .২৫% থেকে .৫০% পর্যন্ত এ ধরণের রোগে আক্রান্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে। এ ধরণের রোগ বলতে আত্মসংবৃতি, অ্যাসপারগারের লক্ষণ এবং পিডিডি-সমূহকে বোঝানো হয়।

[সম্পাদনা] আবিষ্কার ও গবেষণার ইতিহাস

চিত্র:Asperger kl2.jpg
১৯৪০-এর দশকে ডঃ হ্যান্স অ্যাসপারগার প্রথম আত্মসংবৃতি সম্পর্কিত একটি রোগের কথা প্রথম উল্লেখ করেন যা অ্যাসপারগারের লক্ষণ নামে পরিচিত

আত্মসংবৃতি শব্দটি মূলত ইংরেজি Autism শব্দের পারিভাষিক প্রতিশব্দ। Autism শব্দটি প্রথম ইংরেজি ভাষায় ব্যবহৃত হয়। এটি প্রথম ব্যবহার করেন সুইস মনঃচিকিৎসক ইউজিন ব্লিউলার। তিনি American Journal of Insanityতে প্রকাশিত তার একটি নিবন্ধে অস্বাভাবিকরকম এই শব্দটি ব্যবহার করেন। এটি গ্রীক শব্দ αυτος (autos - আত্ম, নিজ) থেকে এসেছে। ব্লিউলার একান্তভাবে ভগ্নমনস্ক (Schizophrenic) মানুষ, যারা অন্য লোকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে না তাদের বোঝাতে এই শব্দের প্রচলন করেন।

তবে আত্মসংবৃতির চিকিৎসা শাস্ত্রগত শ্রেণিবিন্যাস ১৯৪৩ সালের আগে হয় নি। ১৯৪৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাল্টিমোরে অবস্থিত জন হপকিন্স হাসাপাতালের মনঃচিকিৎসক ডঃ লিও ক্যানার সর্বপ্রথম ১১ টি মানসিক ব্যাধিগ্রস্ত শিশুর আক্রমণাত্মক ব্যবহারের সামঞ্জস্যতা লক্ষ করে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন করেন এবং এ ধরণের ব্যাধির নাম দেন "early infantile autism"। শিশুরা অন্য মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন বা যোগাযোগে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে, এই রোগটিকে তিনি অটিজ্‌ম নামে চিহ্নিত করেন। এ বিষয়ে তার প্রথম প্রবন্ধ The Nervous Child নামক সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছিল। তার বর্ণনার অনেক কিছুই এখনো আত্মসংবৃত শিশুদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োগ করা হয়।

প্রায় একই সময়ে অস্ট্রীয় বিজ্ঞানী ডঃ হ্যান্স অ্যাসপারগার একই ধরণের পর্যবেক্ষণ করেন। তবে তার পর্যবেক্ষণটি বেশ উঁচুমাত্রার এবং একটু অন্য ধরণের বৈশিষ্ট্যাবলীর জন্য প্রয়োগ করা হয়। এই বিষয়টির নাম অ্যাসপারগারের লক্ষণ বা Asperger's syndrome। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং তার প্রবন্ধগুলো ইংরেজিতে অনূদিত না হওয়ার কারণে তার পর্যবেক্ষণগুলো অনেকদিন কোন স্বীকৃতি পায় নি। ১৯৯৭ সালে তার প্রবন্ধগুলো স্বীকৃতি পায় এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।

আত্মসংবৃতি এবং অ্যাসপারগারের লক্ষণ বর্তমানকালে পাঁচটি পরিব্যাপক উন্নয়নমূলক ব্যাধির (pervasive developmental disorder - PDD) দুইটি হিসেবে DSM-IV-TR (Diagnostic and Statistical Manual of Mental Disorders) -এর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই দুটিকে অটিস্টিক স্পেকট্রাম ব্যাধি (autism spectrum disorders - ASD)-ও বলা হয়ে থাকে। যোগাযোগ দক্ষতা, সামাজিক মিথস্ক্রিয়া এবং মানবীয় ব্যবহার-এর ত্রুটির বিভিন্ন মাত্রার উপর ভিত্তি করে এই রোগের শর্তগুলোকে আরও শ্রেণিবিভক্ত করা হয়।

[সম্পাদনা] বৈশিষ্ট্যসমূহ

Template:Unreferencedsect আত্মসংবৃতিতে আক্রান্তদের আচার-ব্যবহার এবং সংবেদন পদ্ধতি অন্যদের চেয়ে অনেক আলাদা হয় এবং আক্রান্তদের মধ্যেও থাকে অনেক পার্থক্য। শব্দ, আলো, স্পর্শ ইত্যাদি ছদ্মরুপগুলোর প্রতি আত্মসংবৃতদের আচরণ সাধারণদের থেকে বেশ পৃথক ও অদ্ভুত। শারীরিক দিক দিয়ে আত্মসংবৃতদের সাথে সাধারণদের কোন পার্থক্য করা যায় না। অবশ্য মাঝে মাঝে শারীরিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সাথে আত্মসংবৃতি একসাথে আসে, সেক্ষেত্রও পার্থক্যগুলো হবে আপাত; কারণ দৈহিক পার্থক্য থাকলেও তার উপর আত্মসংবৃতি খুব একটা নির্ভর করে না। আত্মসংবৃতদের মস্তিষ্কের আকৃতি সাধারণের চেয়ে বড় হয়ে থাকে, তবে এর প্রভাব সম্বন্ধে এখনও সঠিক কিছু জানা যায় নি।[১]

[সম্পাদনা] আরও দেখুন

  • আত্মসংবৃতির কারণ
  • শিক্ষা মনোবিজ্ঞান
  • ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ফর অটিজ্‌ম রিসার্চ
  • আত্মসংবৃত ব্যক্তিত্বের তালিকা
  • আত্মসংবৃত পণ্ডিতবৃন্দ

[সম্পাদনা] বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা] সাধারণ তথ্য

  • ডিমজ (DMOZ) সংযোগের ডিরেক্টরি
  • NIH.gov - 'All Autism Spectrum Disorders (Pervasive Developmental Disorders): A detailed booklet that describes symptoms, causes, and treatments, with information on getting help and coping', National Institute of Mental Health (2004)
  • CDC.gov - National Center on Birth Defects and Developmental Disabilities, Centers for Disease Control (CDC)
  • CDC.gov - 'Learn the Signs. Act Early. Autism Spectrum Disorders Fact Sheet', CDC

[সম্পাদনা] সম্প্রদায়

[সম্পাদনা] গবেষণা এবং ওকালতি

  • Autism.org - সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অফ অটিজ্‌ম
  • Autism-Society.org - অটিজ্‌ম সোসাইটি অফ আমেরিকা
  • AutismSpeaks.org - অটিজ্‌ম স্পিক্‌স
  • CureAutsimNow.org - কিউর অটিজ্‌ম নাও (সিএএন) ফাউন্ডেশন
  • AutismCentre.info - বেক্সলি অটিজ্‌ম সাপোর্ট ইনফরমেশন সেন্টার
  • AutisticSociety.org - অটিস্টিক সোসাইটি
  • Autistic type or autistic disorder ? , সংজ্ঞা
  • [http:/www.auties.org/ ] - স্পেকট্রাম ব্যাধিতে আক্রান্তদের জন্য আত্ম কর্মসংস্থান এবং ওকালতি

Template:পরিব্যাপক উন্নয়নমূলক ব্যাধিসমূহ