অ্যান্টিবায়োটিক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং: অ্যান্টিবায়োটিকের আবিষ্কারক
বড় করুন
স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং: অ্যান্টিবায়োটিকের আবিষ্কারক

অ্যান্টিবায়োটিক(Antibiotics) কয়েকধরণের জৈব-রাসায়নিক ঔষধ যা অণুজীবদের (বিশেষ করে ব্যাক্টেরিয়া) নাশ করে বা বৃদ্ধিরোধ করে। সাধারানতঃ এক এক অ্যান্টিবায়োটিক এক এক ধরণের অণুজীব তৈরি করে ও অন্যান্য অণুজীবের বিরুদ্ধে কাজ করে। বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া(Bacteria) ও ছত্রাক(Fungi) অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে। "অ্যান্টিবায়োটিক" সাধারণভাবে ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাবহার হয়, ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে না। তবে অ্যান্টিবায়োটিক হল আরও বড় জীবাণু-নাশক শ্রেণীর সদস্য যার মধ্যে আছে নানা প্রকার অ্যান্টি-ভাইরাল (ভাইরাস-নাশক), অ্যান্টি-ফাঙ্গাল (ছত্রাক-নাশক) ইত্যাদি। প্রাকৃতিতেও বহু জীবাণু-নাশক আছে যাদের অনেককেই এখনও ঔষধ হিসাবে পরিক্ষা করে দেখা হয়নি, যেমন ব্যাক্টেরিওসিন (Bacteriocin)- ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা নিসৃত কাছাকাছি ধরণের ব্যাক্টেরিয়া-ঘাতক প্রোটিন টক্সিন (বিষ)। সাধারণভাবে অ্যান্টিবায়োটিক শব্দটি ক্ষুদ্র জৈব-রাসায়নিক পদার্থ বোঝায়, বৃহত প্রোটিন নয় বা অজৈব-রাসায়নিক অণু নয়, (যেমন আর্সেনিক)


সূচিপত্র

[সম্পাদনা করুন] আবিষ্কারপূর্ব ইতিহাস

প্রাকৃতিক উপাদানের যে রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা আছে, তা আন্টিবায়োটিক আবিষ্কারের বহু পূর্বে মানুষের জানা ছিল। শতবর্ষ পূর্বে চীনে সয়াবিনের ছত্রাক(Mould) আক্রান্ত ছানা (Moldy Soybean Curd) বিভিন্ন ফোঁড়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হত। চীনারা পায়ের ক্ষত সারাবার জন্য ছত্রাক Mould আবৃত পাদুকা (স্যান্ডল) পরত। ১৮৮১ সালে ব্রিটিশ অণুজীব বিজ্ঞানী জন টিন্ডাল (John Tyndall) ছত্রাকের জীবাণু প্রতিরোধী ভূমিকা লক্ষ্য করেন। [১]

লুই পাস্তুর এবং জোবার্ট লক্ষ্য করেণ কিছু অণুজীবের উপস্থিতিতে প্রস্রাবে আন্থ্রাক্স ব্যাসিলি (Anthrax) জন্মাতে পারেনা। ১৯০১ সালে এমারিখ (Emmerich) এবং লও (Low) দেখেন যে আন্থ্রাক্স ব্যাসিলি ( Anthrax bacili) আক্রমন থেকে খরগোশকে বাঁচানো সম্ভব যদি সিউডোমোনাস এরুজিনোসা Pseudomonas aeruginosa নামক ব্যাক্টেরিয়ার তরল আবাদ (Liquid culture) খরগোশের দেহে প্রবেশ (Inject) করানো যায়। তাঁরা মনে করেণ ব্যাক্টেরিয়াটি কোনো উৎসেচক (enzyme)তৈরি করেছে যা জীবাণুর আক্রমন থেকে খরগোশকে রক্ষা করছে। তাঁরা এই পদার্থের নাম দেন পাইওসায়ানেজ (Pyocyanase)। ১৯২০ সালে গার্থা ও দাথ কিছু গবেষণা করেন এই জাতীয় জীবাণু নাশক তৈরি করতে। তাঁরা অ্যাকটিনোমাইসিটিস(Actinomycetes) দ্বারা প্রস্তুত একধরনের রাসায়নিক পদার্থ খুজে পান যার জীবাণুনাশী ক্ষমতা আছে। তাঁরা এর নাম দেন অ্যাকটিনোমাইসিন। কিন্তু কোনো রোগের প্রতিরোধে এই পদার্থ পরবর্তিতে ব্যবহৃত হয় নাই। এই জাতীয় আবিস্কারের পরও ১৯২৯ সালের আগে অ্যান্টিবায়োটিক এর যুগ শুরু হয় নাই। ১৯২৭ সালে আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (Alexander Fleming) প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক পেনিসিলিন আবিষ্কার করেন।[২]

