কুষ্টিয়া জেলা
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কুষ্টিয়া জেলা | |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
স্থানাঙ্ক | |
আয়তন | ১৬২১.১৫ বর্গ কিমি |
তাপমাত্রা | সর্বোচ্চ ৩৭.৮ সে. (গড়) সর্বনিম্ন ১১.২ সে. (গড়) |
সময় স্থান | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
জনসংখ্যা (১৯৯১) - ঘণত্ব - পুরুষ - নারী - শিক্ষার হার |
৪০,৩২,৬৬৬ - - ৫০.৪৯% - ৪৯.৫১% - ২৫.৮% |
ওয়েবসাইট: বাংলাপিডিয়া নিবন্ধ | |
মানচিত্র সংযোগ: কুষ্টিয়া জেলার প্রাতিষ্ঠানিক মানচিত্র |
কুষ্টিয়া জেলা বাংলাদেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] ইতিহাস
পূর্বে কুষ্টিয়া নদীয়া জেলার (বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে) অন্তর্ভূক্ত ছিল। ১৮৬৯ সালে কুষ্টিয়ায় একটি পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। হ্যামিলটন'স গেজেট প্রথম কুষ্টিয়া শহরের কথা উল্লেখ করে।
অবশ্য কুষ্টিয়া কোন প্রাচীন নগর নয়। সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালে এখানে একটি নদীবন্দর স্থাপিত হয়। যদিও ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এ বন্দর বেশি ব্যাবহার করত, তবুও নীলচাষী ও নীলকরদের আগমনের পরেই নগরায়ণ শুরু হয়। ১৮৬০ সালে কলকাতার (তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর রাজধানী)সাথে সরাসরি রেললাইন স্থাপিত হয়। একারণে এ অঞ্চল শিল্প-কারখানার জন্য আদর্শ স্থান বলে তখন বিবেচিত হয়েছিল। তৎকালীন সময়ে যজ্ঞেশ্বর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস(১৮৯৬), রেনউইক এন্ড যজ্ঞেশ্বর কোম্পানী (১৯০৪) এবং মোহিনী মিলস (১৯১৯) প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৪৭ এ ভারতবর্ষ ভাগের সময় কুষ্টিয়া পৃথক জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর সাবডিভিশন ছিল কুষ্টিয়া সদর, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর। ১৯৫৪ সালে গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রকল্পের সদর দপ্তর সহ আরো বেশ কিছু সরকারী অফিস কুষ্টিয়ায় স্থাপনের পরে শহরটিতে পুনরায় উন্নয়ন শুরু হয়।
[সম্পাদনা] ভৌগলিক সীমানা
কুষ্টিয়া জেলার আয়তন ১৬২১.১৫ বর্গকিলোমিটার। এর উত্তরে রাজশাহী, নাটোর ও পাবনা, দক্ষিণে চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ জেলা, পুর্বে রাজবাড়ী এবং পশ্চিমে পশ্চিমবঙ্গ ও মেহেরপুর জেলা অবস্থিত।
কুষ্টিয়ার প্রধান নদী পদ্মা, গড়াই, মাথাভাঙ্গা, কালীগঙ্গা ও কুমার। এখানে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭.৮°সে এবং গড় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ১১.২°সে। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ১৪৬৭ মি.মি.।
[সম্পাদনা] প্রশাসন
কুষ্টিয়া জেলা ৬টি উপজেলা, ৪টি পৌরসভা, ৩৯টি ওয়ার্ড, ৭০টি মহল্লা, ৬১টি ইউনিয়ন পরিষদ, ৭১০টি মৌজা ও ৯৭৮টি গ্রামে বিভক্ত। উপজেলাগুলো হলো:
[সম্পাদনা] জনসংখ্যা
কুষ্টিয়া জেলার জনসংখ্যা ১৭,১৩,২২৪ জন, যার মধ্যে ৫০.৮৬% পুরুষ ও ৪৯.১৪% মহিলা। জনসংখ্যার ৯৫.৭২% মুসলিম, ৪.২২% হিন্দু ও ০.০৬% অন্যান্য ধর্মালম্বী।
[সম্পাদনা] শিক্ষা
কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছেঃ
- মেডিক্যাল কলেজঃ ১
- সরকারী কলেজঃ: ৩
- বেসরকারী কলেজঃ: ৩০
- সরকারী উচ্চবিদ্যালয়ঃ ৩
- বেসরকারী উচ্চবিদ্যালয়ঃ ১৭৩
- বেসরকারী নিম্নবিদ্যালয়ঃ ৩৮
- সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ঃ ৩৩০
- বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ঃ ২৭৫
- কিন্ডারগার্টেনঃ ৩৯
- মাদ্রাসাঃ ৩৭
- কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রঃ ২
- আইন কলেজঃ ১
- প্রতিবন্ধীদের বিদ্যালয়ঃ ১
- শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রঃ ২
উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলোঃ মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় (স্থাপিত ১৮৯৮), কুষ্টিয়া সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (স্থাপিত ১৯৪৭), কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজ (স্থাপিত ১৯৬৮), কুষ্টিয়া হাই স্কুল এবং কুষ্টিয়া জেলা স্কুল (স্থাপিত ১৯৬০)।
