বগাকাইন হ্রদ
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বগাকাইন হ্রদ (বগা হ্রদ নামেও পরিচিত) পার্বত্য জেলা বান্দরবানের একমাত্র প্রাকৃতিক হ্রদ। স্থানীয় লোকজন একে বগা লেক নামে ডাকে।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] অবস্থান
রুমা উপজেলার পূর্ব দিকে শঙ্খ নদীর তীর থেকে ২৯ কিলোমিটার অভ্যন্তরে অবস্থিত একটি মৌজার নাম নাইতং মৌজা। এই মৌজার পলিতাই পর্বতশ্রেণীর অন্তর্গত একটি পাহাড়ের চূড়ায় হ্রদটি অবস্থিত।
[সম্পাদনা] উৎপত্তি ও গঠন
বাংলাদেশের ভূ-তত্ত্ববিদগণের মতে বগাকাইন হ্রদ মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ কিংবা মহাশূন্য থেকে উল্কাপিণ্ডের পতনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে আবার ভূমিধ্বসের কারণেও এটি সৃষ্টি হতে পারে বলে মত প্রকাশশ করেছেন। এটি ভুবন স্তরসমষ্টির (Bhuban Foundation) নরম শিলা দ্বারা গঠিত। এর পানি বেশ অম্লধর্মী। এ কারণে এতে কোন শ্যাওলা বা অন্যান্য জলজ উদ্ভিদ নেই। কোন জলজ প্রাণীও এখানে বাঁচতে পারেনা।
[সম্পাদনা] সাধারণ বর্ণনা
এই হ্রদটি তিনদিক থেকে পর্বতশৃঙ্গ দ্বারা বেষ্টিত। এই শৃঙ্গগুলো আবার সর্বোচ্চ ৪৬ মিটার উঁচু বাঁশঝাড়ে আবৃত। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৫৭ মিটার ও ৬১০ মিটার উচ্চতার মধ্যবর্তী অবস্থানের একটি মালভূমিতে অবস্থিত। এর গভীরতা হচ্ছে ৩৮ মিটার। এটি সম্পূর্ণ আবদ্ধ হ্রদ; এ থেকে পানি বের হতে পারে না এবং কোন পানি ঢুকতেও পারেনা। এর আশেপাশে পানির কোন উৎসও নেই। তবে হ্রদ যে উচ্চতায় অবস্থিত তা থেকে ১৫৩ মিটার নিচে একটি ছোট ঝর্ণার উৎস আছে যা বগাছড়া নামে পরিচিত। হ্রদের পানি কখনও পরিষ্কার আবার কখনও বা ঘোলাটে হয়ে যায়। কারণ হিসেবে মনে করেন এর তলদেশে একটি উষ্ণ প্রস্রবণ রয়েছে। এই প্রস্রবণ থেকে পানি বের হওয়ার সময় হ্রদের পানির রঙ বদলে যায়।
[সম্পাদনা] সংস্কার ও পর্যটন
স্থানীয় অধিবাসীদের ধারণা এই হ্রদের আশেপাশে দেবতারা বাস করে। এজন্য তারা এখানে পূজা দেয়। তবে হ্রদটি দৃষ্টিনন্দন বলে পর্যটকরা অনেকেই দর্শনের লোভ সামলাতে পারেননা। অবশ্য কিওক্রাডাং যাবার পথে এই হ্রদ দেখে যেতে পারেন অনেকেই। তবে এখানকার যাতায়াত ব্যবস্থা বেশ দুর্গম। পায়ে হাঁটা ছাড়া গত্যন্তর নেই, তাও আবার দুর্গম পথ।
[সম্পাদনা] তথ্যসূত্র
- বগাকাইন হ্রদ: বাংলাপিডিয়া নিবন্ধ - এস. এম. মাহফুজুর রহমান এবং সিফাতুল কাদের চৌধুরী।