তাজ মহল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

তাজ মহল
তাজ মহল
আগ্রা (India)
আগ্রা
আগ্রা
ভারতে তাজ মহলের অবস্থান

তাজ মহল (হিন্দি: ताज महल, উর্দু: تاج محل) ভারতের আগ্রায় অবস্থিত একটি রাজকীয় সমাধি। মুঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রী আরজুমান্দ বানু বেগম যিনি মুমতাজ মহল নামে পরিচিত তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই অপূর্ব সৌধটি নির্মাণ করেন।। সৌধটি নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দে যা সম্পূর্ণ হয়েছিল প্রায় ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে। সৌধটির নকশা কে করেছিলেন এ প্রশ্নে অনেক বিতর্ক থাকলেও, এ পরিষ্কার যে শিল্প-নৈপুন্য সম্পন্ন একদল নকশাকারক ও কারিগর সৌধটি নির্মাণ করেছিলেন যারা উস্তাদ আহমেদ লাহুরীর সাথে ছিলেন, যিনি তাজ মহলের মূল নকশাকারক হওয়ার প্রার্থীতায় এগিয়ে আছেন।[১]

তাজ মহলকে (কখনও শুধু তাজ নামে ডাকা হয়) মুঘল স্থাপত্যশৈলীর একটি আকর্ষণীয় নিদর্শন হিসেবে মনে করা হয়, যার নির্মাণশৈলীতে পারস্য, তুর্কী, ভারতীয় এবং ইসলামী স্থাপত্যেশিল্পের সম্মিলন ঘটানো হয়েছে। যদিও সাদা মার্বেলের গোম্বুজাকৃতি রাজকীয় সমাধীটিই বেশি সমাদৃত, তাজমহল আসলে সামগ্রিকভাবে একটি জটিল অখন্ড স্থাপত্য। এটি ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। তখন একে বলা হয়েছিল "universally admired masterpiece of the world's heritage।"[১]

সূচিপত্র

[সম্পাদনা] সূচনা ও প্রেরণা

শাহজাহান, যিনি তাজমহল নির্মাণ করিয়েছিলেন
শাহজাহান, যিনি তাজমহল নির্মাণ করিয়েছিলেন

১৬৩১ খ্রিস্টাব্দে শাহ জাহান, যিনি মুঘল আমলের সমৃদ্ধশালী সম্রাট ছিলেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রী মুমতাজ মহল এর মৃত্যুতে প্রচন্ড ভাবে শোকাহত হয়ে পড়েন। মুমতাজ মহল তখন তাদের চতুর্দশ কন্যা সন্তান গৌহর বেগমের জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন[২]

তাজ মহলের নির্মাণ কাজ মুমতাজের মৃত্যুর খুব শীগ্রই শুরু হয়। মূল সমাধিটি সম্পূর্ণ হয় ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে এবং এর চারদিকের ইমারত এবং বাগান আরও পাঁচ বছর পরে তৈরি হয়। ১৬৬৩ খ্রিস্টাব্দে আগ্রা ভ্রমন করে ফরাসি পর্যটক ফ্রান্সিস বেরনিয়ার (François Bernier) লিখছিলেন:I shall finish this letter with a description of the two wonderful mausoleums which constitute the chief superiority of Agra over Delhi. One was erected by Jehan-guyre [sic] in honor of his father Ekbar; and Chah-Jehan raised the other to the memory of his wife Tage Mehale, that extraordinary and celebrated beauty, of whom her husband was so enamoured it is said that he was constant to her during life, and at her death was so affected as nearly to follow her to the grave[৩]. বাংলা অনুবাদঃ দুটো বিস্ময়কর সমাধির বিবরণ দিয়ে আমি চিঠিটি শেষ করবো যারা আগ্রাকে দিল্লীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ করেছে। একটি নির্মাণ করেছেন সম্রাট জাহাঙ্গীর তাঁর পিতা আকবরের সম্মানে এবং অন্যটি সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রীর স্মরণে তৈরি করেছেন "তাজ মহল", যা অসাধারণ সৌন্দর্য্যের অধিকারী, স্বামী তাঁর স্ত্রীর শোকে এতই শোকার্ত যে স্ত্রী জীবনে যেমন তার সাথেই ছিলেন, মরণেও তিনি তার কবরের কাছেই থাকবেন।

১৫৬০ খ্রিস্টাব্দে তৈরি হুমায়ূনের মাজার দেখতে প্রায় তাজ মহলের মতন
১৫৬০ খ্রিস্টাব্দে তৈরি হুমায়ূনের মাজার দেখতে প্রায় তাজ মহলের মতন

