পেল রাশিমালা
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পেল রাশিমালা এবং সহযোগী পেল সংখ্যা (পেল-লুকাস সংখ্যা) হলো পূর্ণ সংখ্যার ধারা। প্রাচীন কাল থেকেই গণিতে এসব ধারার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ফিবোনাচ্চি রাশিমালার মতো একটি পৌনপুনিক সমীকরণ দ্বারা এগুলিকে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এই ধারার সংখ্যাগুলি সূচকীয় হারে বৃদ্ধি পায়, এবং এই বৃদ্ধির হার রূপালী অনুপাত এর সমানুপাতিক।
২ সংখ্যাটির বর্গমূলের সন্নিকর্ষ হিসাবে (approximation), বর্গ ত্রিকোণাকার সংখ্যার সংজ্ঞায়, প্রায় সমদ্বিবাহু সমকোণী ত্রিভূজ অংকনে, এবং কিছু কম্বিনেটোরিয়াল ইনিউমারেশন সমস্যার সমাধানে পেল রাশিমালার প্রয়োগ আছে। [১]
পেল সমীকরণ এর মতোই পেল রাশিমালার নাম এসেছে লিওনার্ড অয়লার এর ভ্রান্ত ধারণা থেকে যে, এই সমীকরণ ও রাশিমালার কথা বলেছিলেন জন পেল। পেল-লুকাস রাশিমালাকে এদুয়ার লুকার নামানুসারে অবশ্য লুকাস রাশিমালাও বলা হয়ে থাকে। পেল ও সহযোগী পেল সংখ্যাগুলি লুকাস ধারার অন্তর্গত।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] সংজ্ঞা
পেল রাশিমালার সংজ্ঞা দেয়া হয় নিম্নরূপে
কথায় বলতে গেলে, পেল রাশিমালার শুরু হয় ০ ও ১ দিয়ে, এবং পরের প্রতিটি পেল সংখ্যা হলো পূর্বের সংখ্যাটির দ্বিগুণ, এবং তারও পূর্বের পেল সংখ্যা - এই দুইয়ের যোগফলের সমান। প্রথম কয়েকটি পেল রাশিমালা হলো
- ০, ১, ২, ৫, ১২, ২৯, ৭০, ১৬৯, ৪০৮, ৯৮৫, ২৩৭৮, ...
পেল রাশিমালার সরাসরি সূত্র হলো
n এর বড় মানের জন্য, রাশিটি এই সমীকরণে প্রাধান্য বিস্তার করে। তাই পেল রাশিমালার সংখ্যাগুলো আনুমানিকভাবে রূপালী অনুপাত এর power এর সমানুপাতিক।
(অনেকটা সোনালী অনুপাত এর সাথে ফিবোনাচ্চি রাশিমালার সম্পর্কের মতো)।
ম্যাট্রিক্স তত্ত্ব থেকে আরো একটি সংজ্ঞা দেয়া যায় এভাবে
এসব সংজ্ঞা থেকে আরো অনেক সম্পর্ক বা সমীকরণ বের করা যায়। যেমন, ফিবোনাচ্চি রাশিমালার ক্যাসিনির সমীকরণ এর মতো বলা যায়
যা ম্যাট্রিক্স হতে প্রাপ্ত সংজ্ঞা হতে এসেছে।[২]
[সম্পাদনা] মৌলিক সংখ্যা ও বর্গ
পেল মৌলিক সংখ্যা হলো এমন একটি পেল সংখ্যা, যা মৌলিক সংখ্যাও বটে। প্রথম কয়েকটি পেল মৌলিক সংখ্যা হলো
- ২,৫,২৯,৫৭৪১...
