বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত টেকনাফ থেকে কক্সবাজারে ১০০ কিঃমিঃ হাঁটাযোগ
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
এ্যাকটিভেট বাংলাদেশের উদ্যেগে বাংলাদেশে অবস্থিত (টেকনাফ থেকে কক্সবাজার) বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত হাঁটাযোগ আয়োজন করা হয়েছিল। কর্মসূচী ছিল মার্চ ২৩, ২০০৭ থেকে মার্চ ২৫], ২০০৭ পর্যন্ত। প্রায় ৫০০ প্রতিযোগী এই হাঁটাযোগে অংশগ্রহন করে। যদিও প্রথমে তা হাঁটা প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা ছিল কিন্তু পরে প্রতিযোগীতা বাদ দেওয়া হয়। দেশ-বিদেশের প্রায় ১২০০০ প্রতিযোগীদের মধ্যে থেকে ৫০০ জনকে হাঁটার জন্য নির্বাচন করা হয়। ২২ মার্চ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অংশগ্রহনকারীরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কক্সবাজারের হোটেল সী প্যালেসে এসে অবস্থান নেয়। ২৩ মার্চ সকালে ১৬ টি বাসে সকল অংশগ্রহনকারী সকাল ১০ টায় টেকনাফে পৌঁছায়। ক্রিয়া উপদেষ্টা তপন চৌধুরী সহ দেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন। উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন গ্রামীন ফোনের হেড অব মার্কেটিং রুবাবা উদ্দোলা, চ্যানেল আইয়ের ফরিদুর রেজা সাগর, এসিয়াটিকের আফজাল হোসেন সহ আরো অনেকে। চ্যানেল আই, ফারজানা ব্রাউনিয়ার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটি সরাসরি সমপ্রচার করেন। জাগো বাংলাদেশের গান এবং জাতীয় পতাকা নিয়ে অংশগ্রহনকারীরা ১০০ কিঃমিঃ হাঁটার যাত্রা শুরু করে। ২৩, ২৪ এবং ২৫ মার্চ প্রায় ১৪ ঘন্টা হাঁটার পর অংশগ্রহনকারীরা কক্সবাজার লাবনী পয়েন্টে এসে ১০০ কিঃমিঃ হাঁটা শেষ করে। চ্যানেল আইয়ের সরাসরি সম্পচার সহ জাঁকজমক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাপনি অনুষ্ঠান শেষ হয়।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] আয়োজনকারী, সেচ্ছাসেবক, নিরাপত্তারক্ষী এবং পৃষ্টপোষকগণ
এই কার্যক্রমের উদ্যেগতা ছিলেন একটিভেট বাংলাদেশ। আয়োজনে ছিলেন মা কনর্সোটিয়াম, টাইটেল পৃষ্টপোষকতায় ছিলেন গ্রামীনফোন, অন্যান্য পৃষ্টপোষকতায় ছিলেন স্কয়ার, এইচআরসি, টীম (পেপসি), আলমা, মিডিয়ায় ছিলেন চ্যানেল আই, ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলো। সেচ্ছাসেবকের দায়ীত্ব পালন করেছেন রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং মেডিকেল সহযোগীতা দিয়েছেন সেফ অরগেনাইজেশন। অংশগ্রহনকারীদের নিরাপত্তায় ছিলেন সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিডিআর, আনসার, র্যাব এবং পুলিশ।
[সম্পাদনা] সমুদ্র সৈকতে হাঁটাযোগের তিন দিন
২৩ মার্চ যাত্রা শুরু হয় বেলা ১০:৪৫ মিনিট। ১০০ কিঃমিঃ হাঁটা শুরু হওয়ার পর অংশগ্রহনকারীদের দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি ১ কিঃমিঃ পর পর ছিলো একজন করে সেচ্ছাসেবক। প্রতি ৫ কিঃমিঃ পর পর ছিলো একটি করে রিফ্রেশমেন্ট সেন্টার, যেখানে অংশগ্রহনকারীদের জন্য ছিল বিস্কুট এবং পানীয়। অংশগ্রকারীদের উৎসাহ দিতে গ্রামবাসীরা সর্বদাই তৎপর ছিলেন। ২৩ মার্চ হাঁটার প্রথম দিন ১৫ কিঃমিঃ পর ১ম ক্যাম্পটি স্থাপন করা হয় এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পটি ছিল ২২ কিঃমিঃ পর। প্রতিটি ক্যাম্পেই অংশগ্রহনকারীদের জন্য ছিল বাথরুম কিংবা টয়লেটের ব্যবস্থা। অংশগ্রহনকারীদের প্রতি মুহূর্তের ক্লান্তি দুর করার জন্য সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গের মিষ্টি সূরই ছিল যথেষ্ট। ২৪ মার্চে যাত্রা শুরু হয় যাত্রা শুরু ৭:১৫ মিনিটে। সমুদ্র সৈকতের মাঝে মাঝে খাল থাকায় অংশগ্রহনকারীদের মেরিন ড্রাইব অতিক্রম করতে হয়। অতিক্রম করতে হয় শামলাপুর গ্রাম সহ বিভিন্ন গ্রাম। শামলাপুর স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা সৈকতে এসে উপস্থিত হয় অংশগ্রহনকারীদের অভ্যর্থনা দেওয়ার জন্য। প্রায় ৪০ কিঃমিঃ হেঁটে অংশগ্রহনকারীরা এসে উপস্থিত হয় ইনানী বীচের কাছে, যেখানে ছিল ২য় ক্যাম্প। তার ৫ কিঃ মিঃ পূর্বে ছিল ১ম ক্যাম্প। অংশগ্রহনকারীদের কয়েকজন বেলা ১২ টার মধ্যেই ৪০ কিঃমিঃ অতিক্রম করে। ২৫ মার্চ বেলা ৮ টায় শুরু হয় তৃতীয় দিনের যাত্রা। সকলের সম্মতিক্রমে প্রতিযোগীতা বাদ দেওয়া হয়। এবং সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাঁটা শুরু করে। হিমছড়ী পার হয়ে কলাতলীতে এসে অংশগ্রহনকারীরা দুপুরের খাওয়া শেষে করে। অতঃপর বেলা ৪ টার দিকে অংশগ্রহনকারীরা কলাতলী থেকে কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্টে এসে আয়োজনকারীদের উঞ্চ অভ্যর্থনায় ১০০ কিঃমিঃ হাঁটা শেষ করে।
[সম্পাদনা] সমাপ্তী
উদ্যেগতা, আয়োজনকারী, পৃষ্টপোষক এবং অংশগ্রহনকারী সকলেই প্রত্যাশা করেন এই আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের এই সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর কাছে পরিচিতি পাক এবং কক্সবাজার হোক সবচেয়ে বড় পর্যটন স্থান।