[সম্পাদনা] প্রভাব

তাজ মহল তৈরি হয়েছে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী নকশার উপর, বিশেষ করে পারস্য ও মুঘল স্থাপত্য অনুসারে। নির্দিষ্ট কিছু নকশা তিমুর ও মুঘল ইমারতের মত হুবুহু করা হয়েছে। যাদের মধ্যে তিমুরের গুর-ই-আমির, সমরখন্দে মুঘল সম্রাজ্যের পূর্বসূরী,[৪] হুমায়ূনের মাজার, ইমাদ-উদ-দৌলার মাজার কখনো ডাকা হয় শিশু তাজ নামে), এবং দিল্লীতে শাহজাহানের নিজের তৈরি দিল্লী জামে মসজিদ। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায়, মুঘল ইমারত পরিমার্জনের এক নতুন স্তরে পৌছায়।[৫] যেখানে পূর্ববর্তী মুঘল ইমারতসমূহ তৈরি হয়েছিল লাল বেলে পাথরে, শাহজাহান চালু করেছিলেন সাদা দামি মার্বেল পাথরের প্রচলন।

[সম্পাদনা] বাগান

তাজমহলের সামনের চত্তরে একটি বড় চারবাগ (মুঘল বাগান পূর্বে চার অংশে বিভক্ত থাকতো) করা হয়েছিল। ৩০০ মিটার X ৩০০ মিটার জায়গার বাগানের প্রতি চতুর্থাংশ উচু পথ ব্যবহার করে ভাগ গুলোকে ১৬টি ফুলের বাগানে ভাগ করা হয়। মাজার অংশ এবং দরজার মাঝা মাঝি আংশে এবং বাগানের মধ্যখানে একটি উচু মার্বেল পাথরের পানির চৌবাচ্চা বসানো আছে এবং উত্তর দক্ষিণে একটি সরল রৈখিক চৌবাচ্চা আছে যাতে তাজ মহলের প্রতিফলন দেখা যায়। এছাড়া বাগানে আরও বেশ কিছু বৃক্ষশোভিত রাস্তা এবং ঝরনা আছে।[৬].

চারবাগ বাগান ভারতে প্রথম করেছিলেন প্রথম মুঘল সম্রাট বাবর, যা পারস্যের বাগানের মতন করে নকশা করা হয়েছিল। চারবাগ মানেই যাতে স্বর্গের বাগানের প্রতিফলন ঘটবে। মুঘল আমলের লেখায় এক ফারসি মরমিবাদী স্বর্গের বাগানের বর্ণনা দিয়েছিলেন আদর্শ বাগান হিসেবে, যাতে পূর্ণ থাকবে প্রাচুর্যে। পানি বা জল এই বর্ণনায় একটি বড় ভূমিকা রেখেছেঃ ঐ লেখায় আছে, স্বর্গের বাগানের মাধ্যখানে একটি পাহাড় থেকে তৈরি হয়েছে চারটি নদী, আর তা আলাদা হয়ে বয়ে গেছে বাগানের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমে।

রৈখিক চৌবাচ্চার পাশ দিয়ে হাটার রাস্তা
রৈখিক চৌবাচ্চার পাশ দিয়ে হাটার রাস্তা

প্রায় সব মুঘল চারবাগসমূহ চতুর্ভুজাকৃতির, যার বাগানের মধ্যখানে মাজার বা শিবির থাকে। কিন্তু তাজ মহল এ ব্যাপারটিতে অন্য গুলোর থেকে আলাদা কারণ এর মাজার অংশটি বাগানের মধ্যখানে হওয়ার বদলে বাগানের একপ্রান্তে অবস্থিত। কিন্তু যমুনা নদীর অপর প্রান্তে নতুন আবিষ্কৃত মাহতাব বাগ অন্যরকম তথ্যের আভাস দেয়, যমুনা নদীটি বাগানের নকশায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল যাতে তা স্বর্গের নদী হিসেবে অর্থবহ হয়।

বাগানের বিন্যাস এবং এর স্থাপত্যের বৈশিষ্ট যেমন এর ঝড়না, ইট অথবা মার্বেলের রাস্তা এবং জ্যামিতিক ইটের রেখার ফুলের বিছানা এগুলো হুবুহু সালিমার এর মতন এবং এই ক্রম নকশা করেছেন একই প্রকৌশলী, আলি মারদান।

পরবর্তীতে বাগানের গোলাপ, ডেফোডিল, বিভিন্ন ফলের গাছ সহ অন্যান্য গাছ গাছালির অতিপ্রাচুর্যের কথা জানা যায়। মুঘল সম্রাটদের উত্তরোত্তর অবক্ষয়ের সাথে সাথে বাগানেরও অবক্ষয় ঘটে। ইংরেজ শাসনামলে তাজ মহলের রক্ষণাবেক্ষণ এর দ্বায়িত্ব ইংরেজরা নেয়, তারা এ প্রাকৃতিক ভূ-দৃশ্যকে পরিবর্তন করে নতুন করে লন্ডনের আনুষ্ঠানিক বাগানের চেহারা দেয়।

