তড়িৎ প্রকৌশল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন তড়িৎ প্রকৌশলীগণ করে থাকেন…
বড় করুন
বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন তড়িৎ প্রকৌশলীগণ করে থাকেন…
… এবং তাঁরা সূক্ষাতিসূক্ষ ও জটিল ইলেক্ট্রনিক সার্কিটও তৈরী করেন
বড় করুন
… এবং তাঁরা সূক্ষাতিসূক্ষ ও জটিল ইলেক্ট্রনিক সার্কিটও তৈরী করেন

তড়িৎ প্রকৌশল বা ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রায়শঃ ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং নামে অভিহিত) প্রকৌশল বা ইঞ্জিনিয়ারিং পেশার একটি প্রধান শাখা যা মূলতঃ তড়িৎ বা বিদ্যুৎ, ইলেকট্রনিক্সতড়িৎ চৌম্ব্কত্ব নিয়ে কাজ করে। উল্লেখযোগ্য পেশা হিসেবে তড়িৎ প্রকৌশল আত্মপ্রকাশ করে উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে, যখন টেলিগ্রাফি এবং বিদ্যুৎশক্তির ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে। বর্তমানে তড়িৎ প্রকৌশলের ব্যপ্তি বিদ্যুৎশক্তি, কন্ট্রোল সিস্টেম, ইলেকট্রনিক্স, টেলিযোগাযোগ সহ আরও কিছু উপশাখা জুড়ে বিস্তৃত।

তড়িৎ প্রকৌশল বলতে অনেক সময় তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশলও বোঝানো হয়ে থাকে। তবে যখন শুধু তড়িৎ প্রকৌশল বলা হয় তখন মূলতঃ যে শাখা বড় আকারের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা বা যন্ত্রপাতি যেমন বিদ্যুৎশক্তি সঞ্চালন, বৈদ্যুতিক মোটর নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি সংক্রান্ত কার্যাবলী সম্পাদন করে তাকে বোঝানো হয়। অন্যদিকে ক্ষুদ্র আকারের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি যেমন কম্পিউটার, আই সি ইত্যাদি ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর অন্তর্গত।[১] অন্য কথায় তড়িৎ প্রকৌশলীগণ সাধারণতঃ শক্তি সঞ্চালনের কাজে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাকে কাজে লাগান আর ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশলীগণ তথ্য আদানপ্রদানের কাজে বিদ্যুতশক্তিকে কাজে লাগান।

সূচিপত্র

[সম্পাদনা করুন] ইতিহাস

[সম্পাদনা করুন] আদি ইতিহাস

সপ্তদশ শতক থেকেই বিদ্যুৎশক্তি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে একটি আকর্ষণীয় বিষয়ে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু এর উপরে গবেষণা করার তীব্রতা বাড়তে থাকে ঊনবিংশ শতাব্দীতে এসে। এই শতকে জর্জ সায়মন ওহম, মাইকেল ফ্যারাডে, জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। ১৮২৭ সালে জর্জ ওহম কোন তড়িৎ পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎপ্রবাহ ও এর দুই প্রান্তের বিভবপার্থক্যের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয়ের সূত্র প্রদান করেন যা ওহমের সূত্র বা Ohm’s Law নামে পরিচিত। মাইকেল ফ্যারাডে ১৮৩১ সালে বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় আবেশ আবিষ্কার করেন এবং ১৮৭৩ সালে জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল বিদ্যুৎ ও চৌম্বক শক্তির একীভূত রূপ সম্পর্কিত তত্ত্ব প্রকাশ করেন।[২]

তখনও তড়িৎ প্রকৌশল মূলতঃ পদার্থবিজ্ঞানের একটি শাখা বলেই বিবেচিত হতো। পরে, ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে এসে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তড়িৎ প্রকৌশলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী প্রদান শুরু করে। ১৮৮৩ সালে ডার্মষ্টাড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং কর্নেল ইউনিভার্সিটি পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবারের মত তড়িৎ প্রকৌশল পাঠ্যসূচী প্রণয়ন করে।[৩]

টমাস আলভা এডিসন সর্বপ্রথম বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করেন
বড় করুন
টমাস আলভা এডিসন সর্বপ্রথম বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করেন

