গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি উচ্চ বিদ্যালয় ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় ঢাকা শিক্ষক প্রশিক্ষন মহাবিদ্যালয় (Dhaka Teacher's Training College) এবং ঢাকা কলেজের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] ইতিহাস
গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর। এর প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক ছিলেন জনাব খান মুহাম্মদ সালেক। স্কুলটি প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রশিক্ষনরত শিক্ষার্থীদের প্র্যকটিস টিচিং এর সুযোগ প্রদান করা। 'ল্যাবরেটরি স্কুল' নামকরণ সেই উদ্দেশ্যেরই প্রকাশবহ। ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ জনাব মুহম্মদ ওসমান গনির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় স্কুলটি স্থাপিত হয়েছিল। প্রতিষ্ঠার পর প্রধান শিক্ষকসহ ১৪ জন শিক্ষককে নিয়ে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রদের ক্লাস শুরু হয়।
[সম্পাদনা] আদর্শ ও মনোগ্রাম
'নুরুন আলা নুর' পবিত্র কুরানের এই অমর বাণীকে বিদ্যালয়ের আদর্শহিসেবে গ্রহন করা হয়েছে। এর বাংলা তরজমা 'আলো আরো আলো' স্কুলের মনোগ্রাম হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন চিত্রকর মরহুম জয়নুল আবেদিন এই অসাধারণ মনোগ্রামটির পরিকল্পনা করে দিয়েছিলেন।
[সম্পাদনা] বিদ্যালয় প্রাঙ্গন
গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা প্রাঙ্গণ
![]()
বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার
|
[সম্পাদনা] প্রবেশ পথ
বিদ্যালের প্রধান প্রবেশ পথ এর উত্তর প্রান্তে, ঢাকা কলেজের বিপরীত দিকে অবস্থিত। এছাড়া এর দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তে কলেজ রোড থেকে প্রবেশের জন্য আরেকটি রাস্তা আছে।
[সম্পাদনা] বিদ্যালয়ের ভবনসমূহ
বিদ্যালয়ের প্রধান একাডেমিক ভবন মাঠের উত্তর পাশে অবস্থিত। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী এটি ছিল ইংরেজী "L" (এল) আকৃতির একটি দ্বিতল ভবন। পরবর্তীতে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ছাত্রদের স্থান সংকুলানের জন্য এর দোতালার কিছু অংশ বর্ধিত করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ের অফিসসমূহ, পরীক্ষাগারগুলো এবং কিছু শ্রেণীকক্ষ এই ভবনে অবস্থিত।
পরবর্তীতে ২০০৩ সালে একটি অডিটোরিয়াম এবং নতুন আরেকটি ৫-তলা ভবন নির্মিত হয়েছে। ২০০৩ সালের ২০ মার্চ আডিটোরিয়াম এবং একাডেমিক ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ড. এম. ওসমান ফারুক।
[সম্পাদনা] মাঠ
গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি অন্যতম অনুষঙ্গ এর কেন্দ্রীয় মাঠ। আয়তকার এই মাঠটির ক্ষেত্রফল প্রায় দেড় লক্ষ বর্গফুট যা বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে প্রধান ভবনের সামনে অবস্থিত। বিদ্যালয়ের প্রাত্যহিক সমাবেশ, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সহ বিভিন্ন বাৎসরিক অনুষ্ঠান এই মাঠে আয়োজন করা হয়। মাঠের পশ্চিম প্রান্তে বিদ্যালয় মিলনায়তন এবং পূর্ব প্রান্তে অপর একাডেমিক ভবনটি অবস্থিত। মাঠের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে ফুটবল খেলার জন্য গোলপোস্ট, কেন্দ্রে একটি ক্রিকেট পীচ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে একটি ভলিবল কোর্ট ও নির্মান স্কুল ক্রিকেটের জন্য একটি প্র্যাকটিস ক্রিকেট পীচ রয়েছে।
[সম্পাদনা] পরীক্ষাগার, লাইব্রেরি এবং মসজিদ
বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রদের জন্য একটি করে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান ও জীব বিজ্ঞান পরীক্ষাগার রয়েছে। এছাড়া বিজ্ঞান ও ব্যাবসায় শিক্ষা উভয় বিভাগের জন্য রয়েছে একটি কম্পিউটার পরীক্ষাগার। বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে ২০০২ সালে কম্পিউটার শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত হবার সময় থেকে এই পরীক্ষাগারটি চালু হয়।বিদ্যালয়ে রয়েছে একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরী যার বইয়ের সংখ্যা সাত হাজারের অধিক। এছাড়া বিদ্যালয়ে চার শতাধিক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি নামাজ ঘর রয়েছে।
[সম্পাদনা] শহীদ মিনার
গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারটির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী জনাব মোঃ শাহাবুদ্দিন। ২০০১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী মধ্যরাতে উদ্বোধনের পর একুশে ফেব্রুয়ারীর প্রথম প্রহরে তিনি ভাষা শহীদদের উদ্দেশ্যে এই শহীদ মিনারে প্রথম শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করেন। শহীদ মিনারটির নকশা করা হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে। বিদ্যালয়ের প্রধান প্রবেশ পথ দুইটির মাঝে শহীদ মিনারটি অবস্থিত। প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের (একুশে ফেব্রুয়ারী) প্রথম প্রহরে এখানে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করা হয় এবং একুশে ফেব্রুয়ারী সারাদিন ব্যপী আবৃত্তি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা সহ বিভিন্ন সাংষ্কৃতিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।