[সম্পাদনা] অন্যান্য ইমারতসমূহ

তাজ মহলের প্রধান ফটক
তাজ মহলের প্রধান ফটক

তাজ মহল এর চত্তরটি বেলে পাথরের দূর্গের মত দেয়াল দিয়ে তিন দিক থেকে বেষ্টিত। নদীর দিকের পাশটিতে কোন দেয়াল নাই। এই দেয়াল বেষ্টনির বাইরে আরও সমাধি রয়েছে যার মধ্যে শাহজাহানের অন্য স্ত্রীদের সমাধি এবং মুমতাজের প্রিয় পরিচারিকাদের একটি বড় সমাধি রয়েছে। এই স্থাপত্য সমূহ প্রধানত লাল বেলে পাথর দ্বারা তৈরি, দেখতে সেসময়কার ছোট আকারের মুঘল সাধারণ সমাধির মতন।

ভিতরের দিকে (বাগান) দেয়ালগুলো স্তম্ব এবং ছাদ সম্বলিত। যা সাধারণত হিন্দু মন্দিরে দেখা যেত এবং পরে মুঘলদের মসজিদের নকশায় আনা হয়েছিল। দেয়াল গুলোয় বিচিত্র গোম্বুজাকৃতির ইমারত দিয়ে সংযুক্ত যা থেকে বেশ কিছ জায়গা নজরে আসে, যা পর্যবেক্ষণ চৌকি হিসেবে ব্যবহার করা হত যা বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাজ মহলে ডোকার প্রধান ফটক বা দরজাও তৈরি হয়েছে মার্বেল পাথরে। দরজাটির নকশা ও ধরণ মুঘল সম্রাটদের স্থাপত্যের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। এর খিলানসমূহের আকৃতি হুবুহু সমাধির খিলানসমূহের অনুরূপ এবং এর পিস্তাক খিলান সমাধির ক্যালিগ্রাফি বা চারুলিপির নকশার সাথে মিলিয়ে করা হয়েছে। এর ছাদে অন্যান্য বেলে পাথরের ইমারতের মতই নকশা করা আছে সুন্দর সুন্দর জ্যামিতিক আকৃতি।

জাওয়াবের ভিতরের নকশা
জাওয়াবের ভিতরের নকশা

চত্তরের একেবারে শেষে বেলেপাথরের দুটো বিশাল ইমারত রয়েছে যার সমাধির দিকের অংশ খোলা। এদের পিছন ভাগ পূর্ব ও পশ্চিম দিকের দেয়ালের সমান্তরাল।

তাজ মহল মসজিদ
তাজ মহল মসজিদ

দুটো ইমারত দেখতে একেবারে হুবুহু যেন একটা আরেকটির প্রতিচ্ছবি। পূর্ব দিকের ইমারতটি মসজিদ, অন্যটি হল জাওয়াব (উত্তর), যার মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারসাম্য রক্ষা করা (যা মুঘল আমলে মেহমানদের থাকার জন্য ব্যবহৃত হত)। জাওয়াব আলাদা শুধু এর মেহরাম নেই আর এর মেঝে নকশা করা যেখানে মসজিদের মেঝে ৫৬৯ জন্য মুসল্লি নামাজ পড়ার জন্য কাল পাথর দিয়ে দাগ কাটা।

মসজিদটির প্রাথমিক নকশা শাহজাহানের তৈরি অন্যান্য ইমারতের মতই, বিশেষ করে তার মসজিদ-ই-জাহান্নুমা অথবা দিল্লী জামে মসজিদ- একটি বড় ঘর যার উপর তিনটি গম্বুজ। মুঘল আমলের মসজিদগুলোর নামাজ পড়ার জায়গা তিন ভাগে ভাগ করা থাকতোঃ বড় নামাজ পড়ার জায়গা এর দু'পাশে সামান্য ছোট নামাজ পড়ার জায়গা। তাজ মহলের প্রত্যেকটি নামাজ পড়ার জায়গায় উপরে বিশাল গম্বুজ আছে কিন্তু জায়গাটি খোলা।

ইমারতটির নির্মান সম্পূর্ণ হয়েছিল ১৬৪৩ খ্রিস্টাব্দে।

[সম্পাদনা] সমাধি

[সম্পাদনা] ভিত্তি

তাজ মহলের মেঝের পরিকল্পনা।
তাজ মহলের মেঝের পরিকল্পনা।
প্রধান আইওয়ান এবং পার্শ্ব পিস্তাক
প্রধান আইওয়ান এবং পার্শ্ব পিস্তাক

তাজ মহলের মূলে হল তার সাদা মার্বেল পাথরের সমাধি। যা অন্যান্য মুঘল সমাধির মত মূলত পারস্যদেশীয় বৈশিষ্ট, যেমন আইওয়ান সহ প্রতিসম ইমারত, একটি ধনুক আকৃতির দরজা, উপরে বড় গম্বুজ রয়েছে। সমাধিটি একটি বর্গাকার বেদিকার উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। ভিত্তি কাঠামোটি বিশাল এবং কয়েক কক্ষ বিশিষ্ট। প্রধান কক্ষটিতে মুমতাজ মহল ও শাহজাহানের স্মৃতিফলক বসানো হয়েছে, তাদের কবর রয়েছে এক স্তর নিচে।