[সম্পাদনা করুন] আবিষ্কার

Aspergillus একটি ছত্রাক বা মোল্ড
বড় করুন
Aspergillus একটি ছত্রাক বা মোল্ড

প্রথম আন্টিবায়োটিক ১৯২৭ লন্ডনের সেন্ট মেরি হাসপাতালে কর্মরত অণুজীব বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ফ্লেমিং আবিষ্কার করেণ। ফ্লেমিং তার এক পরীক্ষার (Experiment) সময় লক্ষ্য করেণ জমাট আবাদ মাধ্যমে (Solid culture medium) ছত্রাকের উপস্থিতিতে স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস Staphylococcus aureus নামক ব্যাক্টেরিয়া জন্মাতে পারেনা। আবাদ মাধ্যমে ছত্রাকের উপস্থিতি কাম্য ছিল না, আসলে পরীক্ষাকালীন কোনো অজানা ত্রুটির কারণে ছত্রাক আবাদ মাধ্যমে চলে এসে ছিল। ফ্লেমিং তখন ঐ ছত্রাকের প্রজাতি চিহ্নিত করতে ও তার জীবাণু নাশক বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা করতের আগ্রহী হন। ছত্রাকটি ছিল পেনিসিলিয়াম (এখন জানা গেছে পেনিসিলিয়াম ক্রাইসোজেনাম Penicillium chrysogenum প্রজাতির)। ফলে ফ্লেমিং পেনিসিলিয়াম দ্বারা নিসৃত ঐ পদার্থের নাম দেন পেনিসিলিন (Penicillin)। পেনিসিলিয়াম একা নয়, অন্য আর এক প্রকার ছত্রাক প্রজাতি যেমন অ্যাস্পারজিলাস-ও (Aspergillus) পেনিসিলিন তৈরি করতে পারে।[৩]

[সম্পাদনা করুন] ব্যবহারিক প্রয়োগ

১৯৪১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি প্রথম পেনিসিলিন মানুষের দেহে প্রয়োগ হয়। অক্সফোর্ডের একজন পুলিশ কর্মকর্তা Staplylococcus দ্বারা আক্রান্ত ছিলেন। পেনিসিলিনের প্রয়োগে তার অবস্থার নাটকীয় উন্নতি ঘটে। কিন্তু পাঁচ দিন পর পেনিসিলিয়ামের সরবরাহ শেষ হয়ে গেলে তিনি আবার আক্রান্ত হয়ে পড়েন, এবং মারা যান। [৪]

১৯৪০-৪১ সালের দিকে বৃটেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে পেনিসিলিনের গবেষনার জন্য অর্থ বরাদ্দ কমে যায়। কিন্তু ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার আমেরিকান বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ফলশ্রুতিতে, রকফেলার ফাউন্ডেশন (Rockefeller Foundation)ব্রিটিশ বিজ্ঞানী হ্যারল্ড ডাব্লিউ ফ্লোরে (Harold W. Florey) ও এন.জি. হিটলিকে (N. G. Heatly) আমেরিকায় আমন্ত্রান জানান। ২ জুলাই ১৯৪১ সালে তারা আমেরিকায় পৌছেন এবং বিশ্ববিখ্যাত ছত্রাকবিদ চার্লস থম (Charles Thom) ও আমেরিকার কৃষি বিভাগের (U.S. Department of Agriculture) সাথে আলোচনা করেন। খুব দ্রুতই আমেরিকার কৃষি বিভাগের উত্তর অঞ্চলের গবেষণাগারে তাদের কাজ শুরু হয়। গবেষনাগারটি ছিল ইলিনয়ের (Illiniois) পিওরিয়াতে (Peoria)। ফ্লেমিং যে ছত্রাক পেয়েছিলেন তা ২একক/মিলিলিটার(unit/mililiter) পেনিসিলিন তৈরি করত, কিন্তু কয়েকমাসে আমেরিকাতে বিজ্ঞানীরা প্রায় ৯০০ একক/মিলিলিটার (unit/mililiter)পেনিসিলিন প্রস্তুত করতে সক্ষম হন। বর্তমানে প্রায় ৫০,০০০ একক/মিলিলিটার পেনিসিলিন প্রস্তুত করা সম্ভব হয়েছে। এই সময় অন্যান্য অনেক আন্টিবায়োটিক আবিস্কার হয়। [৫] রেনে ডিউবস (Rene Dubos) গ্রামিসিডিন (Gramicidin) ও টাইরসিডিন(Tyrocidine) আবিস্কার করেন যা গ্রাম পজিটিভ ব্যাক্টেরিয়ার (Gram Positive Bacteria) উপর কাজ করে। বর্তমানেও অনেক আন্টিবায়োটিক আবিস্কার হচ্ছে। এর মধ্যে শুধু ক্লোরামফেনিকলের (Chloramphenicol)

ক্লোরামফেনিকল
বড় করুন
ক্লোরামফেনিকল

রাসায়নিক সংশ্লেষন সম্ভব হয়েছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্র বাহিনীর সৈন্যদের ক্ষত সারাতে প্রথম পেনিসিলিনের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়। ব্রিটেন, আমেরিকার বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, ফ্লেমিং এর সেই ভুলের কারণে পাওয়া ছাতা এক "যাদু ঔষধ" তৈরে করতে থাকে যা অসংখ্য জীবন বাঁচায়। ১৯৪৫ সালে ফ্লেমিং, আর্নেস্ট চেইন, ও ফ্লোরে চিকিৎসাবিজ্ঞানে তাদের অবদানের জন্য নোবেল পুরস্কার (Nobel Prize) লাভ করেন।[৬]

[সম্পাদনা করুন] অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যপদ্ধতি

বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক অণুজীবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাবে কাজ করে। তার মধ্যে প্রধান প্রধান উপায় গুলো হলঃ