এই সময়ে তড়িৎ প্রকৌশল সম্পর্কিত কাজের পরিমাণ নাটকীয় ভাবে বৃদ্ধি পায়। ১৮৮২ সালে সর্বপ্রথম টমাস আলভা এডিসন লোয়ার ম্যানহাটনের ঊনপঞ্চাশ জন গ্রাহকের কাছে ১১০ ভোল্টের বিদ্যুৎ সরবরাহ করেন। তাঁর সরবরাহকৃত বিদ্যুৎ ছিল একমুখী প্রবাহ (DC Current) ধরণের। ১৮৮৭ সালে নিকোলা টেসলা পরিবর্তী প্রবাহ ধরণের বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পেটেন্ট স্বত্ত গ্রহন করেন। পরবর্তী কয়েক বছর টেসলা ও এডিসনের মধ্যে সরবরাহকৃত বিদ্যুতের ধরণ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। এই দ্বন্দ্ব বিদ্যুতের লড়াই (War of Currents) নামে পরিচিত। বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সঞ্চালনের পদ্ধতি হিসেবে পরিবর্তী প্রবাহ একমুখী প্রবাহকে সরিয়ে স্থান দখল করে নেয় মূলতঃ সঞ্চালন ব্যবস্থার তুলনামূলক দক্ষতা ও উন্নততর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে।

নিকোলা টেসলা প্রথম দীর্ঘ দূরত্বের বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন ন্থাপন করেন।
বড় করুন
নিকোলা টেসলা প্রথম দীর্ঘ দূরত্বের বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন ন্থাপন করেন।

এই দুজনের অবদানের কারনে তড়িৎ প্রকৌশল বেশ অগ্রসর হয়ে যায়। ইনডাকশন মোটর ও পলিফেজ সিস্টেমের উপরে টেসলার কাজ অনেক দিন ধরে পরবর্তী বিজ্ঞানীদেরকে প্রভাবিত করে রাখে। অন্যদিকে টমাস এডিসন টেলিগ্রাফ এবং স্টক টিকারের প্রভূত উন্নতি ঘটান যা তাঁর কোম্পানীর জন্য অত্যন্ত লাভজনক রূপে প্রতীয়মান হয়। এডিসনের কোম্পানী পরে বিখ্যাত জেনারেল ইলেক্ট্রিক কোম্পানীতে রূপান্তরিত হয়।ইতোমধ্যে ১৮ শতকের শেষ দিকে তড়িৎ প্রকৌশলের জগতে অন্যান্য দিকপালের আগমন শুরু হয়ে যায়।[৪]

[সম্পাদনা করুন] আধুনিক উন্নয়ন

বেতার ও ইলেক্ট্রনিক্সের আবির্ভাব বেতারের উন্নয়নের সময়কালে অনেক বিজ্ঞানী ও আবিস্কারক বেতার এবং ইলেক্ট্রনিক্সের উন্নয়নে অবদান রাখেন। হেনরিখ হার্টজ ১৮৮৮ সালে তাঁর বিখ্যাত ইউ এইচ এফ (UHF) পরীক্ষার সময়ে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে বেতার তরঙ্গ প্রেরণ (স্পার্ক গ্যাপ ট্রান্সমিটারের সাহায্যে) ও চিহ্নিত করতে সক্ষম হন। ১৮৯৫ সালে নিকোলা টেসলা নিউ ইয়র্কের ওয়েষ্ট পয়েন্টে অবস্থিত তাঁর পরীক্ষাগার থেকে ৮০.৪ কিমি দূরে বেতার সংকেত ধরতে পারেন[৫]। ১৯০৪ সালে জন ফ্লেমিং প্রথম বেতার টিউব, যা ডায়োড নামে পরিচিত, আবিষ্কার করেন। দুই বছর পরে রবার্ট ভন লিবেন ও লি ডি ফরেষ্ট পৃথক গবেষণায় বিবর্ধক টিউব বা ট্রায়োড আবিষ্কার করেন[৬] । তারপর ১৯৩১ সালে ম্যানফ্রেড ভন আর্ডেনে ক্যাথোড রে টিউব আবিষ্কার করেন যা পরবর্তীতে টেলিভিশন আবিষ্কারে সহায়তা করেছিল.[৭]। ১৯২০ সালে আলবার্ট হল ম্যাগনিট্রন আবিষ্কার করেন যা ১৯৪৬ সালে পার্সি স্পেনসারকে মাইক্রোওয়েভ ওভেন আবিস্কারে সহায়তা করেছিল [৮][৯]। ১৯৩৪ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ড. উইম্পেরিসের নেতৃত্বে রাডার ( এটিও ম্যাগনিট্রন ব্যবহার করে তৈরী) আবিষ্কারের পথে অনেকদূর এগিয়ে যেতে শুরু করে এবং ১৯৩৬ সালের অগাষ্ট মাসে বাউডসেতে প্রথম রাডারকেন্দ্র স্থাপন করে.[১০]

১৯৪১ সালে কনরাড যুস পৃথিবীর প্রথম সম্পূর্ণ র্কমক্ষম ও প্রোগ্রাম করার উপযোগী কম্পিউটার যেডথ্রি (Z3) জনসমক্ষে আনেন[১১]। এরপর ১৯৪৬ সালে জন প্রেসপার একার্ট ও জন মাউচলি এনিয়াক (ENIAC-Electronic Numerical Integrator and Computer) আবিষ্কার করেন যা পৃথিবীতে কম্পিউটার যুগের সূচনা করে। এইসব যন্ত্রের গাণিতিক দক্ষতা বিজ্ঞানীদেরকে অ্যাপোলো মিশন ও নাসার চাঁদে অবতরণ সহ সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাব ঘটাতে এবং নিত্য নতুন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করছে[১২]

১৯৪৭ সালে উইলিয়াম বি শকলি, জন বারডীন ও ওয়াল্টার ব্রাটেইনের ট্রানজিস্টর আবিস্কার ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশের জগতে নতুন দুয়ার উন্মোচন করে এবং এর ফলশ্রুতিতে ১৯৫৮ সালে জ্যাক কিলবি এবং ১৯৫৯ সালে রবার্ট নয়সি পৃথকভাবে সমন্বিত বর্তনী আবিস্কার করেন]].[১৩]। ইনটেলের মারসিয়ান হফ ১৯৬৮ সালে প্রথম মাইক্রোপ্রসেসর আবিষ্কার করেন এবং পার্সোনাল কম্পিউটার আবিষ্কারের পথ করে দেন। যদিও ইনটেল ৪০০৪, ৪-বিটের প্রসেসর যা ১৯৭১ সালে আবিষ্কৃত হয়, প্রথম মাইক্রোপ্রসেসর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে আসছে কিন্তু ১৯৭৩ সালে ৮-বিটের প্রসেসর ইনটেল ৮০৮০ আবিস্কৃত হওয়ার পরই প্রথম পার্সোনাল কম্পিউটারের জন্ম হয়। এই কম্পিউটারটির নাম ছিল এলটেয়ার ৮৮০০[১৪]

[সম্পাদনা করুন] প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা

তড়িৎ প্রকৌশলীগণ মূলতঃ একটি স্নাতক সম্মাননা অর্জন করে থাকেন যার প্রধান বিষয় থাকে তড়িৎ প্রকৌশল। এই সম্মাননা সাধারণতঃ চার অথবা পাঁচ বছরের পড়াশুনার সফল সমাপনান্তে প্রদান করা হয় এবং এই সম্মাননা বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে স্নাতক(সম্মান) প্রকৌশল, স্নাতক (সম্মান) বিজ্ঞান, স্নাতক (সম্মান) প্রযুক্তি বা স্নাতক (সম্মান) প্রায়োগিক বিজ্ঞান নামে প্রদান করা হয়। এই সম্মাননার পাঠ্যতালিকায় প্রধানতঃ পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট এবং তড়িৎ প্রকৌশলের নির্দিষ্ট বিষয়াদি থাকে। প্রাথমিক পর্যায়ের বিষয়গুলোতে তড়িৎ প্রকৌশলের সকল বা প্রায় সকল শাখা সর্ম্পকে শিক্ষাদান করা হয়। পরবর্তীতে পড়াশুনার শেষের দিকে শিক্ষার্থীরা এক বা একাধিক শাখা বেছে নিয়ে তাতে বিশেষত্ব অর্জন করে। কিছু সংখ্যক তড়িৎ প্রকৌশলী স্নাতকোত্তর সম্মাননা যেমন স্নাতকোত্তর প্রকৌশল সম্মাননা বা প্রকৌশলে এমপিএইচ সম্মাননাও অর্জন করেন। স্নাতকোত্তর প্রকৌশল সম্মাননার পাঠ্যতালিকা গবেষণা, বিষয়ভিত্তিক পড়াশুনা অথবা এই দুইয়ের সংমিশ্রণে গঠিত হয়। যুক্তরাজ্যে এবং ইউরোপের অনেক দেশে স্নাতকোত্তর প্রকৌশল সম্মাননাকে একটু দীর্ঘ দৈর্ঘ্যের স্নাতক সমমানের সম্মাননা গণ্য করা হয়[১৫]