ভিত্তিটি আদতে একটি কোণ গুলো ভাঙ্গা ঘনক্ষেত্র, প্রতিদিকে প্রায় ৫৫ মিটার (ডানে, মেঝের পরিকল্পনা দেখুন)। লম্বা পাশে একটি বড় পিস্তাক, অথবা বড় ধনুক আকৃতির পথ, আইওয়ানের কাঠামো, সাথে উপরে একই রকমের ধনুক আকৃতির বারান্দা। এই প্রধান ধনুক আকৃতির তোরণ বৃদ্ধি পেয়ে উপরে ইমারতের ছাদের সাথে যুক্ত হয়ে সম্মখভাগ তৈরি করেছে। তোরণের অপর দিকে, বাড়তি পিস্তালসমূহ উপরে পিছনের দিকে চলে গেছে, পিস্তাকের এই বৈশিষ্টটি কোণার দিকে জায়গায় একই ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। নকশাটি সম্পূর্ণভাবে প্রতিসম এবং ইমারতের প্রতিটি দিকেই একই রকম। চারটি মিনার রয়েছে, ভিত্তির প্রতিটি কোণায় একটি করে মিনার, ভাঙ্গা কোণার দিকে মুখ করে রয়েছে।

রাতের তাজমহল তার প্রতিসাম্যতা এবং সাদৃশ্য দেখানো হয়েছে
রাতের তাজমহল তার প্রতিসাম্যতা এবং সাদৃশ্য দেখানো হয়েছে

[সম্পাদনা] গম্বুজ

ভিত্তি, গম্বুজ এবং মিনার
ভিত্তি, গম্বুজ এবং মিনার

সমাধির উপরের মার্বেল পাথরের গম্বুজই সমাধির সবচেয়ে আকর্ষনীয় বৈশিষ্ট। এর আকার প্রায় ইমারতের ভিত্তির আকারের সমান, যা প্রায় ৩৫ মিটার। এর উচ্চতা হওয়ার কারণ গম্বুজটি একটি ৭ মিটার উচ্চতার সিলিন্ডার আকৃতির ড্রাম এর উপরে বসানো।

এর আকৃতির কারণে, এই গম্বুজকে কখনো পেয়াজ গম্বুজ অথবা পেয়ারা গম্বুজ বলেও ডাকা হয়। গম্বুজের উপরের দিক সাজানো হয়েছে একটি পদ্মফুল দিয়ে, যা তার উচ্চতাকে আরও দৃষ্টি গোচড় করে। গম্বুজের উপরে একটি পুরনো সম্ভবত তামা বা কাসার দন্ড রয়েছে যাতে পারস্যদেশীয় ও হিন্দু ঐতিহ্যবাহী অলঙ্করণ রয়েছে।

গম্বুজের উপর সাজানো দন্ড
গম্বুজের উপর সাজানো দন্ড

বড় গম্বুজটির গুরুত্বের কারণ এর চার কোণায় আরও চারটি ছোট গম্বুজ রয়েছে। ছোট গম্বুজগুলোও দেখতে বড় গম্বুজটির মতই। এদের স্তম্ভগুলো সমাধির ভিত্তি থেকে ছাদ পর্যন্ত উঠে গেছে। ছোট গম্বুজগুলোতেও কাসা বা তামার পুরনো দন্ড আছে।

লম্বা মোচাকার চূড়া বা গুলদাস্তা ভিত্তি দেয়ালের পাশ দিয়ে উপরে উঠেছ এবং গম্বুজের উচ্চতায় দৃষ্টগোচড় হয়।

পদ্মফুল ছোট গম্বুজ ও গুলদাস্তাতেও রয়েছে।

[সম্পাদনা] চূড়া

বড় গম্বুজের উপর মুকুটের মত একটি পুরনো মোচাকার চূড়া রয়েছে। চূড়াটি ১৮০০ শতকের আগে স্বর্ণের নির্মিত ছিল, কিন্তু বর্তমানে এটি ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি। এই চূড়াটিই পারস্য দেশীয় এবং হিন্দুদের শোভাবর্ধক উপাদানের মিলনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। চূড়া উপরের আংশে আছে একটি চাঁদ, যা ইসলামিক উপাদান, এবং চূড়ার শিং তাঁক করা আছে স্বর্গ বা বেহেস্তের দিকে। বড় গম্বুজের উপর চূড়ার চাঁদ এবং তাঁক করা শিং মিলে একটি ঐতিহ্যবাহী চিহ্নের আকার ধারণ করে, যা হিন্দু দেবতা শিব এর চিহ্নের মত।

[সম্পাদনা] মিনার

মিনারগুলোর মূল বেদিকার কোণাগুলোতে রয়েছে- চারটি বড় চৌকি যাদের প্রতিটির উচ্চতা ৪০ মিটারেরও বেশি। মিনারগুলোতেও তাজ মহলের প্রতিসমতার ব্যাপারটিই লক্ষ করা যায়।

