সৈয়দ শামসুল হক
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সৈয়দ শামসুল হক (জন্ম ২৭ ডিসেম্বর,১৯৩৫) একজন বিখ্যাত বাংলাদেশী সাহিত্যিক। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প তথা সাহিত্যের সকল শাখায় সাবলীল পদচারণার জন্য তাঁকে 'সব্যসাচী লেখক' বলা হয়। সব্যসাচী লেখক হিসেবে তাঁর পরিচিতি থাকলেও এ পরিচয়ে তাঁর আপত্তি রয়েছে বলে জানা যায়। সৈয়দ শামসুল হক মাত্র ২৯ বছর বয়সে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান। বাংলা একাডেমী পুরস্কার পাওয়া সাহিত্যিকদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে কম বয়সে এ পুরস্কার পান। এ পুরস্কার পাবার পেছনে খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবি মুনীর চৌধুরীর অবদান ছিলো বলে জানা যায়।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] সংক্ষিপ্ত জীবনী
সৈয়দ শামসুল হক সৈয়দ সিদ্দিক হুসাইন ও হালিমা খাতুন দম্পতির আট সন্তানের প্রথম সন্তান। পিতা সৈয়দ সিদ্দিক হুসাইন পেশায় ছিলেন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার। তিনি কুড়িগ্রামে ডাক্তারি চর্চা করতেন। সৈয়দ শামসুল হকের ভাষ্য অনুযায়ী তাঁর রচিত প্রথম পদ তিনি লিখেছিলেন এগারো-বারো বছর বয়সে। টাইফয়েডে শয্যাশায়ী কবি তাঁর বাড়ীর রান্নাঘরের পাশে শজনে গাছে একটি লাল টুকটুকে পাখি দেখে দুলাইনের একটি পদ "আমার ঘরে জানালার পাশে গাছ রহিয়াছে। তাহার উপরে দুটি লাল পাখি বসিয়া আছে।" রচনা করেন। এরপর ১৯৪৯-৫০ সালের দিকে এসএসসি পরীক্ষার পরে ব্যক্তিগত খাতায় ২০০টির মতো কবিতা রচনা করেন। সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ১৯৫১ সালের মে মাসে। ফজলে লোহানী সম্পাদিত অগত্যা পত্রিকায়। সেখানে উদয়াস্ত নামে তাঁর একটি গল্প ছাপা হয়।
সাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হকের শিক্ষাজীবন শুরু হয় কুড়িগ্রাম মাইনর স্কুলে। সেখানে তিনি ষষ্ঠ শ্রেনী পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। এরপর তিনি ভর্তি হন কুড়িগ্রাম হাই ইংলিশ স্কুলে। এরপর ১৯৫০ সালে গণিতে লেটার মার্কস নিয়ে সৈয়দ শামসুল হক এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
সৈয়দ শামসুল হকের পিতার ইচ্ছা ছিলো তাঁকে তিনি ডাক্তারী পড়াবেন। পিতার এরকম দাবি এড়াতে তিনি ১৯৫১ সালে বম্বে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি বছরখানেকের বেশী এক সিনেমা প্রডাক্শন হাউসে সহকারী হিসেবে কাজ করেন। এরপর ১৯৫২ সালে তিনি দেশে ফিরে এসে জগন্নাথ কলেজে নিজের ইচ্ছাঅনুযায়ী মানবিক শাখায় ভর্তি হন। এরপর তিনি ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে ভর্তি হন। পরবর্তীতে ১৯৫৬ সালে সেখান থেকে তার পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখে বেরিয়ে আসেন। এর কিছুদিন পরেই তাঁর প্রথম উপন্যাস "দেয়ালের দেশ" প্রকাশিত হয় ।
পিতার মৃত্যুর পর ১৯৫৬ - ১৯৫৭ সালে সৈয়দ শামসুল হক ব্যাপক অর্থকষ্টে পড়েন । সেটা কাটাতে ১৯৫৭ - ১৯৭০ সাল পর্যন্ত সৈয়দ শামসুল হক ৩০টির মতো চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য রচনায় অবদান রাখেন । তার লিখিত চিত্রনাট্যগুলোর মধ্যে মাটির পাহাড়, তোমার আমার, রাজা এল শহরে, শীত বিকেল, সুতরাং, কাগজের নৌকা উল্লেখযোগ্য । চিত্রনাট্য ছাড়াও তিনি চলচ্চিত্রের জন্য গানও রচনা করছেন । এমন মজা হয় না, গায়ে সোনার গয়না, এই যে আকাল এই যে বাতাস, তুমি আসবে বলে কাছে ডাকবে বলে ভালো বাসবে শুধু মোরে, হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস, তোরা দেখ দেখ দেখরে চাহিয়া, রাস্তা দিয়া হাইটা চলে রাস্তা হারাইয়া ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য ।
[সম্পাদনা] রচনা
[সম্পাদনা] কবিতা
একদা এক রাজ্যে, বিরতিহীন উৎসব, অপর পুরুষ
[সম্পাদনা] উপন্যাস
নীল দংশন, স্তব্ধতার অনুবাদ, নিষিদ্ধ লোবান, খেলারাম খেলে যা
[সম্পাদনা] গল্প
তাস, রক্ত গোলাপ
[সম্পাদনা] অন্যান্য
পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়
[সম্পাদনা] পুরস্কার
তিনি তাঁর সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬৬ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার, ১৯৬৯ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৩ সালে আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে একুশে পদক, ১৯৮৭ সালে পদাবলী কবিতা পুরস্কার, ১৯৯০ সালে নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক সহ অনেক পুরস্কার লাভ করেন।
[সম্পাদনা] বহিঃসংযোগ
সৈয়দ শামসুল হকের সাক্ষাৎকার, ১৯৯৭
সৈয়দ শামসুল হকের সাক্ষাৎকার, সাপ্তাহিক ২০০০, নবম সংখ্যা, ২০০৭