[সম্পাদনা করুন] পেশাদার প্রকৌশলী

বিশ্বের বেশীরভাগ দেশে প্রকৌশলে একটি স্নাতক সম্মাননা প্রাপ্তি পেশাদার প্রকৌশলী হবার প্রথম ধাপ হিসেবে গণ্য হয়। প্রকৌশলে স্নাতক সম্মাননা অর্জনের পরে একজন প্রকৌশলীকে পেশাদারীত্বের সনদ অর্জনের জন্য বেশ কিছু শর্ত (প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা অর্জনসহ) পূরণ করতে হয়। এই সনদ অর্জনের পরে একজন প্রকৌশলী প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ার (যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাদক্ষিণ আফ্রিকায়), চার্টার্ড ইঞ্জিনিয়ার ( যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, ভারতজিম্বাবুয়েতে), পি ইঞ্জ (বাংলাদেশে)[১৬], চার্টার্ড প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ার (অস্ট্রেলিয়ানিউজিল্যান্ডে), ইউরোপীয়ান ইঞ্জিনিয়ার (ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত বেশীরভাগ দেশে) ইত্যাদি নামে অভিহিত হন।

পেশাদারীত্বের সনদ অর্জনের লাভ দেশ ভেদে কমবেশী হতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় "কেবলমাত্র একজন পেশাদার প্রকৌশলীই (প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ার) জনস্বার্থে বা ব্যক্তিমালিকানাধীনে নির্মিত প্রকৌশল কাজ সমূহে মোহরাংকন করতে পারবেন।‍"[১৭] কোন কোন দেশে এই যোগ্যতা রাজ্য এবং রাষ্ট্রীয় আইন দ্বারা বিধিবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে যেমন কুইবেকের "ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাক্ট"[১৮]। কোন কোন দেশে অবশ্য এরকম কোন আইনের অস্তিত্ব নেই। তবে আইন থাকুক বা নাই থাকুক, সব দেশের সব পেশাদারীত্বের সনদ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ নীতিগত ভাবে একটি নিয়ম মেনে চলে যা তাদের সকল সদস্যকে মেনে চলতে হয় অন্যথায় বহিষ্কৃত হবার সম্ভাবনা থাকে।[১৯] এভাবে এই প্রতিষ্ঠানগুলি প্রকৌশল পেশার নীতিগত মান সমুন্নত রাখতে মূল্যবান ভূমিকা পালন করে। এমনকি আদালতে যেখানে কাজের জন্য সনদের অত্যন্ত ক্ষুদ্র মূল্য প্রদান করা হয় অথবা মূল্য দেওয়াই হয়না, সেখানেও প্রকৌশলীদের চুক্তিনামা মেনে চলতে হয়। কোন কারনে যদি একজন প্রকৌশলীর নির্মান বা কাজ ব্যর্থ হয়, তাহলে তিনি অবহেলার দায়ে অভিযুক্ত হতে পারেন, এমনকি চরমক্ষেত্রে "ক্রিমিনাল নেগলিজেন্স" বা অবহেলার অপরাধে দন্ডিত হতে পারেন। একজন প্রকৌশলীর কাজকে অবশ্যই আরো অনেক রীতি এবং নীতি যেমন গৃহনির্মাণ নীতি বা পরিবেশ আইন মেনে সম্পন্ন হতে হয়।

তড়িৎ প্রকৌশলীদের উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ইন্সটিটিউট অব ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার্স (IEEE) এবং ইন্সটিটিউশন অব ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স (IEE)। IEEE’র ভাষ্যমতে তারা তড়িৎ প্রকৌশলে পৃথিবীর মোট প্রকাশনা ও নিবন্ধের ৩০ শতাংশ প্রকাশ করে, সারা বিশ্বে তাদের ৩৬০,০০০ জনেরও বেশী সদস্য রয়েছে এবং তারা বাৎসরিক ৩০০টিরও বেশী সম্মেলনের আয়োজন করে।[২০] IEE ১৪টি জার্ণাল প্রকাশ করে, সারা বিশ্বে তাদের সদস্য সংখ্যা ১২০,০০০ জনেরও বেশী, এবং তারা দাবী করে তারা ইউরোপের সর্ববৃহৎ পেশাদার প্রকৌশলী সংস্থা।[২১] [২২] প্রাযুক্তিক জ্ঞান এবং দক্ষতা প্রকৌশলীদের ভূবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। তাই পেশাদারীত্ব বজায় রাখার স্বার্থে প্রযুক্তি সর্ম্পকিত সংস্থার সদস্য হওয়া, নিজ নিজ ক্ষেত্রের সাময়িকীসমূহে অবহিত থাকা এবং ক্রমাগত জ্ঞানার্জন করার অভ্যাস বজায় রাখা জরুরী।[২৩]

[সম্পাদনা করুন] যন্ত্রপাতি এবং কর্মক্ষেত্র

একজন তড়িৎ প্রকৌশলী যে সমস্ত যন্ত্র নিয়ে কাজ করেন তার মধ্যে রাডার একটি
বড় করুন
একজন তড়িৎ প্রকৌশলী যে সমস্ত যন্ত্র নিয়ে কাজ করেন তার মধ্যে রাডার একটি

গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম থেকে শুরু করে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন পর্যন্ত তড়িৎ প্রকৌশলীরা প্রযুক্তির একটি বিশাল স্থান দখল করে আছেন। তাঁরা বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের নকশা প্রনয়ণ, আবিষ্কার বা উৎপাদন, নীরিক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষন করে থাকেন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় তাঁরা টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার নকশা প্রণয়ন করতে পারেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কার্যক্রম দেখাশুনা করতে পারেন, ঘরবাড়ির আলো ও বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা দেখাশুনা করতে পারেন, গৃহকর্মে ব্যবহার্য যন্ত্রের নকশা প্রণয়ন করতে পারেন অথবা শিল্পকারখানার যন্ত্রপাতির বৈদ্যুতিক নিয়ন্ত্রণ প্রণয়ন করতে পারেন।[২৪]

তড়িৎ প্রকৌশলের মূল ভিত্তি হল পদার্থবিজ্ঞান আর গণিত, কারণ এর মাধ্যমে কোন যান্ত্রিক ব্যবস্থার কার্যপদ্ধতি কী হবে তার যৌক্তিক ও গাণিতিক বিশ্লেষন করা যায়| আধুনিককালের বেশিরভাগ প্রকৌশল কার্যক্রমে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় এবং বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা বা যন্ত্রপাতির নকশা প্রনয়নের সময় কম্পিউটারের সহায়তা নেওয়া এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে| যদিও চিন্তা বা আইডিয়াগুলো অংকনের মাধ্যমে দ্রুত অন্যদের কাছে পৌঁছে দেয়ার দক্ষতা এখনো অমূল্যই রয়ে গেছে|

যদিও সকল তড়িৎ প্রকৌশলীরই প্রাথমিক বর্তনী তত্ত্ব বা সার্কিট থিওরী জানা আছে, তবুও তাদের কাজের ক্ষেত্র বিস্তৃত বলে তারা কাজ অনুসারে বিভিন্ন তত্ত্ব ব্যবহার করেন। মূলত কে কোন তত্ত্ব ব্যবহার করেন তা তাদের কর্মক্ষেত্রের উপরে নির্ভর করে। যেমন একজন তড়িৎ প্রকৌশলী যার কর্মক্ষেত্র ভি এল এস আই (সমন্বিত বর্তনী বা আইসি ডিজাইনের কাজ), তার কাজের জন্য কোয়ান্টাম মেকানিক্স এবং সলিড স্টেট পদার্থবিদ্যা নিত্য প্রয়োজনীয়, কিন্তু যিনি বৃহদাকারের তড়িৎ যন্ত্রাদি নিয়ে কাজ করেন তার জন্য এগুলো নিতান্তই অপ্রয়োজনীয়। এমনকি একজন তড়িৎ প্রকৌশলী যিনি টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার ডিজাইন নিয়ে কাজ করেন, তার জন্য বর্তনী তত্ত্বও অপ্রয়োজনীয় হতে পারে কারন তিনি কাজ করেন তৈরী যন্ত্রাংশ নিয়ে। সম্ভবত তড়িৎ প্রকৌশলীদের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দক্ষতা হচ্ছে দৃঢ় গাণিতিক দক্ষতা, কম্পিউটার জ্ঞান এবং তড়িৎ প্রকৌশলের সাথে সম্পর্কিত প্রাযুক্তিক ভাষা ও কন্সেপ্ট সহজেই আত্মস্থ করার ক্ষমতা।

বেশীরভাগ প্রকৌশলীর ক্ষেত্রেই প্রকৌশল সম্পর্কিত কাজ তাদের কাজের একটা ছোট অংশ। অন্যান্য কাজ যেমন গ্রাহক বা ব্যবহারকারীদের সাথে প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা, বাজেট তৈরী, প্রজেক্টের শিডিউল তৈরী ইত্যাদি তাদের কাজের একটা বড় অংশ বলে বিবেচিত হয়।[২৫] অনেক জ্যেষ্ঠ বা উর্ধতন প্রকৌশলী টেকনিশিয়ান এবং অন্যান্য প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে গঠিত একটা দলের নেতৃত্ব দেন। এজন্য প্রজেক্ট ব্যবস্থাপনার দক্ষতা একটা বড় ভূমিকা পালন করে। বেশিরভাগ প্রকৌশল প্রজেক্টের সাথে দলিলপত্রাদি তৈরী ও ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন হয় এবং দক্ষ লিখিত যোগাযোগ ক্ষমতা এক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজন।