চৌকিগুলো নকশা করা হয়েছে মসজিদের প্রথাগত মিনারের নকশায়, যেখানে মুয়াজ্জিন নামাজের জন্য আযান দেন। প্রতিটি মিনারেরই দুইটি বারান্দা দিয়ে তিনটি সমান উচ্চতায় ভাগ করা হয়েছে। মিনারের একেবারে উপরে শেষ বারান্দা রয়েছে যার উপরে সমাধির ছাতাগুলোর একই রকম একটি ছাতা রয়েছে।

মিনারের ছাতাগুলোতেও একই রকমের কাজ করা হয়েছে যেমনটি করা হয়েছে পদ্মফুলের নকশা করা চূড়াতে। প্রতিটি মিনারই বেদিকার থেকে বাইরের দিকে কিঞ্চিৎ হেলানো আছে যাতে এ মিনার কখনও ভেঙ্গে পড়লেও যেন তা মূল সমাধির উপরে না পড়ে।

[সম্পাদনা] অলঙ্করণ

[সম্পাদনা] পাথরের খোদাই

(সূক্ষ কারিগরি ভাল দেখা যাবে ছবির বড় সংস্করণে -- বড় করে দেখার জন্য ছবিতে ক্লিক করুন)

[সম্পাদনা] নির্মাণ

তাজ মহলের মেঝের বিন্যাস
তাজ মহলের মেঝের বিন্যাস

তাজ মহল দেয়াল ঘেরা আগ্রা শহরের দক্ষিণ অংশের একটি জমিতে তৈরি করা হয়েছিল যার মালিক ছিলেন মহারাজা জয় শিং। শাহজাহান তাকে আগ্রার মধ্যখানে একটি বিশাল প্রাসাদ দেওয়ার বদলে জমিটি নেন।[৭] তাজ মহলের কাজ শুরু হয় সমাধির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে। প্রায় ৩ একর জায়গাকে খনন করে তাতে আলগা মাটি ফেলায় হয় নদীর ক্ষরণ কমানোর জন্য। সম্পূর্ণ এলাকাকে নদীর পাড় থেকে প্রায় ৫০ মিটার উঁচু করা সমান করা হয়। তাজ মহল ৫৫ মিটার লম্বা। সমাধিটি নিজে ব্যাসে ১৮ মিটার এবং উচ্চতায় ২৪ মিটার।

আগ্রার কেল্লা থেকে তাজ মহল দেখা যাচ্ছে
আগ্রার কেল্লা থেকে তাজ মহল দেখা যাচ্ছে

সমাধি এলাকায় যেখানে পানি চলে আসে সেখানে পরে কুয়া খনন করা হয়েছিল। যা পরে পাথর ফেলে ভরাট করা হয়েছিল , যা ছিল সমাধি ভিত্তিস্থাপন। [একই গভীরতায় আরও একটি কুয়া খনন করা হয়েছিল সময়ের সাথে সাথে পানির স্তর পরিমাপ করার জন্য।]

বাধা বাঁশ এর বদলে রাজমিস্ত্রিরা তাদের সাধারণ ভারা বাধার নিয়মে সমাধির ভেতরে এবং বাইরে একই রকম ইটের ভারা তৈরি করেন। ভারা এত বড় এবং জটিল ছিল যে তা শ্রমিকদের খুলে সরাতে প্রায় বছর লাগার কথা। উপাখ্যান অনুযায়ী, শাহজাহান ঘোষনা দিয়েছিলেন যে কেউ ভারার ইট নিয়ে যেতে পারবে, এবং একরাতের মধ্যে কৃষক, দিনমজুর, চাষীরা ভারাটি সরিয়ে নিয়েছিল।

পনের কিলোমিটারের একটি ঢালু পথ তৈরি করা হয়েছিল নির্মানের জন্য নির্দিষ্ট স্থানে মার্বেল পাথর ও অন্যান্য মালপত্র নেওয়ার জন্য। সমসাময়িক উৎস থেকে জানা যায় ২০ ও ৩০টি করে ষাড় একসাথে বেধে বিশেষ ধরণের গরুর গাড়ীতে করে পাথর ঊঠানো হত।

পাথর উঠিয়ে ঠিক উচ্চতায় বসাতে কপিকল ব্যবহার করা হত। গাধা এবং ষাঁড়ের দল কপিকল নাড়াতে শক্তির যোগান দিতো।

নির্মাণকাজের ক্রম ছিল এরকম

  • ভিত্তি
  • সমাধি
  • চারটি মিনার
  • মসজিদ এবং জাওয়াব
  • প্রবেশ দরজা

ভিত্তি আর সমাধি নির্মাণ করতে সময় লেগেছিল প্রায় ১২ বছর। পুরো এলাকার বাকি অংশগুলো নির্মাণ করতে লেগেছিল আরও ১০ বছর। (যেহেতু চত্তর এলাকাটি কয়েকটি ভাগে নির্মিত হয়েছিল তাই তৎকালী ইতিহাস লেখকগণ নির্মাণ শেষের বিভিন্ন তারিখ উল্লেখ করেন। যেমন সমাধিটির কাজ শেষ হয়েছিল ১৬৪৩ খ্রিস্টাব্দে, কিন্তু বাকি অংশগুলোর কাজ তখনও চলছিল।)

[সম্পাদনা] জল সঞ্চালন অবকাঠামো

তাজ মহলের জন্য পানি বা জল সরবরাহ করা হত একটি জটিল অবকাঠামোর মাধ্যমে। পানি নদী থেকে উঠানো হতো কয়েকটি পুর দিয়ে- দড়ি ও বালটির মাধ্যমে পানি পশু দ্বারা টেনে তোলার এক পদ্ধতি। পানি একটি বড় চৌবাচ্চায় জমা হত, যা আরও আরও ৩০টি পুর দিয়ে উঠিয়ে তাজমহলের মাটির নিচের সরবরাহ চৌবাচ্চায় দেওয়া হতো।

সরবরাহ চৌবাচ্চায় থেকে পানি পৌছত আরও তিনটি সহায়ক চৌবাচ্চায়, যা থেকে তাজমহল এলাকায় পাইপ দ্বারা সংযুক্ত ছিল। একটি .২৫ মাটির তৈরি পাইপ প্রায় ১.৫ মিটার মাটির নিচ দিয়ে প্রধান চলার পথ বরাবর নেওয়া হয়েছে। যা চত্তরের মূল চৌবাচ্চাটি পূরণ করে। আরও তামার পাইপ দিয়ে উত্তর দক্ষিণ দিকে নালার ঝড়নাগুলোতে পানি সরবরাহ করা হতো। সহায়ক আরও নালা খনন করা হয়েছিল পুরো বাগানে সেচ দেওয়ার জন্য।

ঝরনার পাইপগুলো সরাসরি সরবরাহ পাইপের সাথে যুক্ত ছিল না। এর বদলে, প্রতিটি ঝড়নার নিচে একটি করে তামার পাত্র বসানো হয়েছিল। পানিতে প্রথম পাত্রগুলোতে ভরাট হত যাতে প্রতিটি ঝরনায় সমান পানি চাপ প্রয়োগ করা যায়।

পুরগুলো এখন আর অবশিস্ট নেই, কিন্তু অবকাঠামোর অন্যান্য অংশ এখনো আগের মতই আছে।

[সম্পাদনা] কারিগর

তাজ মহল কোন একজন ব্যক্তির দ্বারা নকশা করা নয়। এ ধরণের প্রকল্পে অনেক প্রতিভাধর লোকের প্রয়োজন।

বিভিন্ন উৎস থেকে তাজ মহল নির্মাণ কাজে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের বিভিন্ন নাম পাওয়া যায়।

  • পারস্যদেশীয় স্থপতি, ওস্তাদ ঈসা; চত্তরের নকশা করার বিশেষ ভূমিকায় অনেক স্থানেই তার নাম পাওয়া যায়।
  • পারস্য দেশের (ইরান) বেনারসের 'পুরু'; ফারসি ভাষার এক লেখায় (দেখুন ISBN 964-7483-39-2) তাকে তত্ত্ববধায়ক স্থপতি হিসেবে উল্লেখ করেছে।
  • বড় গম্বুজটির নকশা করেছিলেন ওত্তোমান সম্রাজ্য থেকে আসা ইসমাইল খাঁন,[৮]যাকে গোলার্ধের প্রথম নকশাকারী এবং সে যুগের একজন প্রধান গম্বুজ নির্মাতা মনে করা হয়।
  • কাজিম খাঁন, লাহোরের বাসিন্দা, বড় গম্বুজের চূড়ায় যে স্বর্ণের দন্ডটি ছিল, তিনি তা গড়েছিলেন।
  • চিরঞ্জিলাল, একজন পাথর খোদাইকারক যিনি দিল্লী থেকে এসেছিলেন; প্রধান ভাস্কর ও মোজাইকারক হিসেবে নেওয়া হয়েছিল।
  • পারস্যের (সিরাজ, ইরান) আমানত খাঁন, যিনি প্রধান চারুলিপিকর (তার নাম তাজ মহলের প্রবেশপথের দরজায় প্রত্যায়িত করা আছে, সেখানে তার নাম পাথরে খোদাই করে লেখা আছে)
  • মোহাম্মদ হানিফ রাজমিস্ত্রিদের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন।
  • সিরাজ, ইরান থেকে মীর আব্দুল করিম এবং মুক্কারিমাত খাঁন, যারা ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক দিকগুলো সামাল দিতেন।

