গন্ধক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

১৬ ফসফরাসগন্ধকক্লোরিন
O

S

Se
সাধারণ
নাম, প্রতীক, সংখ্যা গন্ধক, S, ১৬
রাসায়নিক শ্রেণী অধাতু
শ্রেণী, পর্যায়, ব্লক ১৬, ৩, পি
স্বভাবজাত প্রকৃতি lemon yellow
প্রমিত পারমানবিক ভর ৩২.০৬৫(৫) g·mol−1
ইলেকট্রন বিন্যাস [Ne] 3s2 3p4
শক্তিস্তর প্রতি ইলেকট্রন সংখ্যা ২, ৮, ৬
ভৌত বৈশিষ্ট্যসমূহ
দশা solid
ঘনত্ব (কক্ষ তাপমাত্রা কাছাকাছি) (অলফা) ২.০৭ গ্রাম·সেমি−৩
ঘনত্ব (কক্ষ তাপমাত্রা কাছাকাছি) (বিটা) ১.৯৬ গ্রাম·সেমি−3
ঘনত্ব (কক্ষ তাপমাত্রা কাছাকাছি) (গামা) ১.৯২ গ্রাম·সেমি−3
গলনাংকে তরল ঘনত্ব ১.৮১৯ গ্রাম·সেমি−3
গলনাংক ৩৮৮.৩৬ K
(১১৫.২১ °C, ২৩৯.৩৮ °F)
স্ফুটনাংক ৭১৭.৮ K
(৪৪৪.৬ °C, ৮৩২.৩ °F)
ক্রান্তি বিন্দু ১৩১৪ K, ২০.৭ মেগাপ্যাসকেল
ফিউশনের এনথালপি (মনো) ১.৭২৭ Kj.mol−1
বাষ্পায়ন তাপ (মনো) ৪৫ Kj.mol−1
তাপধারণ ক্ষমতা (২৫ °C) ২২.৭৫ J·mol−1·K−1
বাষ্প চাপ
P(প্যাসকেল) ১০ ১০০ ১ k ১০ k ১০০ k
T(K) ৩৭৫ ৪০৮ ৪৪৯ ৫০৮ ৫৯১ ৭১৭
পারমানবিক বৈশিষ্ট্য
কেলাস গঠন অর্থোরম্বিক
জারণ অবস্থা −১, ±২, ৪,
(শক্তিশালী অম্লীয় অক্সাইড)
তড়িৎঋণাত্বকতা ২.৫৮ (পাউলিং স্কেল)
পারমানবিক ব্যাসার্ধ্য ১০০ pm
পারমানবিক ব্যাসার্ধ্য (calc.) ৮৮ pm
সমযোজী ব্যাসার্ধ্য ১০২ pm
ভ্যান ডার ওয়াল্‌স ব্যাসার্ধ্য ১৮০ pm
বিশেষ দ্রষ্টব্য
চৌম্বক ক্রম no data
তড়িৎ রোধকত্ব (20 °C) (amorphous)
২×১০১৫Ω·m
তাপীয় পরিবাহকত্ব (৩০০ K) (amorphous)
০.২০৫ W·m−1·K−1
বাল্ক গুণাংক ৭.৭ GPa
মোহ্‌স কাঠিন্য ২.০
সিএএস নিবন্ধন সংখ্যা ৭৭০৪-৩৪-৯
নির্বাচিত সমাণুকসমূহ
মূল নিবন্ধ: গন্ধক-এর সমাণুকসমূহ
সমাণু এনএ অর্ধায়ু ডিএম ডিই (MeV) ডিপি
৩২S ৯৫.০২% S ১৬টি নিউট্রন নিয়ে স্থিত হয়
৩৩S ০.৭৫% S ১৭টি নিউট্রন নিয়ে স্থিত হয়
৩৪S ৪.২১% S ১৮টি নিউট্রন নিয়ে স্থিত হয়
৩৫S syn ৮৭.৩২ দিন β- ০.১৬৭ ৩৫Cl
৩৬S ০.০২% S ২০টি নিউট্রন নিয়ে স্থিত হয়
তথ্যসূত্র
This box: প্রদর্শন  আলোচনা  সম্পাদনা

গন্ধক তথা সালফার (Sulfur or sulphur (IPA: /ˈsʌlfə/)) প্রাচীনকাল থেকে পরিচিত একটি মৌলিক পদার্থ। বৈশিষ্টপূর্ণ হলুদ রঙের কারণে একে সহজেই চেনা যায়। অজৈব এবং জৈব রসায়ন উভয় রসায়নে এর গুরুত্ব অপরিসীম। সালফার জীবনের জন্যে অপরিহার্য। কুড়িটি মোট অ্যামিনো অ্যাসিডের মধ্যে দুটি অ্যামিনো অ্যাসিডে সালফার আছে।

সালফার একটি বহুযোজী অধাতব রাসায়নিক পদার্থ। এর পারমাণবিক সংখ্যা ১৬ ও চিহ্ন "S"। সালফার প্রকৃতিতে বিশুদ্ধ রূপে অথবা সালফাইড বা সালফেট রূপে পাওয়া যায়। বহু ধাতব খনিজ প্রাকৃতিতে প্রধানতঃ সালফাইড রূপে বিদ্যমান (যেমন পাইরাইট, চাল্কোপাইরাইট)।

বিশুদ্ধ সালফারের তিনটি রুপভেদঃ

  • হলুদ সালফার
  • লাল সালফার
  • কালো সালফার

এদের মধ্যে হলুদ সালফার সবচেয়ে বেশী দেখা যায়। বিশুদ্ধ হলুদ সালফার নিজে হলুদ বর্ণের গন্ধহীন স্বাদহীন কেলাসিত পদার্থ। কিন্তু সালফাইড বিশেষ করে হাইড্রোজেন সালফাইড "পচা" গন্ধ বিশিষ্ট (খুব সম্ভবতঃ গন্ধক নামের উৎস) এবং সায়ানাইডের থেকেও বিষাক্ত।

সার কারখানায় সবচেয়ে বেশী ব্যাবহার হলেও, সালফারের অন্যান্য ব্যাবহারগুলির মধ্যে কয়েকটি হল

  • গান পাউডার (বারুদ)
  • দেশলাই
  • কীটনাশক
  • অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল
  • রবার ভাল্কানাইজেসন

[সম্পাদনা] আবিষ্কারের ইতিহাস

অনেক আগে থেকেই মানুষ গন্ধকের কথা জানতো। এর বেশ কিছু প্রমাণ রয়েছে। যেমন, প্রাচীন গ্রিসে মহাকবি হোমারের সময়ে সালফার পুড়িয়ে প্রাপ্ত পদার্থ দ্বারা ঘরবাড়ি জীবাণুমুক্ত করা হতো। এই দহনের ফলে যে প্রকৃতপক্ষে সালফার ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হতো তা কিন্তু তারা জানতো না। এ হিসেবে সালফার তথা গন্ধক অনেক প্রাচীন। এমনকি প্রাচীনকাল থেকে গন্ধকের সঞ্চয়ের কথাও মানুষ জানতো। প্লিনি দ্য এল্‌ডার তার রচনায় ইতালি এবং সিসিলিতে গন্ধকের সঞ্চয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। তখনকার সময়ে গন্ধকের আরও কিছু ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে রঙ্জন বস্তু প্রস্তুতিতে, সুতোর উপর বিশেষ প্রলেপ তৈরীতে এবং আতসবাজীর কাজে। শেষোক্ত ব্যবহারটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। ধারণা করা হয় বাইজানটিয়াম অঞ্চলে খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতাব্দীতে গ্রীক-ফায়ার নামে একটি বস্তু উদ্ভাবিত হয় যা আতসবাজীতে ব্যবহৃত হতো। এর উপাদানের মধ্যে ছিল একভাগ চূর্ণীত গন্ধক, দুই ভাগ কয়লা এবং ৬ ভাগ সোরা। বর্তমানকালে যে ধোঁয়াসৃষ্টিকারী কৃষ্ণ বর্ণের বারুদ প্রস্তুত করা হয় তার সাথে সেই পদার্থের উপাদানের বিশেষ কোন পার্থক্য নেই।

মধ্যযুগেও গন্ধক ব্যবহারের একটি বিশেষ তাৎপর্য ছিল। কারণ এটি দাহ্য এবং যেকোন পদার্থের সাথে সহজেই যুক্ত হতে পারে। কিমিয়াবিদরা মনে করতেন গন্ধক একটি দাহ্য মৌল এবং সমস্ত ধাতুর মৌলিক উপাদান। অনেকে এর এমন ধর্মের কথা উল্লেখ করেছেন যা কখনই সম্ভব নয়। অবশ্য অনেক কিমিয়াবিদই আবার এর ধর্মের উপযুক্ত ব্যাখ্যা প্রদানে সমর্থ হয়েছিলেন। তবে এর প্রকৃত ব্যাখ্যা প্রদান সম্ভব হয় উনবিংশ শতাব্দীতে। এ সময় বিজ্ঞানী ল্যাভয়সিয়ের প্রথম নির্ধারণ করেন যে এটি মৌলিক পদার্থ। কিন্তু এর সঠিক গাঠনিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে সন্দেহ রয়েই গিয়েছিল। ১৮০৮ সালে বিজ্ঞানী এইচ. ডেভি পরীক্ষা করে দেখতে পান, সসাধারণ অবস্থায় সব গন্ধকের সাথেই সামান্য পরিমাণ অক্সিজেন এবং হাইড্রোজেন যুক্ত থাকে। এতে এর মৌলিকত্ব নিয়ে আবার প্রশন তোলা হয়। অবশেষে ১৮০৯ সালে গে-লুস্যাক নিঃসন্দেহে প্রমাণ করেন যে এটি মৌলিক। ডেভির সন্দেহের কারণ ছিল বিভিন্ন স্থানে প্রাপ্ত গন্ধকের মধ্যে অক্সিজেনের পরিমাণের পার্থক্য হতো। আধুনিক রসায়নের ভিত্তিতে বলা যায়, ডেভি গন্ধকের সাথে যে অক্সিজেন পেয়েছিলেন তা গন্ধকের অক্সাইড থেকে পাওয়া যায়নি, বরং তা তিনি পেয়েছিলেন ধাতব অক্সিসালফাইড যৌগ থেকে।

[সম্পাদনা] আরও দেখুন

[সম্পাদনা] বিজ্ঞানী

  • এন্টনি ল্যাভয়সিয়ের
  • এইচ ডেভি
  • গে লুসাক
  • প্লিনি দ্য এল্‌ডার
  • কিমিয়াবিদ
অন্যান্য ভাষা