তড়িৎ প্রকৌশলীদের কাজের স্থান তাদের কাজের ধরনের মতই বিভিন্ন রকম হয়। ইলেক্টনিক যন্ত্রাংশ তৈরীর কারখানার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন অত্যাধুনিক গবেষণাগারে যেমন তড়িৎ প্রকৌশলীদেরকে দেখা যায়, তেমনি তড়িৎ প্রকৌশলীদেরকে পাওয়া যায় কোন পরামর্শ প্রদানকারী সংস্থার কর্মকর্তা হিসেবে অথবা কোন ভূ-গর্ভস্থ খনিতে। কর্মক্ষেত্রে তড়িৎ প্রকৌশলীগনকে প্রায়ই বিজ্ঞানী, ইলেক্ট্রিশিয়ান, কম্পিউটার প্রোগ্রামার বা অন্যান্য প্রকৌশলী ইত্যাদি বিভিন্ন পেশার লোকজনদের কাজকর্ম দেখাশোনা করতে হয়।

[সম্পাদনা করুন] শাখাসমুহ

তড়িৎ প্রকৌশলের অনেক শাখা রয়েছে, তার মধ্যে নিম্নোক্ত শাখাগুলো সর্বাপেক্ষা পরিচিত। অনেক তড়িৎ প্রকৌশলী এগুলোর একটি শাখায় কাজ করলেও অনেকেই আবার একাধিক শাখার সমন্বয়ে কাজ করেন। কখনো কখনো কোন কোন শাখা যেমন ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বা কম্পিউটার প্রকৌশলকে তাদের বিপুল ব্যপ্তির কারনে প্রকৌশলেরই আলাদা বিভাগ বলে ধরা হয়।

[সম্পাদনা করুন] বিদ্যুৎ শক্তি

 বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার একটি খুঁটি(Pole)

বিদ্যুৎ শক্তি সংক্রান্ত প্রকৌশল প্রধানত বিদ্যুত শক্তি উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ এবং এই সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি যেমন ট্রান্সফরমার, জেনারেটর, বৈদ্যুতিক মোটর ইত্যাদি তৈরী ও রক্ষণাবেক্ষন নিয়ে কাজ করে। পৃথিবীর অনেক এলাকায় অনেক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কেন্দ্রের জেনারেটরকে একসাথে একটি কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সাথে যুক্ত করা হয় যাকে গ্রীড বলে। সরকারীভাবে এই গ্রীডের রক্ষণাবেক্ষন ও দেখাশোনা করা হয়। বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীগণ এই কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন থেকে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করে সস্তায় বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারেন। বিদ্যুৎ শক্তি প্রকৌশলীরা এই গ্রীডের নকশা প্রনয়ন ও স্থাপন থেকে শুরু করে এই গ্রিডের সাথে সংযুক্ত হওয়া যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষন সহ বিভিন্ন কাজ করে থাকেন।

[সম্পাদনা করুন] নিয়ন্ত্রন প্রকৌশল

 স্পেস শাটল কলাম্বিয়ার উৎক্ষেপন। স্পেস শাটল উৎক্ষেপন থেকে মহাশূণ্যে এর পরিচালনায় নিয়ন্ত্রন প্রকৌশল ব্যবহৃত হয়।

নিয়ন্ত্রন প্রকৌশল মূলত অত্যাধুনিক যান্ত্রিক ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক সমূহের নকশা প্রনয়ণ নিয়ে কাজ করে যেন এই যান্ত্রিক ব্যবস্থাগুলোকে চাহিদা অনুযায়ী কাজ করানো যায়। এমন নিয়ন্ত্রক প্রনয়ন করার জন্য তড়িৎ প্রকৌশলীরা তড়িৎ বর্তনী, ডিজিটাল সংকেত প্রসেসর এবং মাইক্রো কন্ট্রোলার ব্যবহার করে থাকেন। নিয়ন্ত্রন প্রকৌশলের ব্যবহার আধুনিক বাণিজ্যিক বিমান সংস্থার ফ্লাইট এবং প্রপালশান ব্যবস্থা থেকে শুরু করে অনেক আধুনিক মোটরযানের গতি নিয়ন্ত্রন পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে। শিল্প কারখানার স্বনিয়ন্ত্রনের (Automation) ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।

নিয়ন্ত্রন প্রকৌশলীরা নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা প্রনয়নের সময় প্রায়ই ফীডব্যাক ব্যবস্থা ব্যবহার করেন। উদাহরণ স্বরূপ স্বয়ংক্রীয় গতি নিয়ন্ত্রিত মোটরগাড়ীর কথা বলা যায়। এগুলোতে মোটরযানের গতির উপরে সার্বক্ষনিক নজরদারী করা হয় এবং ফলাফল নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থায় ক্রমাগত প্রেরণ করা হয়। ফলে নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা ফলাফল অনুসারে গতি নিয়ন্ত্রন করে থাকে।