ফিবোনাচ্চি রাশিমালার মতো পেল সংখ্যা Pn মৌলিক হতে পারে শুধু যদি n নিজে মৌলিক সংখ্যা হয়।
অন্য কোনো পূর্ণ সংখ্যার বর্গ, ঘন, বা উচ্চতর সূচকে রয়েছে, এমন পেল সংখ্যা হলো ০, ১, এবং ১৬৯ = ১৩২ [৩]
তবে, এতো অল্প সংখ্যক বর্গ, ঘন, বা উচ্চতর সূচকের পেল সংখ্যা থাকলেও, পেল রাশিমালার সাথে বর্গ ত্রিকোণাকার সংখ্যার সম্পর্ক আছে।[৪] বিশেষত, এসব সংখ্যা পেল রাশিমালা বিষয়ক নিম্নের অভেদ সমীকরণ হতে পাওয়া যায়:
অভেদের বাম দিকের সংখ্যাটি একটি বর্গ সংখ্যাকে নির্দেশ করে, এবং ডানদিকের সংখ্যাটি একটি ত্রিকোণাকার সংখ্যাকে নির্দেশ করছে। কাজেই এর ফলে পাওয়া যায়, একটি বর্গ ত্রিকোণাকার সংখ্যা।
সান্তানা ও ডিয়াজ-বারেরো (২০০৬) পেল সংখ্যা ও বর্গ সংখ্যার সম্পর্কের আরেকটি অভেদ সমীকরণ প্রমাণ করেছেন। তাঁরা দেখিয়েছেন যে, P4n + 1 পর্যন্ত সব পেল সংখ্যার যোগফল সব সময়ই একটি বর্গ।:
যেমন, P5 পর্যন্ত সকল পেল সংখ্যার যোগফল 0 + 1 + 2 + 5 + 12 + 29 = 49, হলো P2 + P3 = 2 + 5 = 7 এর বর্গ। P2n + P2n + 1 - এই যোগফলটির বর্গমূল নিলে যে ধারা পাওয়া যায়, তা হলো
- ১, ৭, ৪১, ২৩৯, ১৩৯৩, ৮১১৯, ৪৭৩২০ ...
এদেরকে বলা হয় এনএসডাব্লিউ রাশিমালা।
[সম্পাদনা] পিথাগোরীয় ত্রয়ী
যদি একটি সমকোণী ত্রিভূজের বাহুর দৈর্ঘ্য পূর্ণ সংখ্যা হয়, এবং যথাক্রমে a, b, c হয়, যা পিথাগোরীয় উপপাদ্য a2+b2=c2 মেনে চলে, তাহলে (a,b,c) কে বলা হয় পিথাগোরীয় ত্রয়ী। মার্টিন (১৮৭৫) দেখিয়েছেন, পেল রাশিমালার সংখ্যাসমূহকে পিথাগোরীয় ত্রয়ী গঠনে ব্যবহার করা সম্ভব, যার মধ্যে a ও b এর ব্যবধান মাত্র ১, ফলত সমকোণী ত্রিভূজটি প্রায় সমদ্বিবাহু। এরকম ত্রয়ীর গঠন হলো এরকমঃ
এভাবে গঠিত পিথাগোরীয় ত্রয়ীর ধারা হলো
- (৪,৩,৫), (২০,২১,২৯), (১২০,১১৯,১৬৫), (৬৯৬,৬৯৭, ৯৮৫), ...
[সম্পাদনা] সহযোগী পেল (পেল-লুকাস) রাশিমালা
সহযোগী পেল রাশিমালা বা পেল-লুকাস সংখ্যাসমূহকে নিম্নের পৌনঃপুনিক সম্পর্ক দ্বারা প্রকাশ করা যায়:
কথায়: এই রাশিমালার প্রথম দুইটি সংখ্যা হলো ২, এবং পরের প্রত্যেকটি সংখ্যা পূর্বের পেল-লুকাস সংখ্যাটির দ্বিগুণের সাথে তার পূর্বের পেল-লুকাস সংখ্যাটির যোগফলের সমান। এই ধারার প্রথম কয়েকটি সংখ্যা হচ্ছে ২, ২, ৬, ১৪, ৩৪, ৮২, ১৯৮, ৪৭৮ ...