  • ব্যাক্টেরিয়ার কোষপ্রাচীরের (Cell Wall) পেপটিডোগ্লাইক্যান (Peptidoglycan)সংশ্লেষণ বন্ধ করে দেয়: বিটা-ল্যাক্টাম (beta-lactam)অ্যান্টিবায়োটিক (যেমনঃ পেনিসিলিন) কোষ প্রাচীরের পেপটিডোগ্লাইকেন সংশ্লেষন বন্ধ করে দেয়। [৭]দৃঢ়ঃ পেপটিডোগ্লাইকেন স্তরের অভাবে কোষ সাধারণত পানি শোষনের মাধ্যমে মরে যায়। তাছাড়া ব্যাক্টেরিয়ার কোষ প্রাচীর কিছু উৎসেচক (enzyme) ধারণ করে যারা পেপটিডোগ্লাইকেন স্তরকে ভাঙে, যার ফলে নতুন পেপটিডোগ্লাইকেন স্তরেরে সৃষ্টি হতে পারে। কোষের নিজের এমন কিছু পদার্থ আছে যারা এই প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রনে রাখে, যেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত এবং সবসময় পেপটিডোগ্লাইকেন স্তর ক্ষয় হতে না পারে। পেনিসিলিনের জন্য অনেক ক্ষেত্রে এই সব নিয়ন্ত্রক পদার্থ কোষ থেকে হারিয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে, কোষস্থ উৎসেচক পেপটিডোগ্লাইকেন স্তর ভাঙতে থাকে। যে সকল ব্যাক্টেরিয়ার কোষ প্রাচীর নেই, তাদের উপর এই জাতীয় আন্টিবায়োটিক কাজ করতে পারে না। মাইকোপ্লাজমা (Mycoplasma নামক ব্যাক্টেরিয়ার কোষ প্রাচীর পেপটিডোগ্লাইক্যান স্তর নেই, ফলে তা পেনিসিলিন রোধী (Penicillin resistant)।
  • কোষপর্দায় (Cell Membrane) ছিদ্র করে: বিভিন্ন পলিপেপটাইড আন্টিবায়োটিক (যেমন: পলিমিক্সিন (Polymyxin)) ব্যাক্টেরিয়ার কোষঝিল্লি ধবংস কররার ক্ষমতা আছে। এরা কোষঝিল্লির মুখ্য উপাদান ফসফোলিপিড(Phospholipid) নষ্ট করে দেয়। এর ফলে কোষঝিল্লির সাধারণ ভেদ্যতা নষ্ট হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদার্থ কোষ থেকে বের হয়ে যায় এবং অবশেষে কোষটি মারা যায়।
অনেকগুলি করে রাইবোজোম রেলগাড়ীর বগির মত একই mRNAর রেললাইনের উপর পেছন পেছন চলতে থাকে।এদের মধ্যে যেকোন একটি অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যের ফলে অবরুদ্ধ হলে তার পিছনের সব কটিও লাইন দিয়ে আটকে যাবে।
বড় করুন
অনেকগুলি করে রাইবোজোম রেলগাড়ীর বগির মত একই mRNAর রেললাইনের উপর পেছন পেছন চলতে থাকে।এদের মধ্যে যেকোন একটি অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যের ফলে অবরুদ্ধ হলে তার পিছনের সব কটিও লাইন দিয়ে আটকে যাবে।
  • রাইবোজোমে প্রোটিন সংশ্লেষণে বাধা সৃষ্টি করে: উদাহরন স্বরুপ, অ্যামাইনোগ্লাইকোসাইড, ম্যাক্রোলাইড, ক্লোরাম্ফেনিকল ও টেট্রাসাইক্লিন জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক। রাইবোজোমে ক্রিয়াকারী অ্যান্টিবায়োটিকের সুবিধা হল এদের বিরুদ্ধে রেজিস্টেন্স হওয়ার প্রবণতা অপেক্ষাকৃত কম, কারণঃ
    • রাইবোজোমীয় আরএনএ জিনগুলির অনেকগুলি করে অনুলিপি (copy) থাকে, তাই একটি রেজিস্টান্ট হয়ে গেলেও যতক্ষণ না অধিকাংশ অনুলিপি রেজিস্টান্ট না হচ্ছে ততক্ষণ অ্যান্টিবায়োটিকের ক্রিয়া বজায় থাকে।
    • অনেকগুলি করে রাইবোজোম রেলগাড়ীর বগির মত একই mRNAর রেললাইনের উপর পেছন পেছন চলতে থাকে। এদের মধ্যে যেকোন একটি অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যের ফলে অবরুদ্ধ হলে তার পিছনের সব কটিও লাইন দিয়ে আটকে যাবে।
  • নিউক্লিক এসিড (Nucleic Acid) সংশ্লেষণে বাধা দেয়:বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক কোষের ডিএনএ, আরএনএ সংশ্লেষণে বাধা দেয়। যেমন ক্যুইনোলোন জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক ডিএনএ জাইরেজকে স্তব্ধ করে ডিএনএ সংশ্লেষণে বাধা দেয়। আসলে জাইরেজ একধরনের টোপোয়াইসোমারেজ-II উৎসেচক যা সাময়িক সুনিয়ন্ত্রিত দ্বিতন্ত্রীভঙ্গ দ্বারা (double strand breaks) ডিএনএর প্যাঁচ কম বা বেশি করে আবার জুড়ে দিতে পারে। জাইরেজের ক্রিয়ার যে দশায় ডিএনএর দ্বিতন্ত্রী অণুর দুটি তন্ত্রীতে ভঙ্গের সুচনা হয় সেই দশাতেই ক্যুইনোলোন অ্যান্টিবায়োটিক উৎসেচকটিকে আটকে দেয়, ফলে ডিএনএ অণুর মধ্যে অনেক দ্বিতন্ত্রীভঙ্গ (double strand breaks) জড়ো হয়, যা মেরামত না হলে মৃত্যু বা মারাত্মক মিউটেসন ঘটাতে পারে।

