কামিনী রায়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

কামিনী রায়
কামিনী রায়

কামিনী রায় (জন্ম অক্টোবর ১২, ১৮৬৪- মৃত্যু সেপ্টেম্বর ২৭, ১৯৩৩) একজন বাঙালি কবি, সমাজকর্মী, এবং নারীবাদী লেখিকা। তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের প্রথম মহিলা স্নাতক।

[সম্পাদনা] জীবনী

কামিনী রায়ের জন্ম পূর্ববঙ্গের বাকেরগঞ্জের বাসান্দা গ্রামে (বর্তমানে যা বরিশাল জেলার অংশ)। ১৮৮০ খ্রীস্টাব্দে তিনি কলকাতা বেথুন স্কুল হতে এন্ট্রান্স (মাধ্যমিক) পরীক্ষা ও ১৮৮৩ খ্রীস্টাব্দে ফার্স্ট আর্টস (উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বেথুন কলেজ হতে তিনি ১৮৮৬ খ্রীস্টাব্দে ভারতের প্রথম নারী হিসাবে সংস্কৃত ভাষায় স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। এর পর তিনি বেথুন কলেজেই শিক্ষকতা শুরু করেন।

তাঁর পিতা চন্ডী চরণ সেন একজন বিচারক ও লেখক ছিলেন। তিনি ব্রাহ্ম সমাজের বিশিষ্ট নেতা ছিলেন। ১৮৯৪ খ্রীস্টাব্দে কামিনীর সাথে কেদারনাথ রায়ের বিয়ে হয়।

যে যুগে মেয়েদের শিক্ষাও বিরল ঘটনা ছিল, সেই সময়ে কামিনী রায় নারীবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। তাঁর অনেক প্রবন্ধে এর প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি নারী শ্রম তদন্ত কমিশন (১৯২২-২৩) এর সদস্য ছিলেন। জীবনের শেষ ভাগে তিনি হাজারীবাগে বাস করেছেন। সেপ্টেম্বর ২৭, ১৯৩৩ খ্রীস্টাব্দে তাঁর জীবনাবসান ঘটে।

[সম্পাদনা] সাহিত্য

খুব কম বয়স থেকেই কামিনী রায় সাহিত্য রচনা করেছেন। মাত্র ৮ বছর বয়স থেকে তিনি কবিতা লিখতেন। তাঁর প্রথম কাব্য গ্রন্থ, আলো ও ছায়া প্রকাশিত হয় ১৮৮৯ খ্রীস্টাব্দে। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে মহাশ্বেতা, পুন্ডরীক, দ্বীপ ও ধুঁপ, জীবন পথে, নির্মাল্য, মাল্য ও নির্মাল্য, ও অশোক সঙ্গীত, তিনি শিশুদের জন্য গুঞ্জন নামের বই, ও প্রবন্ধ গ্রন্থ বালিকা শিক্ষার আদর্শ রচনা করেন।

কামিনী রায় সব সময় অন্য সাহিত্যিকদের উৎসাহ দিতেন। ১৯২৩ খ্রীস্টাব্দে তিনি বরিশাল সফরের সময় কবি সুফিয়া কামালকে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করতে বলেন। তিনি ১৯৩০ খ্রীস্টাব্দে বঙ্গীয় লিটারারি কনফারেন্সের সভাপতি, ও ১৯৩২-৩৩ খ্রীস্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহ-সভাপতি ছিলেন।

১৯০৯ খ্রীস্টাব্দে কামিনী রায়ের স্বামীর মৃত্যু ঘটেছিল। সেই শোক ও দুঃখ তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে, যা তাঁর কবিতায় প্রকাশ পায়। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সংস্কৃত সাহিত্য দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। তাঁর স্মরণে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় জগত্তারিনী পুরস্কার প্রবর্তন করেছে।


[সম্পাদনা] বহিঃসংযোগ

অন্যান্য ভাষা