[সম্পাদনা] মালামাল সামগ্রী ও উপাদান

তাজ মহল তৈরি হয়েছে সাড়া এশিয়া এবং ভারত থেকে আনা বিভিন্ন উপাদান সামগ্রী দিয়ে। নির্মাণ কাজ্রে সময় ১,০০০ এর ও বেশি হাতি ব্যবহার করা হয়েছিল নির্মাণ সামগ্রী বহন করে আনার জন্য। আলো-প্রবাহী অস্বচ্ছ সাধা মার্বেল পাথর আনা হয়েছিল রাজস্থান থেকে, ইয়াশ্‌ব্‌- লাল, হলুদ বা বাদামী রঙের মধ্যম মানের পাথর আনা হয়েছেল পাঞ্জাব থেকে। চীন থেকে আনা হয়েছিল ইয়াশ্‌ম্‌- কঠিন, সাধা, সবুজ পাথর, স্ফটিক টুকরা। তিব্বত থেকে বৈদূর্য সবুজ-নীলাভ (ফিরোজা) রঙের রত্ন এবং আফগানিস্তান থেকে নীলকান্তমণি আনা হয়েছিল। নীলমণি- উজ্জ্বল নীল রত্ন এসেছিল শ্রীলঙ্কা এবং রক্তিমাভাব, খয়রি বা সাধা রঙের মূল্যবান পাথর এসেছিল আরব থেকে। এ ধরণের আটাশ ধরনের মূল্যবাদ এবং মহামূল্যবান পাথর সাদা মার্বেল পাথরেরে উপর বসানো রয়েছে।

[সম্পাদনা] খরচ

তৎকালীন নির্মাণ খরচ অনুমান করা কঠিন ও কিছু সমস্যার কারণে তাজ মহল নির্মাণে কত খরচ হয়েছিল তার হিসাবে কিছুটা হেরফের দেখা যায়। তাজ মহল নির্মাণে তৎকালীন আনুমানিক ৩২মিলিয়ন রুপি খরচ হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।[৯] কিন্তু শ্রমিকের খরচ, নির্মাণে যে সময় লেগেছে এবং ভিন্ন অর্থনৈতিক যুগের কারণে এর মূল্য অনেক, একে অমূল্য বলা হয়।

[সম্পাদনা] ইতিহাস

তাজ মহলের নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই শাহ জাহান তাঁর পুত্র আওরঙ্গজেব দ্বারা ক্ষমতা চ্যুত ও আগ্রার কেল্লায় গৃহবন্দী হন। কথিত আছে জীবনের বাকী সময়টুকু শাহ জাহান আগ্রার কেল্লার জানালা দিয়ে তাজ মহলের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়েই কাটিয়েছিলেন। শাহ জাহানের মৃত্যুর পর আওরঙ্গজেব তাঁকে তাজ মহলে তাঁর স্ত্রীর পাশে সমাহিত করেন। একমাত্র এ ব্যপারটিই তাজ মহলের নকশার প্রতিসমতা নষ্ট করেছে। ১৯ শতকের শেষ ভাগে তাজ মহলের একটি অংশ মেরামতের অভাবে খুব খারাপ ভাবে নষ্ট হয়। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের সময় ইংরেজ সৈন্যরা তাজ মহলের বিকৃতি সাধন করে আর সরকারী কর্মচারীরা বাটালি দিয়ে তাজ মহলের দেয়াল থেকে মূল্যবাদ ও দামী নীলকান্তমণি খুলে নেয়।

যুদ্ধের সময় রক্ষাকারী ভারা
যুদ্ধের সময় রক্ষাকারী ভারা

১৯ শতকের শেষ দিকে লর্ড কার্জন তাজ মহল পুননির্মাণের একটি বড় প্রকল্প হাতে নেন। প্রকল্পের কাজ ১৯০৮ সালে শেষ হয়। তিনি তাজ মহলের ভিতরের মঞ্চে একটি বড় বাতি (যা কায়রো মসজিদে ঝুলানো একটি বাতির অনুকরণে তৈরি করার কথা ছিল কিন্তু তৎকালীন কারিগরেরা ঠিক হুবুহু তৈরি করতে পারেনি ) বসিয়েছিলেন। তখনই বাগানের নকশা পরিবর্তন করে ইংরেজ পার্কের মত করে গড়া হয় যা এখনও রয়েছে।

বিংশ শতাব্দিতে তাজ মহলের ভাল রক্ষণাবেক্ষণ হয়। ১৯৪২ সালে যখন জার্মান বিমান বাহিনী এবং পরে জাপানি বিমান বাহিনী দ্বারা আকাশপথে হামলা চালায় তৎকালীন সরকার তখন তাজ মহল রক্ষার জন্য এর উপর একটি ভারা তৈরি করেছিল (ছবি দেখুন)। ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধের সময় তাজ মহলকে ভারা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল যাতে বিমান চালকদের ভ্রম তৈরি করে।

তাজ মহল সাম্প্রতি যে হুমকির মুখে পরেছে তা হল যমুনা নদীর তীরের পরিবেশ দূষণ। সাথে আছে মাথুরাতে তেল পরিশোধনাগারের কারণে সৃষ্ট এসিড বৃষ্টি (যা ভারতী উচ্চ আদালত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে)।