[সম্পাদনা করুন] অ্যান্টিবায়োটিকের ধরণ

রাসায়নিক গঠনের উপর ভিত্তি করে আন্টিবায়োটিককে নানা ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভাগ গুলো হল [৮],

  1. বিটা-ল্যাক্টাম জাতীয় (beta-lactum)
    1. পেনিসিলিন জাতীয়
    2. সেফালোস্পোরিন জাতীয়
      1. প্রথম শ্রেণীর সেফালোস্পোরিন
      2. দ্বিতীয় শ্রেণীর সেফালোস্পোরিন
      3. তৃতীয় শ্রেণীর সেফালোস্পোরিন
    3. কার্বাপেনেম জাতীয়
      1. ইমিপেনেম
      2. মেরোপেনেম, ইত্যাদি
    4. মোনোব্যাক্টাম জাতীয়
      1. অ্যাজট্রিওনাম
  2. সালফোনামইড জাতীয়
  3. ক্লোরাম্ফেনিকল জাতীয়
    1. ক্লোরাম্ফেনিকল,
    2. থিয়াম্ফেনিকল,
    3. আজিডাম্ফেনিকল, ইত্যাদি
  4. কুইনোলোন জাতীয়
    1. ন্যালিডিক্সিক অ্যাসিড
    2. ফ্লুরোকুইনোলোন জাতীয়
      1. নরফ্লক্সাসিন
      2. সিপ্রোফ্লক্সাসিন ইত্যাদি
  5. ম্যাক্রোলাইড জাতীয় (Macrolides),
    1. এরিথ্রোমাইসিন,
    2. অ্যাজিথ্রোমাইসিন,
    3. স্পাইরামাইসিন
    4. ক্লারিথ্রোমাইসিন, ইত্যাদি
  6. অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড জাতীয় (Aminoglycosides),
    1. স্ট্রেপ্টোমাইসিন,
    2. জেন্টামাইসিন,
    3. সিসোমাইসিন,
    4. টোব্রামাইসিন, ইত্যাদি
  7. টেট্রাসাইক্লিন জাতীয় (Tetracyclin)
    1. টেট্রাসাইক্লিন,
    2. ডক্সিসাইক্লিন,
    3. মিনোসাইক্লিন, ইত্যাদি
  8. পলিপেপটাইড জাতীয়(Polypeptide)
    1. পলিমিক্সিন বি, পলিমিক্সিন ই,
    2. ব্যাসিট্রাসিন,
    3. ক্যাপ্রিয়োমাইসিন,
    4. ভ্যাঙ্কোমাইসিন, ইত্যাদি
  9. পলিয়িন জাতীয়
    1. অ্যাম্ফোটেরিসিন বি,
    2. নাইস্টাটিন ইত্যাদি
  10. ইমাইডাজোল
    1. ফ্লুকোনাজোল,
    2. ইট্রাকোনাজোল, ইত্যাদি
  11. বেঞ্জোফুরান জাতীয়
    1. গ্রিসোফুল্ভিন ইত্যাদি
  12. আন্সামাইসিন জাতীয়
    1. রিফামাইসিন ইত্যাদি
  13. লিনোসামাইড জাতীয়
    1. ক্লিন্ডামাইসিন,
    2. লিঙ্কোমাইসিন, ইত্যাদি


অ্যান্টিবায়োটিক[৯]
শ্রেণী ঔষধ  নাম ব্র্যান্ড নাম সাধারণ ব্যাবহার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
বিটা-ল্যাক্টাম জাতীয়:
পেনিসিলিন শ্রেণী (Penicillins)
অ্যামক্সিসিলিন Amoxicillin Novamox™ (Cipla) Wide range of infections; penicillin used for streptococcal infections, syphilis, and Lyme disease Gastrointestinal upset and diarrhea
Allergy with serious anaphylactic reactions
Brain and kidney damage (rare)
অ্যাম্পিসিলিন (Ampicillin)
অ্যাজলোসিলিন (Azlocillin)
কার্বেনিসিলিন (Carbenicillin)
ক্লক্সাসিলিন (Cloxacillin)
ডাইক্লক্সাসিলিন (Dicloxacillin)
ফ্লুক্লক্সাসিলিন (Flucloxacillin)
মেজলোসিলিন (Mezlocillin)
ন্যাফসিলিন (Nafcillin)
পেনিসিলিন (Penicillin)
পিপেরাসিলিন (Piperacillin)
টিকারসিলিন (Ticarcillin)
বিটা-ল্যাক্টাম জাতীয়:
সেফালোস্পোরিন শ্রেণী
প্রথম প্রজন্ম (First generation Cephalosporins)
সেফাড্রক্সিল(en:Cefadroxil) Gastrointestinal upset and diarrhea
Nausea (if alcohol taken concurrently)
Allergic reactions
সেফাজোলিন (en:Cefazolin)
সেফালেক্সিন (en:Cephalexin) Keflex
বিটা-ল্যাক্টাম জাতীয়:
সেফালোস্পোরিন শ্রেণী
দ্বিতীয় প্রজন্ম (Second generation Cephalosporins)
সেফাক্লোর (Cefaclor) Gastrointestinal upset and diarrhea
Nausea (if alcohol taken concurrently)
Allergic reactions
সেফাম্যান্ডোল (en:Cefamandole) Mandole
সেফক্সিটিন (en:Cefoxitin)
সেফপ্রজিল (en:Cefprozil) Cefzil
সেফুরক্সাইম (en:Cefuroxime) Ceftin
বিটা-ল্যাক্টাম জাতীয়:
সেফালোস্পোরিন শ্রেণী
তৃতীয় প্রজন্ম (Third generation Cephalosporins)
সেফিক্সিম (en:Cefixime) Gastrointestinal upset and diarrhea
Nausea (if alcohol taken concurrently)
Allergic reactions
সেফডিনির (en:Cefdinir) Omnicef
সেফডিটোরেন(en:Cefditoren)
সেফপেরাজোন (en:Cefoperazone) Cefobid
সেফোট্যাক্সিম (en:Cefotaxime) Claforan
সেফপোডোক্সাইম (en:Cefpodoxime)
সেফটাজিডিম (en:Ceftazidime) Fortum
সেফটিবিউটেন (en:Ceftibuten)
সেফটিজক্সাইম (en:Ceftizoxime)
সেফট্রায়াক্সোন (en:Ceftriaxone) Rocephin
বিটা-ল্যাক্টাম জাতীয়:
সেফালোস্পোরিন শ্রেণী
চতুর্থ প্রজন্ম (Fourth generation Cephalosporins)
Cefepime Maxipime Gastrointestinal upset and diarrhea
Nausea (if alcohol taken concurrently)
Allergic reactions
বিটা-ল্যাক্টাম জাতীয়:
কার্বাসেফেম (Carbacephem
Loracarbef Lorabid
বিটা-ল্যাক্টাম জাতীয়:
কার্বাপেনেম শ্রেণী (Carbapenems
এর্টাপেনেম (en:Ertapenem)
ইমিপেনেম (en:Imipenem)/Cilastatin
মেরোপেনেম (en:Meropenem)
বিটা-ল্যাক্টাম জাতীয়:
মোনোব্যাক্টাম শ্রেণী (Monobactam
অ্যাজট্রিওনাম (en:Aztreonam)
অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড শ্রেণী (en:Aminoglycosides)
অ্যামিকাসিন (en:Amikacin) Infections caused by Gram-negative bacteria, such as Escherichia coli and Klebsiella Hearing loss
Vertigo
Kidney damage
জেন্টামাইসিন (en:Gentamicin) Garamycin
কানামাইসিন (en:Kanamycin)
নিয়োমাইসিন (en:Neomycin)
নেটিল্মাইসিন (en:Netilmicin)
স্ট্রেপ্টোমাইসিন
টোব্রামাইসিন (en:Tobramycin) Nebcin
[[গ্লাইকোপেপ্টাইড শ্রেণী (Glycopeptides)
টাইকোপ্লানিন Teicoplanin
ভাঙ্কোমাইসিনVancomycin
ম্যাক্রোলাইড (en:Macrolides)
অ্যাজিথ্রোমাইসিন (en:Azithromycin) Zithromax® (Pfizer)
Sumamed® (Pliva)
Streptococcal infections, syphilis, respiratory infections, mycoplasmal infections, Lyme disease Nausea, vomiting, and diarrhea (especially at higher doses)
Jaundice
ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন (en:Clarithromycin) Biaxin
ডিরিথ্রোমাইসিন (en:Dirithromycin)
এরিথ্রোমাইসিন (en:Erythromycin)
ট্রোলিয়ান্ডোমাইসিন (en:Troleandomycin)
পলিপেপ্টাইড শ্রেণী (Polypeptides)
ব্যাসিট্রাসিন (en:Bacitracin) Eye, ear or bladder infections; usually applied directly to the eye or inhaled into the lungs; rarely given by injection Kidney and nerve damage (when given by injection)
কোলিস্টিন (en:Colistin)
পলিমিক্সিন বি (en:Polymyxin B)
ক্যুইনলোন শ্রেণী (Quinolones)
সিপ্রোফ্লক্সাসিন (en:Ciprofloxacin) Ciplox™ (Cipla) Urinary tract infections, bacterial prostatitis, bacterial diarrhea, gonorrhea Nausea (rare)
এনক্সাসিন (en:Enoxacin)
গ্যাটিফ্লক্সাসিন (en:Gatifloxacin)
লিভোফ্লক্সাসিন (en:Levofloxacin) Levaquin
লোমিফ্লক্সাসিন (en:Lomefloxacin)
মক্সিফ্লক্সাসিন (en:Moxifloxacin)
নরফ্লক্সাসিন (en:Norfloxacin)
ওফ্লক্সাসিন (en:Ofloxacin)
ট্রোভাফ্লক্সাসিন (en:Trovafloxacin)
সালফনামাইড শ্রেণী Sulfonamides
মাফেনাইড (en:Mafenide) Urinary tract infections (except sulfacetamide and mafenide); mafenide is used topically for burns Nausea, vomiting, and diarrhea
Allergy (including skin rashes)
Crystals in urine
Kidney failure
Decrease in white blood cell count
Sensitivity to sunlight
প্রন্টোসিল (en:Prontosil) (খুব পুরনো, এখন অপ্রচলিত)
সালফাসিটামাইড (en:Sulfacetamide)
সালফামিথাজোল (en:Sulfamethizole)
সালফানিলামাইড (en:Sulfanilimide (খুব পুরনো, এখন অপ্রচলিত)
সালফাস্যালাজিন (en:Sulfasalazine)
সালফিসক্সাজোন (en:Sulfisoxazole)
টাইমিথোপ্রিম (en:Trimethoprim)
ট্রাইমিথোপ্রিম-সালফোমিথোক্সাজোল (en:Co-trimoxazole) (TMP-SMX)
টেট্রাসাইক্লিন শ্রেণী (Tetracyclines)
ডিমিক্লোসাইক্লিন (en:Demeclocycline) Syphilis, chlamydial infections, Lyme disease, mycoplasmal infections, acne rickettsial infections Gastroitestinal upset
Sensitivity to sunlight
Staining of teeth
Potential toxicity to mother and fetus during pregnancy
ডক্সিসাইক্লিন (en:Doxycycline) Vibramycin
মিনোসাইক্লিন en:Minocycline
অক্সিটেট্রাসাইক্লিন en:Oxytetracycline
টেট্রাসাইক্লিন (en:Tetracycline
অন্যান্য
ক্লোরাম্ফেনিকোল (en:Chloramphenicol)
ক্লিন্ডামাইসিন (en:Clindamycin)
ইথাম্বিউটল (en:Ethambutol)
ফস্ফোমাইসিন (en:Fosfomycin)
ফুরাজোলিডোন (en:Furazolidone)
আইসোনিয়াজিড (en:Isoniazid)
লিনেজোলিড (en:Linezolid)
মেট্রোনিডাজোল (en:Metronidazole) Flagyl
নাইট্রোফুরান্টোইন (en:Nitrofurantoin)
পাইরাজিনামাইড (en:Pyrazinamide)
কুইনুপ্রিস্টিন/ডালফোপ্রিস্টিন (en:Quinupristin/Dalfopristin)
রিফাম্পিন (en:Rifampin)
স্পেক্টিনোমাইসিন (en:Spectinomycin)
Class Generic Name Brand Names Common Uses Side Effects


