পারভেজ হ্যারিস
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ড. পারভেজ হ্যারিস (জন্ম ১৯৬৪) যুক্তরাজ্যে কর্মরত একজন বাংলাদেশী জীববিজ্ঞানী। তিনি মূলত জৈব তথ্যবিজ্ঞান (Bioinformatics) এবং প্রোটিনের গঠন নিয়ে কাজ করেন। যুক্তরাজ্যের লেস্টারে অবস্থিত ডি মন্টফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কাজ করার পাশাপাশি তিনি বেশ কিছু আন্তর্জাতিক জার্নালের সম্পাদকের ভূমিকা পালন করছেন। সম্প্রতি আর্সেনিক সমস্যার সমাধানের জন্য কার্যকর এবং মৌলিক একটি গবেষণা বৈজ্ঞানিক মহলে সমাদৃত হয়েছে। বর্তমানে তিনি পানি থেকে স্বল্প খরচে আর্সেনিক দূর করতে কচুরিপানার শিকড় ব্যবহারের উপর গবেষণা করছেন।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] জন্ম ও শিক্ষাজীবন
পারভেজ হ্যারিস ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশের মৌলভিবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কচুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোহাম্মদ হ্যারিস এবং মা শামসুন নেহার মায়া। ১৯৭৫ সালে যখন বাংলাদেশের সিলেট থেকে যুক্তরাজ্য যাবার হিড়িক পড়ে গিয়েছিলো তখনই তার বাবা মা তাদের ৫ পুত্রসন্তানসহ যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। সেখানে কার্ডিফে তারা স্থায়ী হন। দেশে হ্যারিস একাটুনা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক পড়াশোনা করেন এবং ১৯৭৫ সাল থেকে কার্ডিফেই তার বাকি স্কুল এবং কলেজ জীবনের পড়াশোনা চলতে থাকে। তখন ইংল্যান্ড প্রবাসী সব বাঙালী বাবা মা'রাই কলেজ পাঠ শেষ করার পর সন্তানদের আয় রোজগারের জন্য কাজে লাগিয়ে দিতেন। মূলত বিভিন্ন রেস্তোঁরায় কাজ করাই হত মূল আয়ের উৎস। কিন্তু হ্যারিসের মা চাননি তার বড় ছেলে একাজে জীবন অতিবাহিত করুক। পড়াশোনা চালিয়ে যান হ্যারিস। ১৯৮৪ সালে তিনি প্রথম শ্রেণী পেয়ে জীবন বিজ্ঞান এবং রসায়নে স্নাতক সম্পন্ন করেন আর সাথে সাথেই পিএইচডি গবেষণার সুযোগ পেয়ে যান। ১৯৮৫ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে তার গবেষণা শুরু হয়। তিনি যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞান ও প্রকৌশলী গবেষণা কাউন্সিলের (Science and Engineering Research Council) ফেলোশীপ পান। সেখানকার জিএসকে নামে পরিচিত একটি স্মিথ ক্লাইন ফরাসি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি তার ফেলোশীপ স্পন্সর করে।
[সম্পাদনা] সংসার ও কর্মজীবন
যুক্তরাজ্যে গবেষণা কাজ করলেও সাংসারিক জীবন শুরু করার জন্য হ্যারিস ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে যান। নিজ দেশেই পিএইচডি গবেষণা চলাকালীন সময়ে তাজাল্লি ফেরদৌস মণির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তাদের ফাতিমা, মারিয়াআম ও আয়েশা নামে তিন সন্তান রয়েছে।
১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পারভেজ হ্যারিস মন্টফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন। সেখানে বর্তমানে তার গবেষণার বিষয়বস্তু হচ্ছে প্রোটিয়োমিক্স, জৈব তথ্যবিজ্ঞান (Bioinformatics) এবং জৈবপ্রযুক্তি। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে তার গবেষণা কর্মগুলো নিম্নরুপ:
- বর্তমানকালের অ্যান্টিবায়োটিক সনাক্তকরণের ধারার উন্নতি সাধন এবং নতুন অ্যান্টিবায়োটিক উদ্ভাবনের প্রচেষ্টা।
- প্রোটিওমিক্সের গবেষণার মাধ্যমে কালিজিরা থেকে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং ক্যান্সারের প্রতিষেধক তৈরি।
- আর্সেনিকের বিপাক ও তার জৈব-রাসায়নিক কার্যক্রমের অনুসন্ধান।
- জৈব তথ্যবিজ্ঞানের সাহায্যে প্রোটিনের গঠন ও কাজ নির্ণয়।
বর্ণালীবীক্ষণ বিশেষ অবদানের জন্য পারভেজ হ্যারিসকে Spectroscopy নামক একটি আন্তর্জাতিক জার্নালের প্রধান সম্পাদক নিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি ইউরোপের অন্যতম পুরনো ও সর্বোচ্চ খেতাবপ্রাপ্ত বায়োকেমিক্যাল জার্নালের একজন সম্পাদক। ২০০৬ সালে তাকে এই জার্নালের এডিটর অফ দ্য ইয়ার ঘোষণা করা হয়েছে।
[সম্পাদনা] মৌলিক গবেষণাসমূহ
[সম্পাদনা] আর্সেনিক শোষক হিসেবে কচুরিপানার শিকড়
[সম্পাদনা] বর্জ্য শোষক হিসেবে কচুরিপানার শিকড়
[সম্পাদনা] গ্যাস্ট্রিক হাইড্রোজেন পটাশিয়াম এটিপিএজ পৃথকীকরণ
[সম্পাদনা] প্রোটিনের গাঠনিক বৈশিষ্ট্য সমাধানে এফটিআইআর
[সম্পাদনা] ফ্যাক্টর এইচ-এর গঠন
[সম্পাদনা] তথ্যসূত্র
- ছুটির দিনে : দৈনিক প্রথম আলো