বাউল
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাউল একটি বিশেষ লোকাচার ও ধর্মমত। এই মতের সৃষ্টি হয়েছে বাংলার মাটিতে। বাউলকূল শিরোমণি লালন সাঁইয়ের গানের মধ্য দিয়ে বাউল মত পরিচতি লাভ করে। বাউল গান যেমন জীবন দর্শনে সম্পৃক্ত তেমনি সুর সমৃদ্ধ। বাউলদের সাদা মাঠা কৃচ্ছসাধনার জীবন আর একতারা বাজিয়ে গান গেয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ানোই তাদের অভ্যাস।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] উৎপত্তি
বাউল শব্দটির উৎপত্তি নিয়ে মতান্তর রয়েছে। কেউ বলেন 'বাতুল' থেকে 'বাউল' হয়েছে, কারো মতে 'বজ্রী' থেকে কিংবা 'বজ্রকুল' থেকে বাউল শব্দটি এসেছে। কেউ কেউ বলেন 'আউল' শব্দ থেকে 'বাউল হয়েছে। ইতিহাসবিদদের মতে, সতেরো শতকে বাংলাদেশে বাউল মতের উদ্ভব হয়। এ মতের প্রবর্তক হলেন আউল চাঁদ ও মাধববিবি। বীরভদ্র নামে এক বৈষ্ণব মহাজন সেই সময়ে একে জনপ্রিয় করে তোলেন।
[সম্পাদনা] বিস্তৃতি
বাংলাদেশের কুষ্টিয়া-পাবনা এলাকা থেকে শুরু করে পশ্চিম্বঙ্গের বীরভূম-বোলপুর পর্যন্ত বাউলদের বিস্তৃতি। বাউলদের মধ্যে গৃহী ও সন্ন্যাসী দুই প্রকারই রয়েছে। বাউলরা তাদের গুরুর আখড়ায় সাধনা করে।
[সম্পাদনা] দর্শন
বাউলেরা উদার ও অসাম্প্রদায়িক ধর্মসাধক। তারা মানবতার বাণী প্রচার করে। বাউল মতে বৈষ্ণবধর্ম এবং সূফীবাদের প্রভাব লক্ষ করা যায়। বাউলরা সবচেয়ে গুরুত্ব দেয় আত্মাকে। তাদের মতে আত্মাকে জানলেই পরমাত্মা বা সৃষ্টিকর্তাকে জানা যায়। আত্মা দেহে বাস করে তাই তারা দেহকে পবিত্র জ্ঞান করে। সাধারণত অশিক্ষিত হলেও বাউলরা জীবনদর্শন সম্পর্কে অনেক গভীর কথা বলেছেন।
[সম্পাদনা] বাউল সাধক
বাউল সাধকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হচ্ছে লালন সাঁই। লালন তার বিপুল সংখ্যক গানের মাধ্যমে বাউল মতের দর্শন এবং অসাম্প্রদায়িকতার প্রচার করেছিলেন। এছাড়াও বাউল কবিদের মধ্যে সিরাজ সাঁই, পাঞ্জু সাঁই, পাগলা কানাই, শীতলং সাঁই, শেখ মদন, দুদ্দু সাঁই, পূর্ণদাস বাউল ইত্যাদির নাম উল্লেখযোগ্য।