[সম্পাদনা করুন] ইলেকট্রনিক্স

ইলেকট্রনিক্স প্রকৌশল প্রধানত ইলেকট্রনিক বর্তনীর নকশা প্রনয়ন এবং পরীক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হয়। ইলেকট্রনিক বর্তনী সাধারনত রেজিস্টর, ক্যাপাসিটর, ইন্ডাক্টর, ডায়োড প্রভৃতি দ্বারা কোন নির্দিষ্ট কার্যক্রম সম্পাদন করার জন্য তৈরী করা হয়। বেতার যন্ত্রের টিউনার যেটি শুধুমাত্র আকাংক্ষিত বেতার স্টেশন ছাড়া অন্য গুলোকে বাতিল করতে সাহায্য করে, ইলেকট্রনিক বর্তনীর একটি উদাহরণ। পাশে আরেকটি উদাহরনের (নিউমেটিক সংকেত কন্ডিশনারের ) ছবি দেওয়া হলো।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ইলেকট্রনিক্স প্রকৌশল পরিচিত ছিল রেডিও প্রকৌশল বা বেতার প্রকৌশল নামে। তখন এর কাজের পরিধি ছিল রাডার, বাণিজ্যিক বেতার এবং আদি টেলিভিশন নিয়ে। বিশ্বযুদ্ধের পরে যখন ভোক্তা বা ব্যবহারকারী কেন্দ্রিক যন্ত্রপাতির উন্নয়ন শুরু হল, তখন থেকে প্রকৌশলের এই শাখা বিস্তৃত হতে শুরু করে এবং আধুনিক টেলিভিশন, অডিও ব্যবস্থা, কম্পিউটার এবং মাইক্রো প্রসেসর এই শাখার অন্তর্ভুক্ত হয়। পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি থেকে বেতার প্রকৌশল নামটি ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে দশকের শেষ নাগাদ ইলেকট্রনিক্স প্রকৌশল নাম ধারণ করে।

১৯৫৯ সালে সমন্বিত বর্তনী আবিষ্কারের আগে ইলেকট্রনিক বর্তনী তৈরী হতো বড় আকারের পৃথক পৃথক যন্ত্রাংশ দিয়ে। এই সব বিশাল আকারের যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরী বর্তনীগুলো বিপুল জায়গা দখল করত এবং এগুলো চালাতে অনেক শক্তি লাগত। এই যন্ত্রাংশগুলোর গতিও ছিল অনেক কম। অন্যদিকে সমন্বিত বর্তনী বা আই সি অসংখ্য (প্রায়ই ১০ লক্ষ বা এক মিলিয়নেরও বেশী) ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র তড়িৎ যন্ত্রাংশ, যাদের বেশীরভাগই মূলত ট্রানজিস্টর, দিয়ে গঠিত হয়। এই যন্ত্রাংশগুলোকে একটা ছোট্ট, প্রায় একটা কয়েনের আকারের সিলিকন চিলতে বা চিপের উপরে সমন্বিত করে সমন্বিত বর্তনী তৈরী করা হয়। বর্তমানের অত্যাধুনিক কম্পিউটার বা নিত্য দিনের প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি সবই প্রধানত সমন্বিত বর্তনী বা আই সি দ্বারা নির্মিত।

[সম্পাদনা করুন] মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স

মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স প্রকৌশল অত্যন্ত ক্ষুদ্র, মূলত আনুবীক্ষনীক স্তরে (Microscopic level), ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশের নকশা ও নির্মাণ নিয়ে কাজ করে। এসব ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ সমন্বিত বর্তনী তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হয় অথবা কখনো কখনো নিজেরাই ইলেকট্রনিক যন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সবচেয়ে প্রচলিত এবং পরিচিত মাইক্রো ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ হচ্ছে সেমিকন্ডাক্টর ট্রানজিস্টর। কিন্তু সকল প্রধান ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ যেমন রেজিস্টর, ক্যাপাসিটর, ইনডাক্টর ইত্যাদিকে আনুবীক্ষনিক স্তরে তৈরী করা যায়।

প্রায় সকল মাইক্রো ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ তৈরীর জন্য সিলিকনকে অন্য কোন রাসায়নিক পদার্থের সাথে আণবিক স্তরে নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে চাহিদামতো তড়িৎ চৌম্বকীয় বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করা হয়। এই কারণে মাইক্রো ইলেকট্রনিক্সের সাথে কোয়ান্টাম মেকানিক্স ও রসায়নবিদ্যার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

