নন্দলাল বসু
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা করুন] জন্ম
নন্দলাল বসু (৩রা ফেব্রুয়ারি; ১৮৮২-১৬ই এপ্রিল; ১৯৬৬) ছিলেন বাঙালি চিত্রশিল্পী। খড়গপুরের মুঙ্গেরে তাঁর জন্ম। বাবার নাম পূর্ণচন্দ্র বসু। ছেলেবেলা থেকেই তিনি প্রবল উৎসাহের সঙ্গে দেব-দেবীর মূর্তি সহ পুতুল তৈরী করতেন।
[সম্পাদনা করুন] শিক্ষাজীবন
চিত্রকলার প্রতি তাঁর আকর্ষন এবং পড়ালেখায় অমনোযোগীতার কারনে এফ, এ পরীক্ষায় পর পর দুবার ফেল করেন। পরে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহায্যে কলিকাতা আর্ট স্কুলে ভর্তির সুযোগ পান। এখানকার ছাত্র থাকাকালীন তিনি কর্ণের সূর্যস্তব, গরুড়স্তম্ভতলে শ্রীচৈতন্য, কৈকেয়ী, শিবমতি, নৌবিহার প্রভৃতি ছবি এঁকে নিজের প্রতিভার পরিচয় দেন।
[সম্পাদনা করুন] কর্মজীবন
তিনি কর্মজীবনের শুরুতে পাটনা, রাজগির, বুদ্ধগয়া, বারাণসী, দিল্লী, আগ্রা, মথুরা, বৃন্দাবন, এলাহাবাদ ভ্রমন করে উত্তর ভারতের শিল্প ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত হন। প্রায় একই সময়ে পুরী থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত প্রায় সমগ্র দক্ষিন ভারত ভ্রমন করেন এবং কোণারকের সূর্য মন্দির তাঁকে প্রভাবিত করে। ১৯২১ সালে তিনি বাঘ গুহার নষ্ট হয়ে যাওয়া চিত্রগুলি পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি ভগিনী নিবেদিতার হিন্দু-বৌদ্ধ পুরাকাহিনী বইটির অঙ্গসজ্জা করেন এবং ঠাকুর বাড়ির চিত্র কলার তালিকা তৈরীতেও সাহায্য করেন। ১৯১৬ সালে রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত বিচিত্রা সংঘে তিনি শিল্পকলার শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৩৫-৩৭ সালে পর পর তিন বছর তিনি কংগ্রসের বার্ষিক সম্মেলনে শিল্প প্রদর্শনী ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৩৭ সালে অনুষ্ঠিত হরিপুরা সম্মেলনে তিনি লোকচিত্রের ধারাবাহী ৮৩টি পট প্রদর্শন করেন যা হরিপুরা পট নামে খ্যাত। ১৯৪৩ সালে তিনি বরোদার মহারাজের কীর্তিমন্দির অলঙ্কৃত করার দায়িত্ব লাভ করেন। এই কীর্তিমন্দিরের চারিদিকের এবং শ্রীনিকেতন ও শান্তিনিকেতনের দেয়ালচিত্র নন্দলাল বসুকে খ্যাতিমান করে তুলে। ভারতীয় সংবিধানের সচিত্র সংস্করনও নন্দলাল বসু অলংকৃত করেন। তাঁর আঁকা ছোট ছোট ছবিগুলোতেও তাঁর প্রতিভার এবং স্বাতন্ত্রের পরিচয় মেলে। শেষ জীবনে নন্দলাল বসু তুলি-কালি এবং ছাপচিত্রের প্রতি বিশেষ মনোযোগী হন এবং এক্ষেত্রে সাফল্যের পরিচয় দেন।
[সম্পাদনা করুন] পুরস্কার ও সম্মাননা
- ১৯৫২ সালে বিশ্বভারতী তাঁকে দেশিকোত্তম উপাধিতে ভূষিত হন।
- ১৯৫৪ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত করে।
[সম্পাদনা করুন] মৃত্যু
১৯৬৬ সালে তিনি শান্তিনিকেতনে পরলোকগমন করেন।