সহযোগী পেল রাশিমালার সংখ্যাগুলোকে প্রকাশের আরেকটি উপায় হলো
এই রাশিমালার সব সংখ্যা জোড়। প্রতিটি সংখ্যা হলো ২ এর বর্গমূল বের করার আনুমানিক সূত্রের একটি রাশির লব এর দ্বিগুণ।
[সম্পাদনা] টীকা
- ↑ For instance, Sellers (2002) proves that the number of perfect matchings in the Cartesian product of a path graph and the graph K4-e can be calculated as the product of a Pell number with the corresponding Fibonacci number.
- ↑ For the matrix formula and its consequences see Ercolano (1979) and Kilic and Tasci (2005). Additional identities for the Pell numbers are listed by Horadam (1971) and Bicknell (1975).
- ↑ Pethő (1992); Cohn (1996). Although the Fibonacci numbers are defined by a very similar recurrence to the Pell numbers, Cohn writes that an analogous result for the Fibonacci numbers seems much more difficult to prove.
- ↑ Sesskin (1962). See the square triangular number article for a more detailed derivation.
[সম্পাদনা] তথ্যসূত্র
- Bicknell, Marjorie (1975). "A primer on the Pell sequence and related sequences". Fibonacci Quarterly 13 (4): 345–349. Template:MathSciNet.
- Cohn, J. H. E. (1996). "Perfect Pell powers". Glasgow Mathematical Journal 38 (1): 19–20. Template:MathSciNet.
- Dutka, Jacques (1986). "On square roots and their representations". Archive for History of Exact Sciences 36 (1): 21–39. DOI:10.1007/BF00357439. Template:MathSciNet.
- Ercolano, Joseph (1979). "Matrix generators of Pell sequences". Fibonacci Quarterly 17 (1): 71–77. Template:MathSciNet.
- Filep, László (1999). "Pythagorean side and diagonal numbers". Acta Mathematica Academiae Paedagogiace Nyíregyháziensis 15: 1–7.
- Horadam, A. F. (1971). "Pell identities". Fibonacci Quarterly 9 (3): 245–252, 263. Template:MathSciNet.
- Kilic, Emrah; Tasci, Dursun (2005). "The linear algebra of the Pell matrix". Boletín de la Sociedad Matemática Mexicana, Tercera Serie 11 (2): 163–174. Template:MathSciNet.
- Knorr, Wilbur (1976). "Archimedes and the measurement of the circle: A new interpretation". Archive for History of Exact Sciences 15 (2): 115–140. DOI:10.1007/BF00348496. Template:MathSciNet.
- Knorr, Wilbur (1998). ""Rational diameters" and the discovery of incommensurability". American Mathematical Monthly 105 (5): 421–429.
- Knuth, Donald E. (1994). "Leaper graphs". The Mathematical Gazette 78: 274–297. Template:Arxiv.
- Martin, Artemas (1875). "Rational right angled triangles nearly isosceles". The Analyst 3 (2): 47–50.
- Template:Cite conference
- Ridenhour, J. R. (1986). "Ladder approximations of irrational numbers". Mathematics Magazine 59 (2): 95–105.
- Santana, S. F.; Diaz-Barrero, J. L. (2006). "Some properties of sums involving Pell numbers". Missouri Journal of Mathematical Sciences 18 (1).
- Sellers, James A. (2002). "Domino tilings and products of Fibonacci and Pell numbers". Journal of Integer Sequences 5. Template:MathSciNet.
- Sesskin, Sam (1962). "A "converse" to Fermat's last theorem?". Mathematics Magazine 35 (4): 215–217.
- Thibaut, George (1875). "On the Súlvasútras". Journal of the Royal Asiatic Society of Bengal 44: 227–275.
- Thompson, D'Arcy Wentworth (1929). "III.—Excess and defect: or the little more and the little less". Mind: New Series 38 (149): 43–55.
- Vedova, G. C. (1951). "Notes on Theon of Smyrna". American Mathematical Monthly 58 (10): 675–683.