[সম্পাদনা করুন] সিগন্যাল প্রসেসিং

নাম শুনেই বোঝা যায় সিগন্যাল প্রসেসিং মূলত তড়িৎ সংকেত বা সিগন্যাল বিশ্লেষন এবং প্রভাবায়নের কাজ করে। সংকেত দুই ধরনের হতে পারে। প্রথমত এনালগ সংকেত, যেখানে সংকেত তথ্য অনুযায়ী ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়। দ্বিতীয়ত ডিজিটাল সংকেত, যেখানে সংকেত তথ্য অনুসারে বিচ্ছিন্ন কিছু মান অনুযায়ী দফায় দফায় পরিবর্তিত হয়। এনালগ সংকেতের ক্ষেত্রে অডিও সংকেত বিবর্ধন ও পরিশ্রুতকরন এবং টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে সংকেত মডুলেশন ও ডিমডুলেশন সিগন্যাল প্রসেসিং এর আওতায় পড়ে। অন্যদিকে ডিজিটাল সংকেতের ক্ষেত্রে ডিজিটালী স্যাম্পলড সংকেতের সংকোচন, ত্রুটি চিহ্নিতকরন ও ত্রুটি সংশোধন সিগন্যাল প্রসেসিং এর মধ্যে পড়তে পারে।

[সম্পাদনা করুন] বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা করুন] তথ্যসূত্র

  1. ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মধ্যে পার্থক্য কী?. FAQs - Studying Electrical Engineering. Retrieved on February 4, 2005.
  2. ""Ohm, Georg Simon", "Faraday, Michael" and "Maxwell, James Clerk"". এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা (১১). (১৯১১).
  3. ওয়েলকাম টু ECE!. Cornell University - School of Electrical and Computer Engineering. Retrieved on December 29, 2005.
  4. ইতিহাস. National Fire Protection Association. Retrieved on January 19, 2006. (১৯৯৬ সালে NFPA জার্নালে প্রকাশিত)
  5. লেল্যান্ড অ্যান্ডারসনের প্রবস্ধ, সান পাবলিশিং কোম্পানী, LC 92-60482, ISBN 0-9632652-0-2 (ed. ইন্টারনেটে সংক্ষিপ্তসার পাওয়া যায়।)
  6. অপেশাদার বেতারের ইতিহাস. What is Amateur Radio?. Retrieved on January 18, 2006.
  7. টেলিভিশনের ইতিহাস. Retrieved on January 18, 2006.
  8. আলবার্ট ডব্লিউ হল (১৮৮০-১৯৬৬). IEEE History Center. Retrieved on January 22, 2006.
  9. মাইক্রোওয়েভ কার আবিষ্কার?. Retrieved on January 22, 2006.
  10. রাডারের প্রাথমিক ইতিহাস. Peneley Radar Archives. Retrieved on January 22, 2006.
  11. দ্য যেডথ্রি. Retrieved on January 18, 2006.
  12. দ্য এনিয়াক মিউজিয়াম অনলাইন. Retrieved on January 18, 2006.
  13. ইলেক্ট্রনিক্স টাইমলাইন. Greatest Engineering Achievements of the Twentieth Century. Retrieved on January 18, 2006.
  14. কম্পিউটারের ইতিহাস (১৯৭১ - ১৯৭৫). Retrieved on January 18, 2006.
  15. MIT সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক সম্মান্নার প্রাকযোগ্যতা [1], UWA এর ষ্টাডি গাইড [2], কুইন্স এর পাঠ্যতালিকা[3] এবং আবের্ডীনের একক ছক[4]
  16. ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ এর ওয়েবসাইট
  17. কেন পেশাদারীত্বের সনদ প্রয়োজন. National Society of Professional Engineers. Retrieved on July 11, 2005.
  18. ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাক্ট. Quebec Statutes and Regulations (CanLII). Retrieved on July 24, 2005.
  19. কোডস অব এথিকস অ্যান্ড কন্ডাক্ট. Online Ethics Center. Retrieved on July 24, 2005.
  20. IEEE সর্ম্পকে. IEEE. Retrieved on July 11, 2005.
  21. IEE সর্ম্পকে. The IEE. Retrieved on July 11, 2005.
  22. জার্ণাল ও সাময়িকী. The IEE. Retrieved on July 11, 2005.
  23. তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশলীগণ, কম্পিউটার ব্যতীত. Occupational Outlook Handbook. Retrieved on July 16, 2005. (কপিরাইট সংক্রান্ত তথ্যের জন্য এখানে দেখুন)
  24. তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশলীগণ, কম্পিউটার ব্যতীত. Occupational Outlook Handbook. Retrieved on July 16, 2005.
  25. ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া বিস্ববিদ্যালয়ে ২০০৫ সালে Trevelyan, James এর What Do Engineers Really Do? শিরোনামের (স্লাইডসহ)সেমিনার