[সম্পাদনা] বৃহত্তর কুষ্টিয়া
ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোন থেকে কুষ্টিয়া কয়েকটি সাবডিভিশন নিয়ে গঠিত একটি বড় জেলা, যার প্রতিটি সাবডিভিশন পরবর্তীতে জেলা হয়েছে। কিন্তু এই তিন জেলা চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার মানুষের কাছে বৃহত্তর কুষ্টিয়া শুধুই একটি অতীত নয়, আরও কিছু। বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় যে, এই অঞ্চলের ও অবিভক্ত নদীয়া জেলার আদি বাসিন্দাদের মুখের ভাষার সাথে আধুনিক প্রমিত বাংলার ঘনিষ্ঠ মিল পাওয়া যায়। এই তিন জেলার আধিবাসীদের বৃহত্তর সমাজকে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা বলা হয়। বিভিন্ন সংস্থা যেমনঃ "বৃহত্তর কুষ্টিয়া এসোসিয়েশন", "বৃহত্তর কুষ্টিয়া সমাজ" এই তিন জেলার জনগনের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
[সম্পাদনা] অর্থনীতি
বাংলাদেশের অন্যান্য বিভিন্ন অঞ্চলের মত কুষ্টিয়া কেবল চাষাবাদের উপর নির্ভরশীল নয়। চাষাবাদের পাশাপাশি কুষ্টিয়ায় শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। কুষ্টিয়ায় অনেক তামাকের কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে নাসির টোব্যাকো লিমিটেড ও ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো উল্ল্যেখযোগ্য। বাংলাদেশের বৃহত্তম বৈদ্যুতিক তার তৈরীর কারখানা বি.আর.বি. কেবলস কুষ্টিয়ায় অবস্থিত। জেলার কুমারখালি উপজেলায় গড়ে উঠেছে উন্নতমানের ফ্রেব্রিকস শিল্প। এখানে উৎপাদিত ফ্রেব্রিকস সামগ্রী দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানী হচ্ছে। এছাড়া কুষ্টিয়ায় অসংখ্য চালের মিল রয়েছে। বিভিন্ন কলকারখানা গড়ে ওঠায় এককভাবে কৃষিকাজের উপর নির্ভরতা কম।
[সম্পাদনা] চিত্তাকর্ষক স্থান
কুষ্টিয়া একটি প্রাচীন জনপদ। পূর্বে কুষ্টিয়া নদীয়া জেলার একটি মহকুমা ছিল। এ কারনে দেখার মত অনেক স্থান কুষ্টিয়ায় রয়েছে।
- রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ীঃ শিলাইদহের কুঠিবাড়ী রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত। এখানে আম্রকাননে কবিগুরু অনেক গান ও কবিতা রচনা করেছেন। সংস্কারের অভাবে বর্তমানে কূঠিবাড়ীর অবস্থা খারাপ। তবুও কবিপ্রেমীরা এখানে এসে কব সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন। কুঠিবাড়ীটি বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে ব্যাবহৃত হচ্ছে।
- ফকির লালন শাহের মাজারঃ বাংলার বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এই কুষ্টিয়া জেলাতেই জন্ম ও কর্ম সম্পাদন করেছেন। তার মাজার বর্তমানে বাউলদের আখড়া হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। লালন ভক্তের কাছে তাই অঞ্চলটি পূন্যভূমি রুপে পরিগণিত।
- পাকশী রেল সেতুঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রেল সেতু পাকশী রেল সেতু কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আছে। হার্ডিঞ্জ ব্রীজ সেতুর একটি স্প্যান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিমানের গোলায় ধ্বংস হয়ে যায়।
[সম্পাদনা] আনুষঙ্গিক নিবন্ধ
বাংলাদেশের বিভাগ এবং জেলা | ![]() |
---|---|
বরিশাল বিভাগ: বরগুনা | বরিশাল | ভোলা | ঝালকাঠি | পটুয়াখালী | পিরোজপুর | |
চট্টগ্রাম বিভাগ: বান্দরবান | ব্রাহ্মণবাড়িয়া | চাঁদপুর | চট্টগ্রাম | কুমিল্লা | কক্সবাজার | ফেনী | খাগড়াছড়ি | লক্ষ্মীপুর | নোয়াখালী | রাঙামাটি | |
ঢাকা বিভাগ: ঢাকা | ফরিদপুর | গাজীপুর | গোপালগঞ্জ | জামালপুর | কিশোরগঞ্জ | মাদারীপুর | মানিকগঞ্জ | মুন্সিগঞ্জ | ময়মনসিংহ | নারায়ণগঞ্জ | নরসিংদী | নেত্রকোনা | রাজবাড়ী | শরিয়তপুর | শেরপুর | টাঙ্গাইল | |
খুলনা বিভাগ: বাগেরহাট | চুয়াডাঙ্গা | যশোর | ঝিনাইদহ | খুলনা | কুষ্টিয়া | মাগুরা | মেহেরপুর | নড়াইল | সাতক্ষীরা | |
রাজশাহী বিভাগ: বগুড়া | দিনাজপুর | গাইবান্ধা | জয়পুরহাট | কুড়িগ্রাম | লালমনিরহাট | নওগাঁ | নাটোর | নবাবগঞ্জ | নিলফামারী | পাবনা | পঞ্চগড় | রাজশাহী | রংপুর | সিরাজগঞ্জ | ঠাকুরগাঁও | |
সিলেট বিভাগ: হবিগঞ্জ | মৌলভীবাজার | সুনামগঞ্জ | সিলেট |