Template:প্রবেশদ্বার:জীবনী/বাঙ্গালীর/বাংলাদেশীর জীবনী
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শামসুল হক (১ ফেব্রুয়ারি, ১৯১৮ - ১৯৬৫) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। বাংলাদেশের মানুষের স্মৃতি থেকে প্রায় হারিয়ে যাওয়া এই রাজনীতিবিদের কথা পাওয়া যায় আবু জাফর শামসুদ্দীনের ‘আত্মস্মৃতি : সংগ্রাম ও জয়' বইতে। আবু জাফর শামসুদ্দীন লিখেছেন,
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তাকে (শামসুল হককে) আটক করা হয়। তখন তিনি বিবাহিত, একটি কন্যা সন্তানের পিতা। স্ত্রী নরসিংদির সেকান্দার মাস্টার সাহেবের কন্যা আফিয়া খাতুন এম.এ কলেজের লেকচারার। জেলখানায় শামসুল হকের মস্তিস্ক বিকৃতি ঘটে। নিজ পরিবারের প্রতি তাঁর মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। আফিয়া খাতুন তাঁকে ত্যাগ করেন। আফিয়া এখন পাকিস্তানে মিসেস আফিয়া দিল। শামসুল হক সম্পূর্ণ বিকৃতমসিত্মষ্ক অবস্থায় জেলখানা থেকে বেরিয়ে আসেন। আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শামসুল হকের চিকিৎসায় আওয়ামী মুসলিম লীগ কোনো উদ্যোগ নিয়েছিল বলেও মনে পড়ে না। শামসুল হক ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন- কখনও বন্ধু-বান্ধবদের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে টাকা ধার চাইতেন, কেউ সমাদর করলে আহার করতেন। টাঙ্গাইলের ওয়ার্টারলু বিজয়ী শামসুল হকের মৃত্যু কোথায় কি অবস্থায় হলো তার কোনো বিবরণ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হতে দেখিনি। শোকসভাও করেনি কোনো রাজনৈতিক দল বা অন্যরা। অথচ এই শামসুল হক একদিন ছিলেন বাংলার তরুণ মুসলিম ছাত্রসমাজের প্রিয় নেতা- ১৯৫২ সালেও ভাষাসংগ্রামী এবং আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। |
টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলায় এক নিভৃত পল্লে মাইঠানে ১৯১৮ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারী শামসুল হক তার মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি একই উপজেলার টেউরিয়া গ্রামে। কিশোর বয়স থেকেই তিনি জমিদার, পূজিপতি, মহাজন ও শোষকদের বিরুদ্ধে সংগ্রামী হয়ে উঠেন। যুবক বয়সে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে শরীক হন। তিনি ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন। ১৯৪৯ সালের ২৬ এপ্রিল তিনি টাঙ্গাইল দক্ষিণ কেন্দ্রে প্রাদেশিক সরকার নতুন করে উপনির্বাচনের ব্যবস্থা করলে, শামসুল হক স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মুসলিম লীগ প্রার্থী করটিয়ার জমিদার খুররম খান পন্নীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন। শামসুল হক যখন (১৯৪৯) টাঙ্গাইলের উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন, তখন তিনি সবে বিএ পাশ করেছেন। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। সম্বল ছিল মূলত আদর্শ, নিষ্ঠা ও সততা। এর কিছুদিন পর পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম লীগের বিরোধী রাজনৈতিক দল পূর্ব-পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয়। মাওলানা ভাসানী ছিলেন এই দলের সভাপতি। শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক, শেখ মুজিবুর রহমান ও খন্দকার মোশতাক আহমেদ যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তিতে "আওয়ামী মুসলিম লীগ" নামটি থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়া হয় এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আত্মপ্রকাশ করে। ... ... ... ... আরও জানুন