লালন সাঁই
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লালন শাহ বা লালন ফকির (১৭৭৪-১৮৯০) তদানিন্তন বাংলার কুষ্টিয়ায় (বর্তমানে বাংলাদেশের অংশ) জন্ম গ্রহন করেন। লালন শাহ ভারতীয় উপমহাদেশ এর সবচেয়ে প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক সাধকদের মধ্যে অন্যতম। তিনি একাধারে বাউল সাধক, বাউল গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। তাঁকে ‘বাউল সম্রাট’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়। কথিত আছে যে, তিনি হিন্দু পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন, কিন্তু ছেলেবেলায় অসুস্থ অবস্থায় তার পরিবার তাকে ত্যাগ করে। তখন সিরাজ সাঁই নামের একজন মুসলিম বাউল তাকে আশ্রয় দেন এবং সুস্থ করে তোলেন।
ব্রিটিশ শাসন আমলে যখন হিন্দু ও মুসলিম মধ্যে জাতিগত বিবেধ সংঘাত বাড়ছিল তখন লালন ছিলেন এর বিরুধ্যে প্রতিবাদী কন্ঠ। তিনি মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ এ বিশ্বাস করতেন না। তাঁর কাছে জাতি, ধর্ম, বর্ণ এসবের কোন দাম ছিলনা। তিনি ছিলেন মানবতাবাদী।
বাউলদের জন্য তিনি যেসব গান রচনা করেন, তা কালে কালে এত জনপ্রিয়তা লাভ করে যে মানুষ এর মুখে মুখে তা পুরো বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও লালনের গানে প্রভাবিত হয়েছিলেন।
লালন কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়াতে একটি আখড়া তৈরি করেন, যেখানে তিনি তার শিষ্য দের শিক্ষা দিতেন। ১৮৯০ সালের ১৭ই অক্টোবর লালন ১১৬ বছর বয়সে কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়াতে নিজ আখড়ায় মৃত্যুবরণ করেন। আজও সারা দেশ থেকে বাউলরা অক্টোবর মাসে ছেউড়িয়ায় মিলিত হয়ে লালন এর প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে।