বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় একজন বাঙালি কথাসাহিত্যিক। সবচেয়ে বেশী দক্ষতা দেখিয়েছেন উপন্যাসের জগতে। প্রায় সব ধরণের উপন্যাসই লিখেছেন যদিও মূলত সামাজিক উপন্যাসেই তার জনপ্রিয়তা বেশী। পথের পাঁচালি তার লেখা শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। পথের পাঁচালি উপন্যাসটির কাহিনীর উপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। বাংলা রোমাঞ্চকর অভিযানের উপর লেখা উপন্যাসের জগতে তিনি পুরোধা স্থানীয়। এক্ষেত্রে চাঁদের পাহাড় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। সেই সময়ের প্রক্ষাপটে বাংলা সাহিত্যে এ ধরণের রোমাঞ্চকর উপন্যাস ছিল বেশ অপ্রতুল।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] জীবনী
বিভূতিভূষণ পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলার কাঁচরাপাড়ার নিকটবর্তী ঘোষপাড়া-সুরারিপুর গ্রামে নিজ মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস চব্বিশ পরগণা জেলার ব্যারাকপুর গ্রামে। তার পিতা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ছলেন প্রখ্যাত সংস্কৃত পণ্ডিত। পাণ্ডিত্য এবং কথকতার জন্য তিনি শাস্ত্রী উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন।
নিজ গ্রামের পাঠশালায় বিভূতিভূষণের পড়াশোনা শুরু হয়। ছোটবেলা থেকেই তিনি মেধাবী ছিলেন। ১৯১৪ সালে এনট্রান্স এবং ১৯১৬ সালে আইএ পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। ১৯১৮ সালে বিএ পরীক্ষায়ও ডিস্টিইংশনসহ পাশ করেন। এরপর তিনি এমএ ও আইন বিষয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে হুগলির একটি মাইনর স্কুলে শিক্ষকতার মাধ্যমে পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন। এসময় কিছুদিন গোরক্ষিণী সভার প্রচারক হিসেবে বাংলা, ত্রিপুরা ও আরাকানের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করেন। পরে খেলাৎচন্দ্র ঘোষের বাড়িতে সেক্রেটারি, গৃহশিক্ষক এবং তাঁর এস্টেটের ভাগলপুর সার্কেলের সহকারী ম্যানেজারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিছুদিন আবার ধর্মতলার খেলাৎচন্দ্র মেমোরিয়াল স্কুলে শিক্ষকতা করেন। এরপর যোগ দেন গোপালনগর স্কুলে। এই স্কুলেই তিনি আমৃত্যু কর্মরত ছিলেন। এই মহান কথাসাহিত্যিক ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি ১ তারিখে ব্যারাকপুরের ঘাটশিলায় মৃত্যুবরণ করেন।
[সম্পাদনা] সাহিত্যকর্ম
১৯২১ খ্রিস্টাব্দে (১৩২৮ বঙ্গাব্দ) প্রবাসী পত্রিকার মাঘ সংখ্যায় উপেক্ষিতা নামক গল্প প্রকাশের মধ্য দিয়ে তার সাহিত্যিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। ভাগলপুরে কাজ করার সময় ১৯২৫ সালে তিনি পথের পাঁচালী রচনা শুরু করেন। এই বই লেখার কাজ শেষ হয় ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে। এটিই বিভূতিভূষণের প্রথম এবং শ্রেষ্ঠ রচনা। এর মাধ্যমেই তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এরপর অপরাজিত রচনা করেন যা পথের পাঁচালীরই পরবর্তী অংশ। উভয় উপন্যাসেই তার ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিফলন ঘটেছে। বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় পথের পাঁচালী উপন্যাসের কাহিনীকে চলচ্চিত্রে রুপদানের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্র জীবনের সূচনা করেছিলেন। এই চলচ্চিত্রও দেশী-বিদেশী প্রচুর পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছিল। এরপর অপরাজিত এবং অশনি সংকেত উপন্যাস দুটি নিয়েও সত্যজিৎ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এর সবগুলোই বিশেষ প্রশংসা অর্জন করেছিল। পথের পাঁচালী উপন্যাসটি ভারতীয় ভাষা এবং ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
[সম্পাদনা] পুরস্কার
- রবীন্দ্র-পুরস্কার - মরণোত্তর ১৯৫১ সালে
[সম্পাদনা] গ্রন্থতালিকা
তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে:
|
|
|
|