[সম্পাদনা করুন] অণুজীবের অ্যান্টিবায়োটিক তৈরীর কারণ

সাধারণতঃ অণুজীবরা অন্য অণুজীবদের সঙ্গে প্রতিযোগীতায় জয়লাভের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক তৈরী করে থাকে।

[সম্পাদনা করুন] রোগ প্রতিরোধে অ্যান্টিবায়োটিক

বিভিন্ন সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে আন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে কিছু উদাহরণ দেওয়া হল:

  • মূত্রনালির সংক্রমন(Urinary Tract Infection): গ্রাম নেগেটিভ ব্যাক্টেরিয়া প্রধানত দায়ী, এর প্রতিরোধে বিটা-ল্যাক্টাম জাতীয় আন্টিবায়োটিক যেমন, পেনিসিলিন, সেফালোস্পোরিন, কার্বাপেনেম ব্যবহার করা হয়।
  • যক্ষা(Tuberculosis): অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড জাতীয় আন্টিবায়োটিক যেমন স্ট্রেপটোমাইসিন ব্যবহার করা হয়।
  • ছত্রাকের সংক্রমন (Fungal Infection): নিস্টাটিন, অ্যাম্ফোটেরিসিন, গ্রাইসিওফালভিন ব্যবহার করা যায়।

[সম্পাদনা করুন] আন্টিবায়োটিক-রোধী (Antibiotic-resistant) ব্যাক্টেরিয়া

[সম্পাদনা করুন] অ্যান্টিবায়োটিক-রোধী বৈশিষ্ট্যের উদ্ভব

অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারীতা মাপা হচ্ছেঃ * কাগজের চাকতিতে বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক মাখিয়ে আবাদ মাধ্যমে রাখলে তাদের চারদিকে ব্যাক্টেরিয়ার মৃত্যু ঘটে।*বড় ব্যাক্টেরিয়ামুক্ত বলয় মানে অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকরী। * বলয়হীন চাকতি মানে ব্যাক্টেরিয়া আন্টিবায়োটিক-রোধী।
বড় করুন
অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারীতা মাপা হচ্ছেঃ
* কাগজের চাকতিতে বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক মাখিয়ে আবাদ মাধ্যমে রাখলে তাদের চারদিকে ব্যাক্টেরিয়ার মৃত্যু ঘটে।
*বড় ব্যাক্টেরিয়ামুক্ত বলয় মানে অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকরী।
* বলয়হীন চাকতি মানে ব্যাক্টেরিয়া আন্টিবায়োটিক-রোধী।

কিছু ব্যাক্টেরিয়া কিছু আন্টিবায়োটিকের আক্রমন প্রতিরোধ করতে পারে(Antibiotic resistant), অন্য দিকে অন্য কিছু ব্যাক্টেরিয়া ঐ একই আন্টিবায়োটিক দ্বারা আক্রান্ত (Antiobiotic sensitive)হয়। এমনকি কিছু ব্যাক্টেরিয়া যে কিনা একটিআন্টিবায়োটিকের আক্রমন থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে না, সেও পরিব্যাক্তি বা মিউটেশনের (Mutation) মাধ্যমে এমন সব বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে পারে যার ফলে ব্যাক্টেরিয়াটি ঐ আন্টিবায়োটিক রোধী হয়ে পরতে পারে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ব্যাক্টেরিয়া আন্টিবায়োটিক রোধী হয়ে উঠতে পারে; যেমনঃ