১৯৮৩ সালে তাজ মহল ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।

[সম্পাদনা] পর্যটনকেন্দ্র

তাজ মহলের নির্মাণের পর থেকেই তাজ মহল বহু পর্যটককে আকর্ষিত করেছে। এমনকি তাজ মহলের দক্ষিণ পাশে ছোট শহর তাজ গঞ্জি বা মুমতাজাবাদ আসলে গড়ে তোলা হয়েছিল পর্যটকদের জন্য সরাইখানা ও বাজার তৈরির উদ্দেশ্যে যাতে পর্যটক এবং কারিগরদের চাহিদা পূরণ হয়।[১০]

বর্তমানে, তাজ মহলে ২ থেকে ৩ মিলিয়ন পর্যটক আসে যার মধ্যে ২,০০,০০০ পর্যটক বিদেশী, যা ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসে ঠান্ডা মৌসুমে অক্টোবর, নভেম্বর ও ফেব্রুয়ারি মাসে। বায়ূ দূষণকারী যানবাহন তাজ মহলের কাছে আসা নিষিদ্ধ তাই পর্যটকদের গাড়ী রাখার স্থান থেকে পায়ে হেঁটে অথবা বৈদুতিক বাসে করে তাজ মহলে আসতে হয়। খাওয়াসপুরা গুলো পর্যটকদের জন্য পুনরায় চালু করা হয়েছে।[১১][১২][১৩]

[সম্পাদনা] রূপকথা

[সম্পাদনা] তথ্যসূত্র

  1. ১.০ ১.১ UNESCO advisory body evaluation
  2. http://www.pbs.org/treasuresoftheworld/a_nav/taj_nav/main_tajfrm.html
  3. François Bernier "Letter to Monsieur de la Mothe le Vayer. Written at Dehli [sic] the first of July 1663" Travels in the Moghul Empire A.D. 1657-1668 (Westminster: Archibald Constable & Co.) 1891 p293
  4. Chaghtai Le Tadj Mahal p146
  5. Copplestone, p.166
  6. http://www.taj-mahal-travel-tours.com/garden-of-taj-mahal.html
  7. Chaghtai Le Tadj Mahal p54; Lahawri Badshah Namah Vol.1 p403
  8. [http://www.pbs.org/treasuresoftheworld/taj_mahal/tlevel_2/t3build_design.htm l Who designed the Taj Mahal]
  9. Dr. A. Zahoor and Dr. Z. Haq
  10. Koch, p.201-208
  11. Koch, p.120
  12. Koch, p.254

[সম্পাদনা] আরও জানতে

  • Asher, Catherine B. Architecture of Mughal India New Cambridge History of India I.4 (Cambridge University Press) 1992 ISBN 0-521-26728-5
  • Bernier, Françoi' Travels in the Moghul Empire A.D. 1657-1668 (Westminster: Archibald Constable & Co.) 1891
  • Carroll, David (1971). The Taj Mahal, Newsweek Books ISBN 0-88225-024-8
  • Chaghtai, Muhammad Abdullah Le Tadj Mahal d'Agra (Inde). Histoire et description (Brussells: Editions de la Connaissance) 1938
  • Copplestone, Trewin. (ed). (1963). World architecture - An illustrated history. Hamlyn, London.
  • Gascoigne, Bamber (1971). The Great Moguls, Harper & Row
  • Havel, E.B. (1913). Indian Architecture: Its Psychology, Structure and History, John Murray
  • Kambo, Muhammad Salih Amal-i-Salih or Shah Jahan Namah Ed. Ghulam Yazdani (Calcutta: Baptist Mission Press) Vol.I 1923. Vol. II 1927
  • Koch, Ebba [Aug 2006]. The Complete Taj Mahal: And the Riverfront Gardens of Agra (Paperback), First (in English), Thames & Hudson Ltd. ISBN 0500342091, 288 pages.
  • Lahawri, 'Abd al-Hamid Badshah Namah Ed. Maulawis Kabir al-Din Ahmad and 'Abd al-Rahim under the superintendence of Major W.N. Lees. (Calcutta: College Press) Vol. I 1867 Vol. II 1868
  • Lall, John (1992). Taj Mahal, Tiger International Press
  • Rothfarb, Ed (1998). In the Land of the Taj Mahal, Henry Holt ISBN 0-8050-5299-2
  • Saksena, Banarsi Prasad History of Shahjahan of Dihli (Allahabad: The Indian Press Ltd.) 1932
  • Stall, B (1995). Agra and Fathepur Sikri, Millennium
  • Stierlin, Henri [editor] & Volwahsen, Andreas (1990). Architecture of the World: Islamic India, Taschen
  • Tillitson, G.H.R. (1990). Architectural Guide to Mughal India, Chronicle Books

[সম্পাদনা] বহিঃসংযোগ

Template:World Heritage Sites in India

স্থানাঙ্ক: 27°10′30″N, 78°02′32″E