জিয়াউর রহমান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

জিয়াউর রহমান (১৯ জানুয়ারী, ১৯৩৬ - ৩০ মে, ১৯৮১) বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান এবং একজন প্রথমসারির মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য তিনি বীর উত্তম খেতাব পান।

শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান
শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান

সূচিপত্র

[সম্পাদনা] জন্ম ও শৈশব

জিয়াউর রহমানের জন্ম ১৯ জানুয়ারী ১৯৩৬ সালে বগুড়ার বাগবাড়ীতে। তার বাবা মনসুর রহমান একজন রসায়নবিদ হিসেবে কলকাতাতে সরকারী চাকুরী করতেন। তার শৈশবের কিছুকাল বগুড়ার গ্রামে ও কিছুকাল কলকাতাতে কেটেছে। দেশবিভাগের পর (১৯৪৭) তার বাবা করাচি চলে যান। তখন জিয়া কলকাতার হেয়ার স্কুল ত্যাগ করেন এবং করাচি একাডেমী স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে তিনি ঐ স্কুল থেকে তার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন এবং তারপর করাচিতে ডি.জে. কলেজে ভর্তি হন।

[সম্পাদনা] পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে জিয়া

১৯৫৩ সালে তিনি কেকুলে পাকিস্তান মিলিটারী একাডেমীতে শিক্ষানবিস অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫৫ সালে তিনি সেকেন্ড লেফটেনেন্ট হিসেবে কমিশন র‌্যাংকে উন্নিত হন। তিনি সেখানে দুই বছর চাকুরী করেণ, তারপর ১৯৫৭ সালে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে বদলি হয়ে আসেন। তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেন। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে তিনি খেমকারান সেক্টরে একটি কোম্পানির কমান্ডার ছিলেন এবং তার কোম্পানি যুদ্ধে বীরত্বের জন্য যে সব কোম্পানি সর্বাধিক পুরষ্কার পায়, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল। [১৯৬৬]] সালে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে একজন প্রশিক্ষক হিসেবে দ্বায়িত্ব পান। সে বছরই তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের কোয়েটা স্টাফ কলেজে কমান্ড কোর্সে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে তিনি জয়দেবপুরস্থ সেকেন্ড ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে নিয়োগ পান। উচ্চ প্রশিক্ষণের জন্য তিনি পশ্চিম জার্মানীতে যান। ১৯৭০ সালে একজন মেজর হিসেবে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং চট্টগ্রামে অষ্টম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে নিয়োগ পান।

[সম্পাদনা] স্বাধীনতার ঘোষণা

২৫ মার্চের কালরাত্রিতে বঙ্গবন্ধু যখন হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি হন, দেশে তখন এক রাজনৈতিক শুন্যতা সৃষ্টি হয়। সাধারাণ মানুষ কোনো দিকনির্দেশনা পাচ্ছিল না। সেই মূহুর্তে অষ্টম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট জিয়ার নেতৃত্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং জিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেন। এটা ছিল ২৬২৭ মার্চ রাতের মধ্যবর্তি সময়। (সূত্রঃ বাংলাপেডিয়া) অতঃপর জিয়া কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।


[সম্পাদনা] স্বাধীনতা যুদ্ধ

স্বাধীনতা যুদ্ধে জিয়াউর রহমান যুদ্ধের পরিক্লপনা ও তার বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন। ১৯৭১ এর জুন পর্যন্ত ১ নং সেক্টর কমান্ডার ও তারপর জেড-ফোর্সের প্রধান হিসেবে তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বে জন্য তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

[সম্পাদনা] জেনারেল জিয়া

জেনারেল জিয়া
জেনারেল জিয়া


[সম্পাদনা] রাষ্ট্রপতি জিয়া

১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর সিপাহি জনতা বিপ্লবের পর তিনি রাজনীতের কেন্দ্র চলে আসেন। ১৯ শে নভেম্বর ১৯৭৬ সালে তিনি প্রধান সামরিক প্রশাষকের দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবু সায়েমকে কৌশলে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে ফেলার পর ২১ এপ্রিল ১৯৭৭ সালে জিয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন। রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন জিয়া দেশে আবার গনতান্ত্রায়নের উদ্যোগ নেন। তিনি বহুদলীয় গনতন্র চালুর সিদ্ধান্ত নেন। দেশের রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা সৃষ্টির আভাস দিয়ে তিনি বলেন, "I will make politics difficult for the politicians" (আমি রাজনীতিকে রাজনীতিবিদের জন্য কঠিন করে দেব)।

[সম্পাদনা] বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ

[সম্পাদনা] আইন শৃঙ্খলা

[সম্পাদনা] বহুদলীয় গণতন্ত্র

[সম্পাদনা] বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল

[সম্পাদনা] আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন

[সম্পাদনা] আন্তর্জাতিক সম্পর্ক

[সম্পাদনা] মৃত্যু

জিয়ার জানাজায় জনসমাগম
জিয়ার জানাজায় জনসমাগম

৩০ মে, ১৯৮১ সালে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুথানে জিয়া নিহত হন। তাকে শেরে বাংলা নগরে দাফন করা হয়। জেনারেল জিয়ার জানাজা বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ জনসমাগম ঘটে।

[সম্পাদনা] জিয়ার উত্তরসূরী

জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিচারপতি আবদুস সাত্তার বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন। এর একবছর পর সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ১৯৮৩ সালের জিয়ার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের পতনের পর ১৯৯১ সালে ও পরবর্তিতে ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। উভয় সময়ই বেগম খালদা জিয়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি জাতীয় সংসদে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। বর্তমানে জিয়াউর রহমানের বড় ছেলে তারেক রহমান রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। তারেক রহমান বর্তমানের বিএনপির সিনিয়ন যুগ্ম মহাসচিব।

পূর্বসূরী:
আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি
এপ্রিল ২১ ১৯৭৭মে ৩০ ১৯৮১
উত্তরসূরী:
আবদুস সাত্তার


বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতীকl
শেখ মুজিবুর রহমান •আবু সাঈদ চৌধুরী • মোহাম্মদউল্লাহ • শেখ মুজিবুর রহমান • খন্দকার মোশতাক আহমেদ • আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম • জিয়াউর রহমান • আব্দুস সাত্তার • হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ •আফম আহসানউদ্দিন চৌধুরী • হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ • শাহাবুদ্দিন আহমেদ • আবদুর রহমান বিশ্বাস • শাহাবুদ্দিন আহমেদ • একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী • জমিরুদ্দিন সরকার • ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ
অন্যান্য ভাষা