  1. ব্যাক্টেরিয়া পর্যাপ্ত পরিমানে এমন উৎসেচক তৈরি করতে পারে যা ঐ আন্টিবায়োটিকটি বিনষ্ট বা পরিবর্তন করে অকেজো করে দেয়। (যেমন ক্লোরাম্ফেনিকল অ্যাসিটাইল ট্রান্সফারেজ)।
  2. আন্টিবায়োটিক কোষে প্রবেশ করতে অক্ষম হয় (যেমন একক ব্যাক্টেরিয়ার ক্ষেত্রে ক্যাপস্যুল ও দলবদ্ধ ব্যাক্টেরিয়ার ক্ষেত্রে বায়োফিল্ম)[১০]
  3. আন্টিবায়োটিক কোষঝিল্লির বাইরে পাম্প দ্বারা বহিষ্কৃত হয় (যেমন পি গ্লাইকোপ্রোটিন বা এমডিআর পাম্প।
  4. আন্টিবায়োটিকের লক্ষ্যবস্তুর গঠন পরিবর্তিত হওয়াঃ
    1. লক্ষ্যবস্তুর জিনগত মিউটেসন দ্বারা অনাক্রম্যতা
    2. অন্য উৎসেচক ইত্যাদি দ্বারা লক্ষ্যবস্তুর রাসায়নিক পরিবর্তন জনিত অনাক্রম্যতা
  5. আন্টিবায়োটিকটি যেই পদার্থের সংশ্লেষণের বা বিয়োজনের জৈবরাসায়নিক গতিপথে (Biochemical Pathway) বাধা দেয়, কোষ ঠিক একই কাজের জন্য অন্য জৈব-রাসায়নিক গতিপথ ব্যবহার করতে পারে।

[সম্পাদনা করুন] আন্টিবায়োটিক-রোধী বৈশিষ্ট্যের বিস্তার

যে কোনো ব্যাক্টেরিয়ার পপুলেশনে একটি মাত্র ব্যাক্টেরিয়ার পরিব্যাক্তির বা মিউটেশনের ফলে ঐ ব্যাক্টেরিয়ার আন্টিবায়োটিক-রোধী বৈশিষ্ট্যের আবির্ভাব হতে পারে। এই মিউটেশনের প্রাথমিক হার খুব কম; প্রায় একটি মিউটেশন ঘটে প্রতি কয়েক লক্ষ কোষে। তবে একটি ব্যাক্টেরিয়ার আন্টিবায়োটিক-রোধী হবার সম্ভাব্যতা অনেক অংশে বেড়ে যায় যখন কোনো আন্টিবায়োটিক-রোধী ব্যাক্টেরিয়া থেকে জিন (Gene) গ্রহণ করে। কিছু কিছু ব্যাক্টেরিয়াতে তার নিজ ক্রোমসোমস্থ ডিএন এর বাইরে আরও কিছু, বংশগতির উপাদান(Genetic Material); এদের কে বলা হয় প্লাজমিড (Plasmid)। সাধারণত, আন্টিবায়োটিক-রোধী জিন গুলো এই সব প্লাজমিড বহন করে। একটি ব্যাক্টেরিয়া এই প্লাজমিড বা প্লাজমিড এর প্রতিলিপি অন্য ব্যাক্টেরিয়ায় স্থানান্তর করতে পারে। যে পদ্ধতিতে ব্যাক্টেরিয়া এই কাজটি করে তাকে বলা হয় কনজুগেশন (Conjugation)। তাছাড়া প্রায়ই ব্যাক্টেরিয়ার ক্রোমোসোমে বা প্লাজমিডে ট্রান্সপোসন (Transposon) নামে এক বিশেষ অংশ থাকে, যা কিনা আন্টিবায়টিক-রোধী জিন (Gene) বহন করে। ট্রান্সপোসন এক ক্রোমোসোম থেকে অন্য ক্রোমোসোমে, ক্রোমোসোম থেকে প্লাজমিডে যেতে পারে। যার ফলে আন্টিবায়োটিক-রোধী জিনের বা তার প্রতিলিপির স্থানান্তর ঘটে।

[সম্পাদনা করুন] প্রতিকার

  • আন্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রনে রাখা, অন্তত যে সব ক্ষেত্রে খুব কম আন্টিবায়োটিক দরকার বা একেবারেই দরকার নাই। মনে রাখতে হবে যে কোনো আন্টিবায়োটিক শুধু মাত্র অণুজীবের বিরুদ্ধে কাজ করে; অর্থাৎ যে সকল রোগ অণুজীবের সংক্রমনের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়, সেই সব রোগ নিরাময়ে আন্টিবায়োটিক ব্যবহার করে কোনো লাভ হবে না। বরং, দেহে ঐ বিশেষ আন্টিবায়োটিক-রোধী ব্যাক্টেরিয়ার বিস্তার ঘটবে এবং পরবর্তিতে কোনো রোগ ঐ ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা ঘটে থাকলে তখন রোগ নিরাময়ে ঐ আন্টিবায়োটিক কোনো কাজে আসবে না।
  • ভাইরাসঘটিত রোগে আন্টিবায়োটিকের অপব্যাবহার বন্ধ করা। ভাইরাসের বিরুদ্ধে আন্টিবায়োটিক কোনো কাজে আসে না, কারণ আন্টিবায়োটিক শুধু মাত্র ব্যাক্টেরিয়াছত্রাকের বিরুদ্ধে কাজ করে। যেমন, আমাদের যে সাধারণ হাঁচি কাশি জাতীয় ঠান্ডা লাগা (Common Cold), সেটা মূলত ভাইরাস ঘটিত- করোনাভাইরাস (Coronavirus), রাইনোভাইরাস (Rhinoviurs) ইতাদি সাধারণতঃ এজন্য দায়ী; এদের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না।
  • ঠিক যেই আন্টিবায়োটিক দরকার সেই আন্টিবায়োটিকই প্রয়োজন মাফিক ব্যবহার করতে হবে।
  • ডাক্তার যখন আন্টিবায়োটিক গ্রহণ করতে পরামর্শ দেবে, তখন ডাক্তারের পরামর্শ মতো সঠিক সময়ের ব্যাবধানে সঠিক পরিমাণে এবং সঠিক সময় পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করতে হবে।
  • টিবি ইত্যাদি রোগের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় দুই বা ততোধিক আন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা প্রয়োজন, এতে আন্টিবায়োটিক-রোধী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাব্যতা অনেকাংশে কমে যায়।
  • যখনই কোনো কোনো ব্যক্তির দেহের ব্যাক্টেরিয়া একটি বিশেষ আন্টিবায়োটিক-রোধী হয়ে যায়, তখনই যত শীঘ্র সম্ভব অন্য আন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা উচিত।

[সম্পাদনা করুন] আন্টিবায়োটিক-রোধী ব্যাক্টেরিয়া ও বর্তমান পরিস্থিতি

বিশ্বের অনুন্নত অঞ্চলে আন্টিবায়োটিকের সবচেয়ে অপব্যবহার ঘটে। এই সব দেশে বিশেষভাবে গ্রামাঞ্চলে দক্ষ লোকের অভাবে আন্টিবায়োটিক প্রায় সর্বত্রই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করা হয়। এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে মাত্র ৮% আন্টিবায়োটিক ডাক্তারের উপদেশে বিক্রি করা হয়। পৃথিবীর অনেক অঞ্চলেই সাধারণ মাথা ব্যাথা, পেটের ব্যাথা, জ্বর ইত্যাদির জন্য আন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে ডাক্তাররা আন্টিবায়োটিক খেতে বলার সময়, ঐ আন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে রোগির শরীরের ব্যাক্টেরিয়া আগেই প্রতিরোধী হয়ে গেছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হয় না, আবার অনেক সময় রোগের শুরুতেই আন্টিবায়োটিক গ্রহণের উপদেশ দেওয়া হয়, কিন্তু হয়ত আন্টিবায়োটিক ছাড়া রোগ নিরাময় সম্ভব ছিল। এসব কারণই আন্টিবায়োটিক-রোধী ব্যাক্টেরিয়ার টিকে থাকার সম্ভবনা বাড়িয়ে দেয়। [১১]

উন্নত বিশ্বেও এই সমস্যা বিদ্যমান। আমেরিকার রোগ নিয়ন্ত্রন কেন্দ্র (Center For Diseases Control) সি.ডি.সির এক জরিপে দেখা গেছে, সেখানে ডাক্তাদের আন্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপসনের কানের সংক্রমনের জন্য ৩০%, সাধারাণ ঠান্ডার জন্য ১০০%, গলা ব্যাথার জন্য ৫০% প্রেসক্রিপসন অপ্রয়োজনীয়। তাছাড়া যারা হাসপাতালে কাজ করে তাদের মধ্যে সাধারণত আন্টিবায়োটিক-রোধী ব্যাক্টেরিয়া উপস্থিতি থাকে বেশি। [১২]

[সম্পাদনা করুন] তথ্যসূত্র

  1. মাইক্রোবায়োলজি: কনসেপ্টস এন্ড আপ্লিকেশন্স; মাইকেল জে পেলচজার, ই. সি. চান, নোয়েল আর. ক্রেগ
  2. মাইক্রোবায়োলজি: কনসেপ্টস এন্ড আপ্লিকেশন্স; মাইকেল জে পেলচজার, ই. সি. চান, নোয়েল আর. ক্রেগ
  3. মাইক্রোবায়োলজি: কনসেপ্টস এন্ড আপ্লিকেশন্স; মাইকেল জে পেলচজার, ই. সি. চান, নোয়েল আর. ক্রেগ
  4. মাইক্রোবায়োলজি: কনসেপ্টস এন্ড আপ্লিকেশন্স; মাইকেল জে পেলচজার, ই. সি. চান, নোয়েল আর. ক্রেগ
  5. মাইক্রোবায়োলজি: কনসেপ্টস এন্ড আপ্লিকেশন্স; মাইকেল জে পেলচজার, ই. সি. চান, নোয়েল আর. ক্রেগ
  6. মাইক্রোবায়োলজি: কনসেপ্টস এন্ড আপ্লিকেশন্স; মাইকেল জে পেলচজার, ই. সি. চান, নোয়েল আর. ক্রেগ
  7. মাইক্রোবায়োলজি: কনসেপ্টস এন্ড আপ্লিকেশন্স; মাইকেল জে পেলচজার, ই. সি. চান, নোয়েল আর. ক্রেগ
  8. স্টেডম্যান'স মেডিক্যাল ডিক্সনারি, সপ্তবিংশ সংস্করণ
  9. দি মার্ক ম্যানুয়াল অফ মেডিসিন -হোম এডিসন, রবার্ট বারকভ (সম্পা.), পকেট সংস্করণ (সেপ্টেম্বর, ১৯৯৯), ISBN 0-671-02727-1.
  10. [1]
  11. মাইক্রোবায়োলজি: কনসেপ্টস এন্ড আপ্লিকেশন্স; মাইকেল জে পেলচজার, ই. সি. চান, নোয়েল আর. ক্রেগ
  12. মাইক্রোবায়োলজি: কনসেপ্টস এন্ড আপ্লিকেশন্স; মাইকেল জে পেলচজার, ই. সি. চান, নোয়েল আর. ক্রেগ